জল-ছবি: ঢেউ খেলছে মহাত্মা গাঁধী রোডে।
সপ্তাহের প্রথম কাজের দিন সোমবারের বৃষ্টিতে বেশি ভুগেছিল দক্ষিণ। আর শুক্রবার শেষ কাজের দিনে বৃষ্টিতে বানভাসি চেহারা নিল উত্তরের বেশ কিছু এলাকা। বিপর্যস্ত হয়েছে হাওড়া শহরও।
বেহালার বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে সোমবারের বৃষ্টিতে জল ছিল বুধবার পর্যন্ত। এ দিন আকাশে কালো মেঘ আর মেঘের গর্জনে প্রমাদ গুনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু প্রবল বৃষ্টি না হওয়ায় বেঁচে গিয়েছে বেহালা।
এ দিন দুপুর থেকে দফায় দফায় বৃষ্টিতে জল দাঁড়িয়ে যায় বি টি রোডের বড় একটি অংশে। জল দাঁড়িয়ে যায় চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের বেশ কিছু অঞ্চলেও। ঠনঠনিয়া, মুক্তারামবাবু স্ট্রিট প্রায় জলাশয়ের চেহারা নেয়। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ে গাড়ি দীর্ঘ ক্ষণ দাঁড়িয়ে ছিল। পরে কলেজ স্ট্রিট দিয়ে ঘুরিয়ে নিতে হয়েছে। মহাত্মা গাঁধী রোডেও দীর্ঘ ক্ষণ জল জমে থাকায় আটকে যায় যান চলাচল। রবীন্দ্র সরণিতেও এক সময়ে জল জমায় যানবাহন ওই রাস্তা এড়িয়ে চলে। ঘুরপথে স্ট্র্যান্ড রোডে গিয়ে আটকে পড়ে বহু গাড়ি।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা জানান, রবীন্দ্র সরণির কোথাও রাস্তা ঢালু, কোথাও গর্ত। ভারী বৃষ্টি হলেই মাহেশ্বরী স্কুলের সামনে জল জমে। পুরসভায় বিষয়টি জানানোও হয়েছে। কিন্তু কিছু হয়নি।
এ দিনের বৃষ্টিতে বেহালা সোমবারের মতো না ডুবলেও, কিছু কিছু এলাকায় এদিন জল জমেছে। যেমন ১২২ নম্বর ওয়ার্ডের অরবিন্দ পল্লি, সূর্য সেন পল্লি। স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলার সোমা চক্রবর্তী বলেন, ‘‘এদিনের বৃষ্টিতে জল জমে গেলেও তা দ্রুত নামছে। আর বৃষ্টি না হলে সমস্যা হবে না।’’
এ দিন থেকেই ওয়েবসাইট এবং ডিসপ্লে বোর্ডের মাধ্যমে কলকাতা পুরসভার শহরে জল জমার তথ্য জানানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত পাম্পিং স্টেশনগুলিতে জলের কী অবস্থা এবং কত বৃষ্টি হয়েছে, সেই তথ্য দেওয়া ছিল। কিন্তু কোথায় কোথায় জল জমেছে, ছিল না তার কোনও তথ্য।
থই থই পুলিশ কিয়স্ক, লালবাজারের কাছে
দুপুরের টানা বৃষ্টিতে শুক্রবার ফের জলমগ্ন হয়ে পড়ে হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। পুরসভা সূত্রে খবর, রাতের মধ্যে হাওড়ার অধিকাংশ জায়গায় দ্রুত জল নেমে গেলেও, জল নামেনি মধ্য হাওড়ার পঞ্চাননতলা রোড, চার্চ রোড ও উত্তর হাওড়ার ৭ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডে। পুরসভার দাবি, বেলিলিয়াস রোডের ভূগর্ভস্থ পাইপ লাইন পরিষ্কারের কাজ সপ্তাহ খানেকের মধ্যে শেষ হয়ে গেলে সমস্যা অনেকটা মিটে যাবে। তবে চার্চ রোডে জল জমার জন্য মেট্রো রেলকেই দায়ী করেছেন পুর কর্তারা।
বৃষ্টির পরে পুরসভার কাছেই চার্চ লেনে প্রায় ৬ ইঞ্চি জল জমে যাওয়ায় ওই রাস্তা দিয়ে যান চলাচল ব্যহত হয়। নাস্তানাবুদ হন পথচলতি মানুষ। এলাকার বাসিন্দা, পরিবেশ কর্মী সুভাষ দত্তের অভিযোগ, ‘‘মেট্রো হাওড়া ময়দানের নিকাশিকে নষ্ট করে শুধু অন্যায় নয়, নর্দমা দিয়ে মাটি গঙ্গায় ফেলে অপরাধ করছে।’’
হাওড়ার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘মেট্রো ময়দান অঞ্চলের নিকাশিকে নষ্ট করে দেওয়ায় এলাকায় জল নামতে দেরি হচ্ছে। হাওড়ার অন্য অংশে কিন্তু জল দ্রুত নেমেছে।’’ কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেডের চিফ ইঞ্জিনিয়ার বিশ্বনাথ দেওয়ানজির মন্তব্য, ‘‘আমরা বিকল্প নিকাশি ব্যবস্থার কাজ শুরু করেছি। আশা করছি জুলাই মাসে সমস্যা মিটে যাবে।’’
ছবি: রণজিৎ নন্দী ও সুমন বল্লভ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy