ক্লারা খোঙসিট
ক্লারা খোঙসিটের মৃত্যুর পরে পেরিয়ে গিয়েছে চার দিন। পর পর তিন দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন ফরেন্সিক ও অটোপসি বিশেষজ্ঞেরা। ঘটনাস্থলে পড়ে থাকা বিভিন্ন সামগ্রী এবং মৃতার
পোশাকের পরীক্ষা করা হয়েছে আগেই। শনিবার তদন্তের আরও একটু অগ্রগতি হয়েছে বলে দাবি পুলিশের। তদন্তকারী অফিসারেরা জানাচ্ছেন, যে অ্যাপ-ক্যাবে চেপে রেস্তোরাঁ থেকে ক্লারা ফ্ল্যাটে ফিরেছিলেন সেই ক্যাব-চালকের বাড়ির ঠিকানা পাওয়া গিয়েছে। তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
পুলিশ আত্মহত্যা কিংবা খুনের সম্ভাবনায় গুরুত্ব দিতে চাইছে না, আবার খারিজও করছে না। শুক্রবার সন্ধ্যায় ক্লারার পরিচিত সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনেকেই ঘটনার আগের রাতে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় ক্লারার বন্ধু ইবলিম ননগ্রামের জন্মদিনের পার্টিতে হাজির ছিলেন। ওই সাত জনকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা গিয়েছে, প্রথমে ইবলিম এবং ক্লারার বন্ধু সুরজ সুতোদিয়া পার্টিতে যান। পরে সেখানে যোগ দেন ক্লারা।
পাশাপাশি রেস্তোরাঁর সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে তদন্তকারীরা
তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছেন। সেখানে দেখা গিয়েছে, ক্লারা, ইবলিম এবং সুরজ তিন জনেই এক সঙ্গে রেস্তোরাঁ থেকে বেরোচ্ছেন। যদিও কেষ্টপুরের প্রফুল্লকানন এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, ক্লারা ওই রাতে একাই বাড়ি ফেরেন। তার
পরে একে একে সুরজ ও ইবলিমকে ফ্ল্যাটে ঢুকতে দেখা গিয়েছিল। সে রাতে ওই এলাকায় একটি জলসাও চলছিল। তাই অনেক রাত পর্যন্ত এলাকাবাসী সেখানে ছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই পার্টিতে মদ্যপান করেছিলেন সকলেই। বাসিন্দাদের কথা সত্যি হলে প্রশ্ন, কেষ্টপুরের ফ্ল্যাটেই যখন সবাই আসবেন,
তখন এক সঙ্গে রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়েও ইবলিম এবং সুরজ কেন ক্লারার সঙ্গে এলেন না? তবে কি পার্টিতে কারও সঙ্গে ক্লারার মনোমালিন্য হয়েছিল? ওঁরা আদৌ একই গাড়িতে উঠেছিলেন কি না তা জানতে তদন্তকারীদের আপাতত বড় ভরসা ক্যাব-চালক।
এখানেই ধন্দের ইতি নয়। ঘটনার পরে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে পুলিশ দেখেছিল, সুরজ এবং ইবলিম মত্ত অবস্থায় ছিলেন। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা জানান, তাঁদের কিছু মনে নেই। তাঁরা কতটা ঠিক বলছেন তা-ও ফের যাচাই করে দেখার প্রয়োজন বলে ধারণা তদন্তকারী অফিসারদের।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ক্লারাকে ঠেলে ফেলা হলে বা তিনি বেসামাল হয়ে নীচে পড়ে গেলে যে পরিমাণ আঘাতের সম্ভাবনা থাকে, তা হয়নি। সেটাও পুলিশকে ভাবাচ্ছে। পুলিশের একাংশের কথায়, বেসামাল হয়ে পড়ে যাওয়ার তত্ত্ব মেনে নিলে ঘটনাগুলি পর পর মেলাতে মুশকিল হচ্ছে। কারণ একই ঘরে থাকাকালীন
ক্লারা নীচে পড়ে গেলেন, অন্য দুই বন্ধু কেন টের পেলেন না? মত্ত থাকার কারণেই কি তাঁরা টের পেলেন না? সেই যুক্তিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে দুর্ঘটনার আগের কয়েক ঘণ্টার হিসেব খুঁজছে পুলিশ।
এ দিকে ঘটনার চার দিন পরেও ক্লারার পরিবারের তরফে কোনও অভিযোগ করা হয়নি। কেন তাঁরা নিজেদের মেয়ের মৃত্যুর কারণ জানতে চাইছেন না, তা-ও ভাবাচ্ছে তদন্তকারী অফিসারদের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy