—প্রতীকী ছবি
কোলে ছোট্ট শিশু। পরনে নোংরা ছেঁড়া কাপড়। মহিলার চোখে মুখে অসহায়তার স্পষ্ট ছাপ। পুলিশের দাবি, এটা কিন্তু মুখোশ। আড়ালে রয়েছে ভয়ানক ফন্দি। সুযোগ পেলেই এরা বাড়িতে ঢুকে মোবাইল, ল্যাপটপ এমনকী টাকাও চুরি করে। ভবানীপুর এলাকায় পরপর এ ধরনের বেশ কয়েকটি চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। সম্প্রতি ভবানীপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে এক মহিলাকেও। এর পরেই নড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। তদন্তে অনুমান, এর পিছনে রয়েছে কোনও চক্র।
লালবাজার সূত্রের খবর, ভবানীপুর এলাকায় এই ধরনের চোরের উৎপাত কয়েক মাসআগেই শুরু হয়েছিল। লালবাজার সূত্রের খবর, ধর পাকড়ের পরে দিন কয়েক চুপ ছিল। ফের এদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। যদিও শহর জুড়ে এই কায়দায় চুরি
চক্রের সক্রিয়তার কথা মানছে লালবাজার। তবে বেশি সক্রিয় ভবানীপুর এলাকাতেই। শুধু এই এলাকা থেকেই চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত শিশু কোলে পাঁচ জন মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিক্ষুকের বেশে থাকা চোরের নাগাল পেতে তাই ফের শুরু হয়ে গিয়েছে পুলিশি তৎপরতা।
লালবাজার সূত্রের খবর, এদের অধিকাংশই দক্ষিণ ২৪ পরগনা, হাওড়া ও দুই মেদিনীপুরের বাসিন্দা। কোলে কয়েক মাসের শিশু নিয়ে কলকাতায় এসেই ভবানীপুর এলাকায় ঢুকে পড়ছে। কয়েক দিন এলাকা ঘুরে দেখার পরে শুরু করে দেয় অভিযান। সেই বাড়িই এদের লক্ষ্য, যেখানে পেয়িং গেস্ট বা প্রবীণদের বাস। কারণ পেয়িং গেস্টরা অনেক সময়েই অসাবধানবশত দরজা খোলা রাখেন। আর বেশির ভাগ প্রবীণদের মধ্যে অসহায়তা এবং শারীরিক প্রতিবন্ধকতা থাকে। সেই সুযোগই কাজে লাগায় ওরা। জানাচ্ছে পুলিশ।
এক পুলিশ কর্তার দাবি, কোলে শিশু নিয়ে ভিক্ষা চাইলে, অনেকেই ফেরান না। বাড়ির মালিক টাকা আনতে ভিতরে গেলেই পিছন পিছন ঢুকে পড়ে ওরা। সামনে কিছু পেলেই আঁচলে আড়াল করে নিয়ে চম্পট দেয়। এতটাই প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত যে হাতেনাতে ধরা মুশকিল। ধরা পড়লেও মারধরের থেকে বাঁচতে ঢাল করছে শিশুদের।
কয়েক মাস আগে পুলিশি তৎপরতা শুরু হতেই চুরি প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। সম্প্রতি এক মহিলা গ্রেফতার হওয়ার পরে ফের সামনে আসছে এই ধরনের চুরির ঘটনা। এক পুলিশ কর্তা জানান, চক্রের খোঁজের পাশাপাশি, বাসিন্দাদেরও সচেতন করার কাজ চলছে। যে সব বাড়িতে পেয়িং গেস্ট বা বয়স্করা থাকেন সেই বাড়িগুলিকে বিশেষ করে সতর্ক করা হচ্ছে। শিশু কোলে মহিলাকে ভিক্ষা করতে দেখলে দ্রুত ভবানীপুর থানায় খবর দিতে আবেদন করা হচ্ছে এলাকাবাসীর কাছে।
যাদবপুর, পূর্ব যাদবপুর এলাকায় পেয়িং গেস্টের সংখ্যা বেশি থাকলেও এই প্রবণতা ভবানীপুরেই বেশি কেন? পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘এসএসকেএম হাসপাতালে এঁরা রোগীর আত্মীয়ের বেশে আশ্রয় নেন। সেই চক্রটিকেই খোঁজার চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy