Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বৃদ্ধকে প্রতারণা, গ্রেফতার দম্পতি

চন্দননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘প্রথম দিকে বৃদ্ধের জমানো টাকা বেশি সুদ-সহ ফেরত দিয়েছিল দেবরাজ। তার পরেই বেপাত্তা হয়ে যায়। আর কেউ প্রতারিত হয়েছেন কি না, দেখা হচ্ছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৬:২০
Share: Save:

ব্যাঙ্কের তুলনায় বেশি সুদ মিলবে, এই প্রলোভনে একটি ভুয়ো লগ্নি সংস্থায় ৯১ লক্ষ টাকা রেখেছিলেন এক বৃদ্ধ। সেই টাকা নিয়ে প্রতারণার অভিযোগে সংস্থার কর্ণধার ও তাঁর স্ত্রীকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করল শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম দেবরাজ দাশগুপ্ত এবং রেশমা চহ্বাণ ওরফে রিয়া দাশগুপ্ত। দেবরাজ ‘শিবম গ্রুপ অব ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংস্থা খুলেছিল। প্রতারিত বৃদ্ধ সঞ্জয় ভট্টাচার্য শ্রীরামপুর হাউসিং এস্টেটের বাসিন্দা।

চন্দননগর কমিশনারেটের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘প্রথম দিকে বৃদ্ধের জমানো টাকা বেশি সুদ-সহ ফেরত দিয়েছিল দেবরাজ। তার পরেই বেপাত্তা হয়ে যায়। আর কেউ প্রতারিত হয়েছেন কি না, দেখা হচ্ছে।’’

সারদা-কাণ্ড সামনে আসার পর থেকে বেশি সুদের লোভে কোনও ভুঁইফোঁড় সংস্থায় সাধারণ মানুষ যাতে টাকা না-রাখেন, সে ব্যাপারে সরকারি স্তরে নানা ভাবে প্রচার চলছেই। তা সত্ত্বেও কিছু ক্ষেত্রে যে ওই সব সংস্থায় টাকা রাখার প্রবণতা রোখা যায়নি, তা মানছেন পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা।

পুলিশ জানায়, দেবরাজ আদতে বাঁকুড়ার খাতরার বাসিন্দা। স্ত্রীকে নিয়ে তেঘরিয়ায় ভাড়া থাকত। স্ত্রী রেশমা সহযোগী হিসেবে দেবরাজের সংস্থায় কাজ করত। কয়েক বছর আগে তাদের সঙ্গে সঞ্জয়বাবুর যোগাযোগ হয়। ওই সংস্থায় কয়েক দফায় বৃদ্ধ প্রায় ৯১ লক্ষ টাকা জমা রাখেন। দেবরাজ তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দিলে তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারিত হয়েছেন। ২০১৬ সালের এপ্রিলে সঞ্জয়বাবু শ্রীরামপুর থানায় অভিযোগ করেন।

তদন্তকারীরা জানান, তেঘরিয়ায় গিয়ে দেখা যায়, ওই দম্পতি বেপাত্তা। ভাড়া নেওয়ার সময় বাড়িওয়ালার কাছে জমা রাখা প্যান কার্ডের সূত্রে দেবরাজের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বার করেও লাভ হয়নি। শেষে ফেসবুক থেকে তার মোবাইল নম্বরের সূত্রে তদন্তকারীরা দিল্লির যোগ পান। জামশেদপুরে দেবরাজদের অফিস রয়েছে। সেখান থেকে দেবরাজের আর একটি মোবাইল নম্বর মেলে। জানা যায়, সে আছে দিল্লির রোহিণীতে। এর পরেই শ্রীরামপুর থানার পুলিশের একটি দল রোহিণীতে হানা দেয়।

গত ১৭ জানুয়ারি ওই দম্পতিকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানকার আদালত থেকে ট্রানজিট রিমান্ডে শনিবার পুলিশ ধৃতদের নিয়ে শ্রীরামপুর পৌঁছয়। রবিবার শ্রীরামপুর আদালতের ভারপ্রাপ্ত এসিজেএম রোহিণী রাইয়ের এজলাসে দেবরাজের ১০ দিনের পুলিশি হেফাজত এবং রেশমার ১৪ দিন জেল-হাজত হয়।

যদিও অভিযোগ মানতে চাননি দেবরাজ। তার দাবি, ‘‘শেয়ার বাজারে টাকা খাটিয়েছিলাম। বৃদ্ধকে সব টাকা দিয়ে দিয়েছি। তার প্রমাণও রয়েছে আমার কাছে।’’

এখনও পর্যন্ত সঞ্জয়বাবুর টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। তারা জানিয়েছে, ধৃতের বাড়িতে টাকা মেলেনি। তবে উদ্ধারের চেষ্টা চলচে। বাংলার পাশাপাশি চোস্ত হিন্দি বলতে পারে দেবরাজ। দিল্লি, জামশেদপুরে তিনি বিমানে যাতায়াত করতেন। তাঁর এই চলন-বলনেই বোকা বনে যান বৃদ্ধ। এ নিয়ে সঞ্জয়বাবু বা তাঁর ছেলে কোনও কথা বলতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Fraud Case Arrested Investment
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE