ভিড় সামলাতে এ বার চতুর্থী থেকেই রাস্তায় নামছে পুলিশ। তবে শুধু বাহিনীই নয়, থাকবেন কলকাতা পুলিশের শীর্ষকর্তারাও। পাশাপাশি এ বার ওই দিন থেকেই শহরের সমস্ত বড় পুজোমণ্ডপ সংলগ্ন এলাকায় থাকবে পুলিশ পিকেটও। পঞ্চমী থেকে অবশ্য প্রতিবারের মতো সমস্ত পুজোমণ্ডপেই পুলিশি ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ওই দিন থেকে বড় পুজোগুলিতে বেড়ে যাবে পুলিশ পিকেটের সংখ্যা। এত দিন ভিড় সামলাতে মূলত পঞ্চমীর দিন থেকেই রাস্তায় নামত কলকাতা পুলিশ, কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে চতুর্থী থেকেই ঠাকুর দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল নামায় এ বারের এই নতুন ব্যবস্থা।
লালবাজার জানিয়েছে, এ বার শহরের ২৪৫৮টি পুজোকে নিরাপত্তার স্বার্থে ৪২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি ভাগের দায়িত্বে থাকছেন এক জন করে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার। যাদের উপরে থাকছেন ডিসি বা যুগ্ম কমিশনার পদমর্যাদার অফিসার। পুজোর ভিড়ে অপ্রীতিকর ব্যবস্থা সামলানোর জন্য শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে লাগানো হচ্ছে অতিরিক্ত ৭৭টি সিসি ক্যামেরা। বর্তমানে শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় সাতশোর মতো ক্যামেরা রয়েছে। এ ছাড়া, নজরদারির জন্য থাকছে ৫৩টি নজর-মিনার। যাতে নাইট ভিশন বাইনোকুলার নিয়ে থাকবেন চার জন করে পুলিশকর্মী। অপ্রীতিকর কোনও অবস্থা সামলাতে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে থাকবে প্রায় কুড়িটির বেশি কমান্ডো দল। এ দিকে, দর্শনার্থীদের সুবিধের জন্য শহরের বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরবে ১১টির বেশি মোবাইল পুলিশ সহয়তা বুথ। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, প্রতি বছর পুজোর দিনে মেট্রো রেলে অস্বাভাবিক ভিড় হয়। এ বার সেই ভিড় সামলে যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন মেট্রো স্টেশনেও থাকবে ২৩টি পুলিশ বুথ, যার প্রত্যেকটিতে থাকবেন ৪ জন
করে পুলিশকর্মী।
গত বছর দেশপ্রিয় পার্কের ‘বড় দুর্গা’ দেখতে আসা দর্শনার্থীদের ভিড় সামলাতে কার্যত নাকানিচোবানি খেয়েছিল পুলিশ। পুলিশ জানায়, তা থেকে শিক্ষা নিয়েই এ বার আর রাশ আলগা করতে চান না লালবাজারের কর্তারা। তাই আগেভাগেই শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বাহিনীকে নামাতে চাইছেন তাঁরা। শুধু দেশপ্রিয় পার্ক সংলগ্ন এলাকাতেই রাখা হচ্ছে প্রায় পাঁচশোর বেশি পুলিশকর্মী। থাকবেন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার অফিসারদের পাশাপাশি মহিলা পুলিশ বাহিনীও। এ ছাড়া গোটা এলাকাকে চার ভাগ করে, প্রতি এলাকার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এক জন করে ডেপুটি কমিশনারের
(ডিসি) হাতে।
পুজোয় বাড়বে বিদ্যুতের চাহিদা। গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে তৃতীয়া থেকেই সিইএসসি এলাকায় বিদ্যুতের চাহিদা বাড়তে থাকে এবং পঞ্চমী-ষষ্ঠীতে তা তুঙ্গে ওঠে। এ বছর সেই চাহিদা পঞ্চমীতেই ছুঁতে পারে ১৯৪০ মেগাওয়াট, এমনটাই মনে করছেন সিইএসসি-কর্তৃপক্ষ। গত বার ষষ্ঠীতে বিদ্যুতের চাহিদা ছিল সর্বাধিক, ১৬৮৭ মেগাওয়াট। এ বার তা ২৫০ মেগাওয়াট বাড়তে পারে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার এক সাংবাদিক বৈঠকে সিইএসসি-র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ডিস্ট্রিবিউশন) অভিজিৎ ঘোষ এই তথ্য দিয়ে জানান, গত বছর তাঁদের এলাকায় পুজো ছিল ৩৮২৪টি। এ বছর সোমবার পর্যন্তই আবেদন পড়েছে ৩৩৪০টি। আরও ১০০টি পুজো বিদ্যুৎ সংযোগ নেবে বলে মনে করছেন তাঁরা। সেই হিসেবেই এ বার চাহিদা বাড়বে বলে তাঁদের অনুমান। অভিজিৎবাবু বলেন, ‘‘পুজোয় আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে চাহিদা আরও বাড়লেও বিদ্যুতের অভাব হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy