Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

ধন্য খুদের সাহস, ইনাম দিল পুলিশ

গত সপ্তাহে দিনেদুপুরে বেলেঘাটায় আস্থাদের বাড়িতে চুরি হয়। ওই বালিকার হাত-মুখ বেঁধে চুরি করে পালায় এক দুষ্কৃতী। তখন ঘরে একাই ছিল আস্থা।

বাহবা: পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আস্থা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

বাহবা: পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে আস্থা। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০১:৫৯
Share: Save:

সাহস আর উপস্থিত বুদ্ধি।

এই দুইয়েই কলকাতা পুলিশের মন জয় করল ১০ বছরের আস্থা দাস। সম্প্রতি একটি চুরির কিনারার সাফল্যে সল্টলেকের হরিয়ানা বিদ্যামন্দিরের চতুর্থ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে সোমবার লালবাজারে নিজের ঘরে ডেকে পুরস্কৃত করলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার। আস্থার হাতে তুলে দিলেন কিরণ বেদির জীবনের উপর লেখা বই এবং এক প্যাকেট চকলেট। আস্থার সঙ্গে ছিলেন তার বাবা-মা মহেশ ও গুড়িয়া দাসও।

গত সপ্তাহে দিনেদুপুরে বেলেঘাটায় আস্থাদের বাড়িতে চুরি হয়। ওই বালিকার হাত-মুখ বেঁধে চুরি করে পালায় এক দুষ্কৃতী। তখন ঘরে একাই ছিল আস্থা। মা ছিলেন দোতলায় রান্নাঘরে। বাবা বাড়ির বাইরে। পুলিশকে দুষ্কৃতী সম্পর্কে নিখুঁত বর্ণনা দিয়েছিল মেয়েটি। লালবাজারের এক কর্তার কথায়, ‘‘আস্থার বর্ণনার সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ হবহু মিলে যাওয়ায় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই আমরা দুষ্কৃতীকে চিহ্নিত করতে পারি। ছোট্ট মেয়েটার সাহস ও উপস্থিত বুদ্ধি ভীষণ কাজে দিয়েছে।’’

এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ওই অবস্থায় ভয়ে চিৎকার করাই স্বাভাবিক। এ জন্য অতীতে অনেককে খুনও হতে হয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আস্থা অত্যন্ত সাহসের পরিচয় দিয়েছে।’’ তদন্তকারীদের আস্থা জানিয়েছিল, দুষ্কৃতীর পরনে ছিল কমলা টি-শার্ট, ফেডেড জিন্‌স, লাল জুতো, মাথায় সাদা-কালো রুমাল বাঁধা। তদন্তকারীরা জানান, সিসি ক্যামেরার ফুটেজ নিয়ে অপরাধীকে প্রাথমিক ভাবে শনাক্ত করা হয়। ফুটেজের সঙ্গে হুবহু মিলে যায় আস্থার বর্ণনা। দুইয়ে মিলে ১৬ নভেম্বর নুর ইসলাম শেখ ওরফে চাঁদকে গ্রেফতার করে বেলেঘাটা ও নারকেলডাঙা থানার যৌথ তদন্তকারী দল। জেরায় অপরাধ স্বীকার করেছে নুর।

এ দিন বিকেলে বেলেঘাটা থানার গাড়িতেই বাবা-মায়ের সঙ্গে লালবাজারের দিকে রওনা দেয় আস্থা। সাড়ে চারটে নাগাদ পৌঁছে পুলিশ কমিশনারের ঘরে ঢোকে সে। সিপি রাজীববাবু নিজে এগিয়ে এসে আস্থার সঙ্গে হ্যান্ডশেক করেন। তুলে দেন পুরস্কারের সামগ্রী।

পুরস্কার পাওয়ার পরে আস্থা বলে, ‘‘এক জন পুলিশ অফিসারের জীবনের উপর লেখা বই আমাকে দেওয়া হয়েছে। আমিও ভবিষ্যতে পুলিশ অফিসার হতে চাই।’’ এর পরে মেয়েকে নিয়ে বেলেঘাটা থানায় আসেন মহেশ ও গুড়িয়া। তাদের হাতে উদ্ধার হওয়া জিনিস তুলে দেয় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Police Commissioner reward student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE