ধপাস: এ ভাবেই ভেঙে পড়ে মঞ্চটি। রবিবার। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী
মঞ্চে তখন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি, টলিউডের নায়িকা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীরা। ক্রীড়া, রাজনীতি জগতের বিশিষ্টদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়ার পর্ব চলছে। হঠাৎ ছন্দপতন। মড় মড় শব্দে হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল বাঁশ ও কাঠ দিয়ে তৈরি ওই মঞ্চ। মুহূর্তের মধ্যে মঞ্চের উপরে থাকা টলিউডের নায়িকা থেকে হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতা, সকলকে দেখা গেল মাটিতে গড়াগড়ি খেতে। কম-বেশি আহতও হলেন কয়েক জন।
রবিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্কে। এই ঘটনায় কেউ গুরুতর আহত না হলেও কোমরে চোট পেয়েছেন অনেকেই। তারই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে এমন অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিয়ে।
সূত্রের খবর, কালীঘাটের একটি ক্লাবের উদ্যোগে প্রতি বছর সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মদিন উপলক্ষে কালীঘাট থেকে ভবানীপুরের ওই পার্ক পর্যন্ত পায়ে পা মেলান টলিউড, ক্রীড়া, রাজনীতি জগতের বিভিন্ন ব্যক্তিত্বরা। এ দিনও সকালে সে ভাবেই হাঁটা শুরু করেছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার, পুরসভার বরো চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের সভাপতি নির্মল মাজি, বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়-সহ প্রায় তিনশো জন। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাই স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ ওই পার্কের মঞ্চে পৌঁছন তাঁরা।
নির্মল মাজি জানান, মঞ্চে উত্তরীয় পরানোর পর্ব চলছিল। তখনই ঘটে দুর্ঘটনা। সঙ্গে সঙ্গে দৌড়ে আসেন স্থানীয় লোকজন। কোনও ভাবে মঞ্চের ভগ্নস্তূপ থেকে সকলকে উদ্ধার করা হয়। নির্মলবাবু বলেন, ‘‘ভাগ্যিস মঞ্চের উচ্চতা কম ছিল। না হলে বড় রকমের দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’ বৈশ্বানরবাবু জানান, তাঁর কোমরে আঘাত লেগেছে। তবে মাটিতে পড়েও সব দিক থেকে সুস্থ আছেন বলে দাবি করেন মেয়র পারিষদ দেবাশিসবাবু। ওই মঞ্চেই থাকার কথা ছিল শোভনদেববাবুরও। তিনি পৌঁছনোর আগেই ঘটে দুর্ঘটনাটি। পরে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আরও সতর্ক হওয়া উচিত ছিল।’’
কিন্তু কেন এমন হল?
উদ্যোক্তা স্বপনবাবু জানান, ৬০-৭০ জনের ওজন নেওয়ার মতো করে মঞ্চটি তৈরি করা হয়েছিল। তার চেয়ে অনেক বেশি লোক উঠে পড়াতেই ঘটে বিপত্তি। তবে তিনি বলেন, ‘‘কারও চোটই তেমন গুরুতর নয়।’’
ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যেই অবশ্য শক্তপোক্ত মঞ্চ তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। নতুন ভাবে ওই মঞ্চ তৈরিতে ব্যস্ত এক কর্মী জানান, ৩০ ফুট বাই ২১ ফুটের মঞ্চে খুব বেশি হলে ৭০ জন উঠতে পারেন। কিন্তু সেখানে উঠে পড়েছিলেন দেড়শোর বেশি লোক। উচ্চতা ছিল তিন ফুটের একটু বেশি। তাই বরাত জোরে সকলে বেঁচে গিয়েছেন। মঞ্চ আরও উঁচু হলে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। ২৩ জানুয়ারি ফের সেখানে অনুষ্ঠান আছে। মঞ্চ তৈরির কাজে ব্যস্ত এক কর্মী বলেন, ‘‘এ বার যেমন অনেক বেশি কাঠের পাটাতন দেওয়া হচ্ছে, তেমনই মঞ্চের নীচে বাঁশের অনেক খুঁটি থাকবে। দেখি এ বার কী করে ভাঙে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy