Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
Dengue

জ্বরে কাবু বাজার, ক্ষতি ব্যবসাতেও

ডেঙ্গি থেকে রেহাই পাননি খোদ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। যদিও তাঁর দাবি, ডেঙ্গি নয়, তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বাজারের মধ্যেই চেম্বার চিকিৎসক সমীর বিশ্বাসের। তাঁর ডেঙ্গি হওয়ায় এলাকাবাসী পড়েছিলেন অথৈ জলে। এখন অবশ্য ওই চিকিৎসক কিছুটা সুস্থ। দুর্বল শরীর নিয়েই চেম্বার চালু করেছেন।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:১০
Share: Save:

আপদে-বিপদে ভরসা ছিলেন যে চিকিৎসক, তিনিও পড়েছিলেন ডেঙ্গির কবলে।

প্রায় প্রতিটি ঘরেই কেউ না কেউ জ্বরে আক্রান্ত। এলাকার যে একমাত্র বাজার, সেখানেও জ্বর বহু দোকানির। ইতিমধ্যেই মারা গিয়েছেন দু’জন, যাঁদের মধ্যে রয়েছেন রিয়া দাস নামে বছর কুড়ির এক তরুণী। ডেঙ্গি থেকে রেহাই পাননি খোদ ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। যদিও তাঁর দাবি, ডেঙ্গি নয়, তিনি জ্বরে আক্রান্ত হয়েছিলেন। বাজারের মধ্যেই চেম্বার চিকিৎসক সমীর বিশ্বাসের। তাঁর ডেঙ্গি হওয়ায় এলাকাবাসী পড়েছিলেন অথৈ জলে। এখন অবশ্য ওই চিকিৎসক কিছুটা সুস্থ। দুর্বল শরীর নিয়েই চেম্বার চালু করেছেন।

ঘটনাস্থল: বিধাননগর পুরসভার ২১ নম্বর ওয়ার্ডের জগৎপুর বাজার ও সংলগ্ন সন্তোষপল্লি। এলাকায় ঢুকলেই মালুম হয়, কেন আতঙ্ক ছড়িয়েছে সেখানে।

কেষ্টপুর ও পাশ খালের মাঝখানে জগৎপুর বাজার ও সন্তোষপল্লি। পরপর ঘিঞ্জি গলিতে যত্রতত্র ছড়িয়ে আবর্জনা। জমে আছে জল। উড়ে বেড়াচ্ছে মশার ঝাঁক। সন্তোষপল্লির দোকানি নিমাই বিশ্বাস বলেন, ‘‘বাড়িতে আমার স্ত্রী, ছেলে, বৌমা, দুই নাতির ডেঙ্গি হয়েছিল। কী ভাবে দোকান খুলব? রুজি-রোজগারই বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।’’ শুধু নিমাইবাবু নন, ডেঙ্গির জেরে জগৎপুর বাজারের অনেক দোকানিরই ব্যবসা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। ওই বাজারেই পোশাক তৈরির দোকান ছিল রিয়া দাসের। বিপুল কীর্তনীয়া নামে এক দোকানি বলেন, ‘‘মৃত্যুর পর থেকেই রিয়ার দোকান বন্ধ।’’

চিকিৎসক সমীরবাবু বলেন, ‘‘জগৎপুর বাজার ও সংলগ্ন এলাকার যত জ্বরের রোগীর রক্ত পরীক্ষা করিয়েছি, তার মধ্যে প্রায় আশি শতাংশই ছিল এন এস-১ পজিটিভ। সম্প্রতি পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও পুরো স্বাভাবিক হয়নি। বাজারের যত্রতত্র পড়ে থাকা জঞ্জাল ও জমা জলই ডেঙ্গির মশার উৎসস্থল।’’

বাজারের দোকানিরাও জানিয়েছেন, সেখানকার একটি নির্মীয়মাণ বাড়িই মশার কারখানা। সেই পরিত্যক্ত জায়গার জমা জল সাফাইয়ে কোনও উদ্যোগ দেখায়নি পুরসভা। মনোজ ঘোষাল নামে এক দোকানি বলেন, ‘‘বাজার সমিতিই উদ্যোগী হয়ে জমা জল পরিষ্কার করেছে। ব্লিচিং ছড়িয়েছে। কিন্তু পুরসভা কিছু করেনি।’’

কাউন্সিলর শিবনাথ ভাণ্ডারীর যুক্তি, ‘‘যে সব দোকানির ডেঙ্গি হয়েছে, তাঁদের সবাইকে এই বাজারের মশাই যে কামড়েছে, তার প্রমাণ কী? রিয়া দাসের বাড়ি তো গৌরাঙ্গনগরে।’’ কাউন্সিলরের মতে, ‘‘বাজার পরিষ্কারের দায় বাজার সমিতিরও। তাঁরা সে ভাবে দায়িত্ব পালন করেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dengue Market Business
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE