জখম হোটেল-কর্মী গোপাল মণ্ডল। বৃহস্পতিবার, নিউ আলিপুরে। নিজস্ব চিত্র
জন্মদিন উদ্যাপন করতে এসে নিউ আলিপুরের একটি হোটেলে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ উঠল ছয় যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার গভীর রাতে হোটেল মালিকের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ওই ছয় যুবককে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম পঙ্কজ সিংহ, অমিত পাল, প্রসেনজিৎ দাস, রাজকুমার সাউ, রাজ দত্ত এবং বিশ্বজিৎ মণ্ডল। ধৃতদের মধ্যে প্রথম পাঁচ জনের বাড়ি বেহালার পর্ণশ্রীতে। বিশ্বজিতের বাড়ি সরশুনায়।
পুলিশ সূত্রের খবর, বুধবার রাত একটা নাগাদ ওই ছ’জন মিলে নিউ আলিপুর থানা এলাকার মাঝেরহাটের ডায়মন্ড হারবার রোডের পাশে একটি হোটেলে খাবার খেতে ঢোকে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, খাবার শেষ হয়ে যাওয়ায় ওই যুবকদের হোটেলে ঢুকতে নিষেধ করা হয়েছিল। হোটেলের এক কর্মী বলেন, ‘‘বারণ করা সত্ত্বেও মত্ত অবস্থায় ওই ছ’জন জোর করে হোটেলের দোতলায় উঠে যায়। সেখানে তখন একটি পরিবার খাওয়াদাওয়া করছিল। দু’জন মহিলাও ছিলেন। যুবকেরা চিৎকার, গালিগালাজ শুরু করলে ওই মহিলারা প্রতিবাদ করেন।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকদের মত্ত আচরণ দেখে দুই মহিলা-সহ চার জন নেমে এসে হোটেলের কাউন্টারে অভিযোগ জানান। কাউন্টারে তখন গোপাল মণ্ডল নামে হোটেলের এক কর্মচারী ছিলেন। সঞ্জীব নামে হোটেলের এক কর্মচারী প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকে মারধর করে ওই যুবকেরা। গোপালবাবু দোতলায় উঠে প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকেরা মিলে গোপালবাবুকে মেঝেতে ফেলে কিল, ঘুষি মারতে শুরু করে। হোটেলের অন্য কর্মীরা বাধা দিতে গেলে তাঁদেরও মারধর করা হয়। এর পরেই ছ’জনের মধ্যে এক যুবক দেওয়ালে টাঙানো একটি কাচের ফটোফ্রেম খুলে গোপালের দিকে ছোড়ে। কাচে গোপালের ডান হাত কেটে রক্ত বেরোতে থাকে। এর পরেই ওই যুবকেরা পালানোর চেষ্টা করলে অন্য কর্মীরা তাদের আটকে রেখে হোটেলের শাটার নামিয়ে দেন।
এই তাণ্ডব দেখে ইতিমধ্যেই এক জন নিউ আলিপুর থানার পুলিশকে ফোনে ঘটনাটি জানান। মিনিট দশেকের মধ্যেই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ছ’জনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। হোটেল মালিকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে রাতেই ছ’জনকে গ্রেফতার করা হয়। আহত গোপালবাবুকে স্থানীয় বিদ্যাসাগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। তাঁর হাতে পাঁচটি সেলাই হয়েছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই হোটেলে গিয়ে দেখা গেল, অসুস্থ গোপাল মণ্ডল হোটেলের বিশ্রামঘরে শুয়ে রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘মত্ত এক যুবক কাচের ফটোফ্রেম ছুড়তেই আমি হাতটা বাড়িয়ে দিই। না হলে কাচের টুকরো পেটে এসে লাগত। বরাতজোরে বেঁচে গিয়েছি।’’ পুলিশ সূত্রের খবর, ওই যুবকদের মধ্যে এক জনের জন্মদিন ছিল বুধবার। জন্মদিন উদ্যাপনের জন্যই ওই হোটেলে হাজির হয়েছিল তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy