Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

‘ত্রিনেত্র’ শুনেই চোখ কপালে

অভিযোগ নেওয়ার সময়ে নাম শুনেই চমকে উঠেছিলেন বৌবাজার থানার এক অফিসার। উল্টো দিকে বসা যুবক বলে চলেছেন, ‘‘স্যার, ত্রিনেত্র নামে সংস্থাকেই চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম।’

শিবাজী দে সরকার
শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:০৫
Share: Save:

অভিযোগ নেওয়ার সময়ে নাম শুনেই চমকে উঠেছিলেন বৌবাজার থানার এক অফিসার। উল্টো দিকে বসা যুবক বলে চলেছেন, ‘‘স্যার, ত্রিনেত্র নামে সংস্থাকেই চাকরির জন্য টাকা দিয়েছিলাম।’’ সারদা-কাণ্ডে ‘ত্রিনেত্র কনসালট্যান্ট’ নামে এক সংস্থার কথা উঠে এসেছিল। অভিযোগ, সেখান থেকে শাসক দলের তহবিলে কয়েক কোটি টাকা দান করা হয়েছিল। চাকরির প্রতারণাতেও সেই সংস্থার নাম শুনে প্রথমে হকচকিয়ে গিয়েছিলেন পুলিশ অফিসারটি। তবে এই ‘ত্রিনেত্র’ চিটফান্ড নয়, চাকরি দেওয়ার সংস্থা।

পাশ থেকে আর এক পুলিশ অফিসার ওই যুবককে জিজ্ঞাসা করে নিয়েছিলেন, ‘‘ত্রিনেত্রর অফিসটা কোথায়?’’ ‘গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউ’ শুনে একটু ধাতস্থ হন। কারণ সারদা-কাণ্ডে নাম জড়ানো ‘ত্রিনেত্র’-র অফিস ছিল ব্রিটিশ ইন্ডিয়া স্ট্রিটে। তদন্তকারীরা বলছেন, দুই সংস্থার নামে অনেকটা ফারাক রয়েছে। ব্রিটিশ ইন্ডিয়া স্ট্রিটের সংস্থার নাম ছিল ‘ত্রিনেত্র কনসালট্যান্ট প্রাইভেট লিমিটেড’। আর গণেশচন্দ্র অ্যাভিনিউয়ে ‘ত্রিনেত্র ম্যানেজমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড’ নামে সংস্থা ফেঁদেছিল ধৃতেরা। সারদা কেলেঙ্কারির ‘ত্রিনেত্র’-র কর্তাদের খোঁজ না মিললেও চাকরি প্রতারণায় অভিযুক্ত সংস্থাটির দুই মালিক গ্রেফতার হয়েছে।।

পুলিশ জানায়, ১২৫ জনের থেকে টাকা হাতিয়ে পালিয়েছিল মেহুল বিকারিয়া ও রাহুল শেলতে নামে ওই দু’জন। বৃহস্পতিবার গুজরাতের সুরেন্দ্রনগর থেকে ধরা পড়ে তারা। মেহুল জামনগর ও রাহুল আমদাবাদের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, কলকাতায় মেহুল শ্যামভাই সাওলিয়া নামে পরিচয় ভাঁড়াত। রাহুল নিজের পরিচয় দিত রকি নামে। বিজ্ঞাপনে অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, কানাডা, আমেরিকায় চাকরির টোপ দিয়ে বেকার যুবক-যুবতীদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিত। শর্ত ছিল প্রথম দফায় ৫০ হাজার ও চাকরি পেয়ে ৪ লক্ষ টাকা দিতে হবে। প্রথম দফার টাকা নিয়েই তারা পালায় বলে জানায় পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ২৯ ডিসেম্বর ব্যারাকপুরের বাসিন্দা এক যুবক প্রথম প্রতারণার অভিযোগ জানান। পরে আরও ১২৪ জনের খোঁজ মেলে। কিন্তু পুলিশ গিয়ে দেখে, অফিস বন্ধ। উধাও মালিকেরা। সংস্থার একটি ই-মেলের আইপি অ্যাড্রেস ঘেঁটে দেখা যায়, গুজরাতের একটি মোবাইল থেকে তা ব্যবহার হচ্ছে। গুজরাত পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সেখানে হানা দেয় বৌবাজার থানার একটি দল। পুলিশ জানায়, হায়দরাবাদ, দিল্লি, রায়পুরেও ধৃতেরা অফিস খুলেছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE