পাহারা: লেনিন মূর্তি ঘিরে পুলিশ পিকেট। বৃহস্পতিবার ধর্মতলায়। নিজস্ব চিত্র
জারতন্ত্রের বিরুদ্ধে বিপ্লবের কান্ডারি তিনি। মূর্তি হয়ে এখন কিনা পুলিশি ঘেরাটোপে! কস্মিন কালেও ভাবতে পেরেছিলেন ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন?
শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তিতে বুধবার আক্রমণ এবং কালি লেপার পরে এটাই ছবি শহরের।
লালবাজারের খবর, ধর্মতলার লেনিন মূর্তি-সহ শহরের সব গুরুত্বপূর্ণ মূর্তির নিরাপত্তা ও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কারণ জনসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাতা শ্যামাপ্রসাদের মূর্তি নষ্ট করার পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় লেনিন কিংবা মার্ক্সের মূর্তির উপরেই হামলার আশঙ্কা বেশি বলে মনে করা হচ্ছে। তাই তাঁদের মূর্তির সামনে পুলিশ পিকেট বসেছে। সল্টলেকে কয়েকটি মূর্তির চারপাশে নজর রাখছে বিধাননগর পুলিশও। দেখেশুনে অনেকেই মুচকি হেসে বলছেন, ‘‘মন্ত্রীসান্ত্রিদের মতো এ বার কি মনীষীদের মূর্তিরও জেড প্লাস নিরাপত্তা দরকার?’’
‘জেড প্লাস নিরাপত্তা’ হয়তো রসিকতা। কিন্তু ধর্মতলায় লেনিন-মার্ক্সের মূর্তির সামনে এমন পুলিশি ব্যবস্থা আগে দেখা যায়নি। পুলিশেরই এক অফিসার বলছেন, নানা মহল থেকে লেনিনের মূর্তি নিয়ে উস্কানিমূলক বার্তা ছড়ানো হচ্ছে। গাঁধী মূর্তিতেও নজরদারি বেড়েছে। মূর্তির ধারেকাছে আমজনতার যাতায়াতে রাশ টানা হয়েছে। আশপাশে সাদা পোশাকে ছড়িয়েছিটিয়ে রয়েছেন গোয়েন্দারা। রাতবিরেতে মোটরবাইক টহল জোরদার করতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন: পুলিশ এখানে শুধুই দর্শক, প্রশ্ন ভূমিকা নিয়ে
এখানে অনেকেরই স্মৃতিতে ফিরে আসছে সাতের দশক। নকশালপন্থীরা তখন একাধিক বার বিদ্যাসাগরের মূর্তিতে হামলা চালিয়েছিলেন। আক্রান্ত হয় রামমোহন-আশুতোষের মূর্তিও। কলকাতার প্রাক্তন পুলিশ কমিশনার তুষার তালুকদার মনে করতে পারেন, তখনও কিছু দিন পুলিশ মূর্তি পাহারা দিত।
আরও পড়ুন: মূর্তি-রাজনীতি ঘিরে যাদবপুরে ধুন্ধুমার, ধৃত ২
লালবাজার সূত্রে এ দিন জানা গিয়েছে, শুধু মার্ক্স-লেনিন নয়, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে বড় বড় সব মূর্তির তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। এর বাইরে কোথায় কার মূর্তি রয়েছে, কলকাতা পুরসভার কাছে তার তালিকাও চেয়ে পাঠানো হয়েছে। আপাত ভাবে রবীন্দ্রনাথ, বিবেকানন্দের মতো মনীষী বা নেতাজির মতো জাতীয় নায়কের মূর্তিতে হামলার আশঙ্কা কম। কিন্তু পুলিশ মনে করছে, শহরে গোলমাল পাকাতে ওই সব মূর্তিরও ক্ষতি করা হতে পারে। কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) সুপ্রতিম সরকার বলেন, ‘‘কড়া নজরদারি রয়েছে। কোনও মূর্তিকে বিকৃত করার চেষ্টা বরদাস্ত করা হবে না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy