Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

স্যরের ক্লাসে পাহারাদার দিদিমণি

সংগঠনের কর্তাদের মতে, শিক্ষিকা না মিললে পুরুষ শিক্ষক রাখা হোক। কিন্তু সেই ক্লাসে শিক্ষিকার উপস্থিতিও প্রয়োজন। শুধু তা-ই নয়, সহ-শিক্ষামূলক (কো-এড) স্কুলগুলিতে কোনও পুরুষ শিক্ষক যেন ছাত্রীদের সঙ্গে একা না থাকেন, সে বিষয়েও নজর দিতে বলা হচ্ছে।

কারমেলে অভিভাবক-বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

কারমেলে অভিভাবক-বিক্ষোভ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:৩১
Share: Save:

ছাত্রীদের স্কুলে নাচ, যোগব্যায়াম বা খেলাধুলো শেখানোর দায়িত্ব কোনও পুরুষ শিক্ষকের হাতে থাকলে সেই ক্লাসে ‘পাহারাদার’ হিসেবে রাখতে হবে কোনও শিক্ষিকাকে। সূত্রের খবর, এই নয়া সুপারিশ করতে চলেছে রাজ্যের খ্রিস্টান মিশনারি স্কুল সংগঠন, ‘দ্য অ্যাসোসিয়েশন অব খ্রিস্টান স্কুলস’। সংগঠনের কর্তাদের মতে, শিক্ষিকা না মিললে পুরুষ শিক্ষক রাখা হোক। কিন্তু সেই ক্লাসে শিক্ষিকার উপস্থিতিও প্রয়োজন। শুধু তা-ই নয়, সহ-শিক্ষামূলক (কো-এড) স্কুলগুলিতে কোনও পুরুষ শিক্ষক যেন ছাত্রীদের সঙ্গে একা না থাকেন, সে বিষয়েও নজর দিতে বলা হচ্ছে।

সম্প্রতি কারমেল-সহ একাধিক স্কুলে ছাত্রীদের উপরে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। মেয়েদের স্কুলে পুরুষ শিক্ষক নিয়োগে আপত্তি তুলেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তা নিয়ে বিতর্কও শুরু হয়েছে। সেই পরিপ্রেক্ষিতে এই সুপারিশকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন শিক্ষাজগতের অনেকে। প্রসঙ্গত, শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বারবারই মেয়েদের স্কুলে মহিলা শিক্ষক ও কর্মী নিয়োগে গুরুত্ব দিচ্ছেন।

শনিবার বৈঠকে বসেন খ্রিস্টান স্কুল সংগঠনের কর্তারা। পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার উপায় খোঁজাই ছিল মূল আলোচ্য বিষয়। বৈঠক শেষে এই সুপারিশ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন কর্তারা।

অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মলয় ডি’কোস্টা বলেন, ‘‘পড়ুয়াদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা স্কুলগুলিকে আমাদের সুপারিশ জানাচ্ছি। স্কুলগুলি তাদের মতো করে বিষয়গুলি বাস্তবায়িত করবে।’’ পড়ুয়াদের নিরাপত্তায় আরও কিছু সুপারিশ করা হয়েছে। স্কুলে পর্যাপ্ত সিসিটিভি, পুরুষ ও মহিলা- দুই ধরনেরই রক্ষী, স্কুল ও অভিভাবকদের নিয়মিত বৈঠক, অভিভাবক ও পড়ুয়ার পরিচয়পত্র এবং বহিরাগতদের জন্য ভিজিটর্স কার্ডের ব্যবস্থা করতেও বলা হয়েছে। স্কুলে পড়ুয়ার যাতায়াতের মাধ্যম জানাতে বলা হয়েছে। সুপারিশে এ-ও বলা হয়েছে, স্কুল চলাকালীন মেরামতির কাজ করা যাবে না। নিতান্ত জরুরি কিছু করতে হলে সেখানে স্কুলেরই চতুর্থ শ্রেণির কোনও কর্মীকে থাকতে হবে।

অনেকের প্রশ্ন, ক্লাসে কার্যত পাহারাদার হিসেবে এক জন শিক্ষিকা থাকবেন, এটি সংশ্লিষ্ট পুরুষ শিক্ষকের কাছে কতটা সম্মানের? একটি ইংরেজি মাধ্যমের নৃত্যশিক্ষক বলেন, ‘‘খারাপ লাগা তো অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু বেসরকারি স্কুলে চাকরি করতে গেলে তাদের নিয়ম মানতেই হবে।’’ সদ্য চাকরিতে যোগ দেওয়া এক শিক্ষকের মন্তব্য, ‘‘অভিযুক্ত হয়ে হাজতবাসের থেকে এটা ভাল।’’ অনেকে বলছেন, শিক্ষিকার উপস্থিতি হয়তো কিছু ক্ষেত্রে অনভিপ্রেত ঘটনা আটকাতে সাহায্য করবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE