Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

কেষ্টপুরে টক্কর দুই বাসের, মৃত্যু সাইকেল চালকের

দু’টি বাসের মধ্যে রেষারেষির জেরে প্রাণ গেল সাইকেল চালকের। দুই বেপরোয়া যানের মধ্যে পড়ে জখম হলেন একটি অ্যাপ-ক্যাব চালক এবং যাত্রীও।

দুর্ঘটনার পরে। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র

দুর্ঘটনার পরে। শনিবার। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৬ ০২:০৯
Share: Save:

দু’টি বাসের মধ্যে রেষারেষির জেরে প্রাণ গেল সাইকেল চালকের। দুই বেপরোয়া যানের মধ্যে পড়ে জখম হলেন একটি অ্যাপ-ক্যাব চালক এবং যাত্রীও। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে কেষ্টপুর সংলগ্ন ভিআইপি রোডে।

পুলিশ জানায়, মৃত সাইকেল চালকের নাম নিমাই বালা (৩০)। নদিয়ার বাসিন্দা ওই ব্যক্তি কেষ্টপুর এলাকায় ঠিকা শ্রমিকের কাজ করতেন। তাঁর সাইকেলের পিছনে শিবু বিশ্বাস নামে আরও এক ব্যক্তি ছিলেন। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আরজিকর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওই অ্যাপ-ক্যাবের চালক এবং যাত্রীকে ভিআইপি রোড সংলগ্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানায় পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অ্যাপ-ক্যাবটিও।

এলাকার বাসিন্দারা জানান, এ দিন সন্ধ্যায় কেষ্টপুর থেকে তীব্র গতিতে বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল একটি সরকারি এবং একটি বেসরকারি বাস। তাঁদের দাবি, সরকারি বাসটি ছিল সিটিসির টালিগঞ্জ-মধ্যমগ্রাম রুটের এবং বেসরকারি বাসটি ছিল বারুইপুর-বারাসত রুটের। পুলিশ জানতে পেরেছে, দু’টি বাস মিলিয়ে মোট জনা সত্তর যাত্রী ছিলেন। তাঁদের কারও কোনও ক্ষতি হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পেরেছে, কেষ্টপুরের কাছে সরকারি বাসটি বেসরকারি বাসটিকে টপকানোর চেষ্টা করতে গিয়ে ধাক্কা মারে। ধাক্কার জেরে বেসরকারি বাসটি সাইকেলচালক এবং আরোহীকে চাপা দিয়ে রাস্তার মধ্য ডিভাইডারের উপরে উঠে গিয়ে এক দিকে হেলে যায়। সরকারি বাসটি এর পরেও পঁয়তাল্লিশ নম্বর রুটের একটি বাসকে ধাক্কা মেরে রাস্তার পাশের রেলিং ভেঙে দেয়। যদিও পঁয়তাল্লিশ নম্বর রুটের বাসটির কোনও ক্ষতি হয়নি বলে দাবি করেন স্থানীয়েরা। পুলিশ রাত পর্যন্ত দু’টি বাসের চালক ও কন্ডাকটরের খোঁজ পায়নি। পুলিশের অনুমান, সরকারি বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারালেই এই বিপত্তি ঘটে।

কেষ্টপুরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁদের বাস স্ট্যান্ডটি দখল করে অটো স্ট্যান্ড গজিয়ে উঠেছে। ফলে সাধারণ মানুষকে রাস্তায় দাঁডিয়েই বাস বা অন্য গাড়িতে ওঠার জন্য অপেক্ষা করতে হয়।

২০০৮ সালে কেষ্টপুরে বেপরোয়া ভাবে চলা বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রেলিং ভেঙে খালে পড়ে গিয়েছিল। ওই ঘটনায় জনা ছাব্বিশ ব্যক্তির মৃত্যু হয়। শনিবার সন্ধ্যাতেও সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে পারত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন। কারণ দুর্ঘটনার সময়ে ওই জায়গাতেই প্রায় দেড়শো লোক বাস ধরার জন্য অপেক্ষা করছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।

কেষ্টপুর এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, বাসে-বাসে রেষারেষির ঘটনা ভিআইপি রোডে নতুন কিছু নয়। এই সমস্যা নিয়ে পুলিশ এবং জন-প্রিতনিধিদের কাছে আবেদন জানিয়েও কোনও লাভ হয় না। যদিও বাসিন্দাদের এই সব অভিযোগ নিয়ে রাতে পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা এবং জন-প্রতিনিধিরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Rivalries Two buses one dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE