Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
চিন্তায় শিক্ষাবিদেরা

ফেল করাদের পাশ করানো নিয়ে উদ্বেগ

নতুন নিয়মে পরীক্ষা নেওয়ায় এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে ফেলের হার বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ ফেল করা পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট আটকে হয়েছে বিক্ষোভও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৫
Share: Save:

ফেল করেও পাশ করানোর দাবিতে আন্দোলনে নামছেন ছাত্রদের একাংশ। সেই দাবি মেনেও নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এই দাবি মেনে নিলে ভবিষ্যতে শিক্ষার হাল কী দাঁড়াবে তা নিয়ে চিন্তিত শিক্ষাবিদদের অনেকেই। তাঁরা বলছেন, এই দাবিকে প্রশ্রয় দিলে তা দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে। ফলে অরাজকতা বাড়বে। তেমনই অযোগ্য পড়ুয়াদের পাশ করালেও লাভ কী হবে? যোগ্যদের সঙ্গে এঁটে উঠে চাকরির পরীক্ষায় সফল হতে পারবেন কি এঁরা?

নতুন নিয়মে পরীক্ষা নেওয়ায় এ বার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরে ফেলের হার বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। তা নিয়ে ক্ষুব্ধ ফেল করা পড়ুয়ারা। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট আটকে হয়েছে বিক্ষোভও। শেষমেশ মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ফেল করা পড়ুয়াদের পুরোনো নিয়মেই ফল প্রকাশের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের যৌক্তিকতা কতটা?

বেহালা বিবেকানন্দ মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ সোমা ভট্টাচার্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নিয়মকেই সমর্থন করেন। বলছেন, ‘‘এই নিয়ম চালু হলে পড়ুয়াদেরই ভাল হত। পুরোনো নিয়মে দু’বিষয়ে ফেল করলে পাশ করিয়ে দেওয়া হলেও দেখা যেত সেই পড়ুয়াদের বড় অংশ বিষয় সম্পর্কে ভালভাবে কিছু জানেই না।’’ তাঁর প্রশ্ন এ ভাবে পাশ করে ভবিষ্যতে এঁরা কী করবেন?

শিক্ষাবিদদের একাংশ ফেল করেও পাশ করানোর দাবির অরাজকতা ছড়ানোর যে আশঙ্কা করেছেন তার নজির ইতিমধ্যেই যোগেশচন্দ্র চৌধুরী দিবা কলেজে দেখা গিয়েছে।
টেস্টে ফেল করা পড়ুয়ারা পাশের দাবি জানিয়ে পরপর দু’দিন কর্তৃপক্ষকে ঘেরাও করে রেখেছিলেন। অভিযোগ, বিক্ষোভ চলাকালীন কলেজ থেকে বেরনোর সময় অধ্যক্ষ পঙ্কজ রায়ের উদ্দেশে জলের পাউচ ছুড়েও মারা হয়। অধ্যক্ষ জানিয়েছিলেন, ফেল করাদের অনেকেই কিছু না লিখে সাদা খাতা জমা দিয়েছেন। কারও কারও আবার হাজিরার খাতাতেও শূন্য! এ সবের পরেও পাশ নম্বর কমিয়ে, গত দু’বছরের ফল দেখে সিংহভাগ পরীক্ষার্থীকেই পাশ করিয়েছেন ওই কলেজের কর্তৃপক্ষ। অধ্যক্ষ বিষয়টি নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগও করতে চেয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, কিছু না শিখেই পাশ করে যাচ্ছেন এঁরা! এঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে? পঙ্কজবাবুর মতে, এ ভাবে টেস্টে পাশ করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষায় ফেল করবে। তখন পাশের দাবিতে কলেজ ছে়ড়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে হাঙ্গামা বাধাবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের এক প্রবীণ অধ্যাপকের মন্তব্য, ‘‘এ বার তো দেখছি সিন্ডিকেট শূন্য পেলেও পাশের নিয়ম চালু করবে!’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এমন চলতে পারে নাকি? কোথাও একটা নিয়ন্ত্রণ তো রাখতে হবে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE