স্কুল সাফাইয়ের কাজ দেখছে পড়ুয়ারা। শনিবার। নিজস্ব চিত্র
শুধু তত্ত্ব কথায় ফল হয় না। হাতে-কলমে মাঠে নেমে কাজ করা দরকার। তাই এ বার ডেঙ্গি প্রতিরোধে সরাসরি যুক্ত করা হচ্ছে স্কুল পড়ুয়াদের।
কী ভাবে স্কুল চত্বর পরিষ্কার রাখতে হয়, সাফাইকর্মী ও পড়ুয়াদের নিয়ে সেই কাজ শুরু হল শহরের স্কুলে। যাদবপুর বিদ্যাপীঠে এই কাজ শুরু হলেও শহরের প্রায় দু’হাজার স্কুলকে শীঘ্রই এই সচেতনতার কাজে যুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা। কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদেরও এর আওতায় আনা হয়েছে।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ডেঙ্গি মোকাবিলায় স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের সংযুক্তির কথা বলেছে স্বাস্থ্য দফতর। সম্প্রতি সেই নির্দেশ পেয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর। স্কুলগুলিকে আগে থেকেই এই বিষয়ে সচেতন করা হয়েছে। তবে এ বারে তার চরিত্র কিছুটা ভিন্ন।
যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য জানান, স্কুল চত্বর পরিষ্কার রাখার জন্য সাফাইকর্মীরা রয়েছেন। কিন্তু স্কুল পড়ুয়াদের তা দেখতে নিয়ে গেলে তারা আরও বেশি করে সচেতন হয়। তাই পড়ুয়াদের সঙ্গে নিয়ে স্কুল চত্বর ঘোরা হচ্ছে। কী ভাবে স্কুল পরিষ্কার রাখতে হয় সেটা কার্যত হাতে-কলমে করে দেখানো হচ্ছে। পড়ুয়ারা যাতে বাড়ির আশপাশেও একই কাজ করতে পারে সেটাই আসল উদ্দেশ্য। সর্বশিক্ষা মিশনের এক কর্তা জানান, স্কুল থেকে এই শিক্ষা নিয়ে বাড়িতেও যেন তা প্রয়োগ করা হয় তার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে। যোধপুর পার্ক বয়েজ স্কুলের প্রধানশিক্ষক গোপালচন্দ্র নন্দী বলেন, ‘‘শীঘ্রই আমাদের স্কুলের পড়ুয়াদের নিয়েও এই কাজ হবে।’’
কী ভাবে সচেতন করার কাজ করবে স্কুল? শিক্ষা দফতরের এক কর্তা জানান, স্বাস্থ্য দফতর থেকে জানানো হয়েছে, স্কুল চত্বরে ডাবের খোলা, বালতিতে যেন কোনও ভাবেই জল জমতে দেওয়া না হয় সেটাই বার বার পড়ুয়াদের বলা হয়েছে। কারণ, পরিষ্কার জমা জলেই ডেঙ্গির মশার জন্ম হয়। সেখান থেকেই ডেঙ্গি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। অধিকাংশ সময়ে ফুলহাতা জামা পরে থাকার জন্য পড়ুয়াদের বলা হয়েছে। পরিমলবাবু জানান, পড়ুয়াদের বলা থাকে স্কুল চত্বরের কোথাও জঞ্জাল বা জল জমে থাকলে অফিসে সেই তথ্য জানাতে। তা হলে দ্রুত পরিষ্কার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
প্রসঙ্গত গত বছর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সির ক্যাম্পাসে জমা জলে মশার লার্ভা পেয়েছিলেন কলকাতা পুরসভার কর্মীরা। এ বারে সেই ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় তাই সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়কে ডেঙ্গি প্রতিরোধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে উচ্চশিক্ষা দফতর।
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার রাজাগোপাল ধরচক্রবর্তী জানান, বালিগঞ্জ সায়েন্স কলেজের ক্যাম্পাসে জমা জঞ্জাল পুরসভা পরিষ্কার করে দিয়েছে। প্রতিটি ক্যাম্পাসে পরিষ্কারের কাজ চলছে। পাশাপাশি পড়ুয়াদের সচেতনতা বাড়ানোর জন্য শীঘ্রই ছাত্র সংসদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানান তিনি। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার প্রদীপ ঘোষ বলেন, ‘‘পুরসভার সঙ্গে যোগাযোগ রাখা হয়। পাশাপাশি পড়ুয়ারাও এই বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের এ রকম কোনও সমস্যা নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy