প্রতীকী ছবি।
হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েট ভাড়া করা হয়েছিল চাকরির ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য। পাশাপাশি নজর কাড়ছিল ধোপদুরস্ত পোশাক পরা ইন্টারভিউ কর্তাদের আদবকায়দা আর কথাবার্তা। সব মিলিয়ে ইন্টারভিউ দিতে এসে এমন ঝাঁ চকচকে পরিবেশ দেখে তাই এতটুকু সন্দেহ হয়নি প্রার্থীদের। কিন্তু সব কিছুরই একটা শেষ রয়েছে। বুধবার ইন্টারভিউ নেওয়া সংস্থাটির তিন জন এক চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে কিছু টাকা নেয়, এর পরেই টনক নড়ে ওই প্রার্থীর। সন্দেহ হওয়ায় বিমানবন্দর এলাকার থানায় চলে যান অভিযোগ জানাতে। তদন্তে নেমে হদিস মেলে বড় প্রতারণা চক্রের। এক মহিলা-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
তদন্তে এনএসসিবিআই থানার পুলিশ জেনেছে, চাকরির সুলুক সন্ধান দেয় এমন বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে প্রার্থীদের বায়োডেটা নিয়ে প্রথমে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। পরে তাঁদের ইন্টারভিউ নেওয়ার জন্য কলকাতা বিমানবন্দরের কাছে একটি হোটেলের ব্যাঙ্কোয়েটে ডাকা হয়। প্রার্থীরা গিয়ে দেখেন, বিভিন্ন বেসরকারি উড়ান সংস্থার প্রতিনিধিরাও হাজির সেখানে। ইন্টারভিউ শেষে শুরু হয় প্রশিক্ষণের পালা। সে পর্বও মিটে গেল, অথচ মিলল না চাকরি। এ দিকে কয়েক লক্ষ টাকা খরচ হয়ে গেল চাকরিপ্রার্থীদের। পাশাপাশি উধাও অভিযুক্তেরা। এমন ভাবেই চলেছিল কিছু দিন।
বুধবার এক চাকরিপ্রার্থীকে বিমানবন্দরের বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানোর পরে প্রশাসনিক ভবনের কাছে একটি এটিএম কাউন্টারের সামনে দাঁড়াতে বলে অভিযুক্তেরা। সেখানে গিয়ে অভিযোগকারী চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে দেখা করে তিন অভিযুক্ত। তাদের টাকাও দেন বলে জানিয়েছেন ওই প্রার্থী। এর পরেই তাঁর সন্দেহ হয়। এনএসসিবিআই থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে এক মহিলা-সহ তিন জনকে ধরা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনায় আরও দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার এই প্রতারণা চক্রের খোঁজ পাওয়ার পরে এনএসসিবিআই থানার পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম অভিষেক রায়, মিতা কুণ্ডু, ধ্যানেশ চট্টোপাধ্যায়, সত্যালোক চট্টোপাধ্যায় এবং শেখ আবদুল রহমান। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন বেসরকারি উড়ান সংস্থায় চাকরি দেওয়ার নাম করে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা করেছে এই চক্রটি।
কিন্তু চাকরি না পেয়েও কেন এত দিন কোনও অভিযোগ হল না?
তদন্তকারীদের একাংশের মতে, পোশাক ও কথাবার্তায় অভিযুক্তদের ভুয়ো পরিচিতি আন্দাজ করা মুশকিল ছিল। তাই অনেকেই তাদের বিশ্বাস করেছিলেন। তদন্তকারীরা জানান, রাতে আরও ন’-দশ জন এমন প্রার্থীর খোঁজ মেলে, যাঁরা এই প্রতারণার শিকার হয়েছেন। পুলিশের অনুমান, এই কায়দায় কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়েছে চক্রটি। আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা অভিষেকই চক্রটির মাথা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy