পরিবার থাকলেও অভিভাবকহীন!
এমনই অবস্থা রাজারহাট থানার। কারণ, থানা চলছে। পুলিশও রয়েছে। শুধু নেই পুলিশের অফিসার-ইন-চার্জ। প্রায় দেড় বছরের কাছাকাছি কার্যত ওসি ছাড়াই চলছে থানা।
কামদুনিতে এক কলেজ ছাত্রী ধর্ষিতা ও খুন হওয়ার পরে তড়িঘড়ি রাজারহাট থানাকে বিধাননগর কমিশনারেটের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যাতে ওই থানা এলাকার আইন-শৃঙ্খলা দেখভালের পরিকাঠামো আরও উন্নত করা যায়। তার আগে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পুলিশের অধীনে ছিল থানাটি। ২০১৪ সালের অগস্টে রাজারহাট থানাকে বিধাননগর কমিশনারেটে যুক্ত করা হয়। তার মাসখানেকের মধ্যেই তৎকালীন ইনস্পেক্টর-ইন-চার্জ সুকমলকান্তি দাস কমিশনারেটের গোয়েন্দা-বিভাগে বদলি হন। তার পর থেকেই রাজারহাট থানার জন্য কোনও ওসি নিয়োগ হননি। কখনও এসিপি পদ-মর্যাদার পুলিশ কর্তা, কখনও অন্য থানার ওসি-র মাধ্যমে রাজারহাট থানার কাজকর্ম পরিচালনা হচ্ছে। গত তিন মাস রাজারহাট থানার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নিউ টাউন থানার ওসি শঙ্কর চৌধুরীকে।
কমিশনারেটের আধিকারিকদের বক্তব্য, ওসি না থাকলেও রাজারহাট থানার বাহিনী যথেষ্ট স্বয়ংসম্পূর্ণ। ফলে কাজ চলে যাচ্ছে থানার নিজস্ব ওসি ছাড়াই। যদিও ওই আধিকারিকেরা এমনও স্বীকার করেছেন, এক সঙ্গে রাজারহাট এবং নিউ টাউনে বড় ঘটনা ঘটলে সমস্যা হতে পারে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, ঝামেলা মিটলেও কামদুনি কাণ্ড আজও পিছু ছাড়েনি। প্রতি মাসেই একদিন করে সিপিএম ও তৃণমূল ওই ছাত্রীর স্মরণে অনুষ্ঠান করে। কিন্তু রাজারহাট থানার ওসি না থাকায় সেই অনুষ্ঠানে রাজারহাট থানার পুলিশের সঙ্গে থাকতে হয় নিউ টাউন থানার ওসিকেই। আবার হাড়োয়া, শাসনের মতো স্পর্শকাতর জায়গাও রাজারহাট থানা এলাকার গা ঘেঁষে রয়েছে। একই সঙ্গে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সীমান্ত এলাকাও মিশেছে রাজারহাটে। ফলত এলাকার মানুষের মধ্যে থেকেই দাবি উঠছে, রাজারহাট থানায় আলাদা করে ওসি নিয়োগ করার।
এক জন অফিসার-ইন-চার্জ কী কাজ করেন? পুলিশকর্মীরা জানাচ্ছেন, প্রথমত এলাকার নাগরিকদের সঙ্গে জনসংযোগ রক্ষার একটা বড় দায়িত্ব থাকে ওসি-র। কোন অফিসার কোন কাজ করবেন, তার দায়িত্ব ভাগ করে দেন ওসি। সারা দিনে থানায় কতগুলি মামলা এল, তা দিনের শেষে দেখে নেন তিনি। আর থানা এলাকায় কোনও ঘটনা ঘটলে বাহিনী নিয়ে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার কাজের নেতৃত্ব দেন ওসি-ই।
রাজারহাট থানার ক্ষেত্রে এই সব কাজে অসুবিধে হচ্ছে বলেই খবর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, বড়বাবুর সঙ্গে কথা বলতে রাজারহাট থেকে অনেক সময়ে নিউ টাউন ছুটতে হয়। আবার রাজারহাট থানায় যখন নিউ টাউনের বড়বাবু পৌঁছতে পারেন না, তখন তাঁকে টেলিফোনের মাধ্যমে দিনের প্রতিটি মামলার তথ্য জানাতে হয়। দিন দু’য়েক আগে এক জন সাব-ইনস্পেক্টরও লেকটাউনে বদলি হয়ে গিয়েছেন।
কিন্তু কেন এত দিনেও রাজারহাট থানায় ওসি নিয়োগ করা গেল না? রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) অনুজ শর্মা বলেন, ‘‘কেন এত দিনেও ওসি নিযুক্ত হলেন না, তা ফাইল দেখে বলতে হবে। তবে এ বার ওই থানায় ওসি নিয়োগের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy