Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

ছাত্র বিক্ষোভ প্রেসিডেন্সির সমাবর্তনেও

সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরুর বেশ কিছু আগে থেকেই এসএফআই এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠন প্রেসিডেন্সিতে বিক্ষোভ-অবস্থানে বসে। রাজ্যপাল ক্যাম্পাসে ঢুকলে তারা পোস্টার উঁচিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।

সম্মান: ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপরকে সাম্মানিক ডিলিট দিচ্ছেন আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সাম্মানিক ডিএসসি পেলেন শিল্পোদ্যোগী কিরণ মজুমদার শ। শুক্রবার প্রেসিডেন্সির সমাবর্তনে। ছবি: সুমন বল্লভ।

সম্মান: ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপরকে সাম্মানিক ডিলিট দিচ্ছেন আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী। সাম্মানিক ডিএসসি পেলেন শিল্পোদ্যোগী কিরণ মজুমদার শ। শুক্রবার প্রেসিডেন্সির সমাবর্তনে। ছবি: সুমন বল্লভ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৯ অগস্ট ২০১৭ ০৩:৪৬
Share: Save:

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীদের একাংশও অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। সেই বিরোধিতার ছায়া পড়ল প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনেও। আচার্য-রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠী শুক্রবার সমাবর্তনে যোগ দিতে গেলে পড়ুয়ারা তাঁর সামনেই বিক্ষোভ দেখান। যোগদানের কথা থাকলেও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে যাননি।

এ দিন সমাবর্তন অনুষ্ঠান শুরুর বেশ কিছু আগে থেকেই এসএফআই এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠন প্রেসিডেন্সিতে বিক্ষোভ-অবস্থানে বসে। রাজ্যপাল ক্যাম্পাসে ঢুকলে তারা পোস্টার উঁচিয়ে স্লোগান দিতে থাকে। অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে লেখা পোস্টারে শিক্ষামন্ত্রীর নাম উল্লেখ করা হয়েছিল। তবে তিনি শেষ পর্যন্ত আসেননি। ডিগ্রি নেওয়ার কথা থাকলেও ছাত্র কাউন্সিলের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে সমাবর্তন বয়কট করেন এসএফআইয়ের পাঁচ কর্মী।

সমাবর্তন শেষে বিষয়টি নিয়ে রাজ্যপালকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘সমাবর্তন অত্যন্ত সুন্দর একটি ব্যাপার। পড়ুয়াদের এতে যোগ দেওয়া উচিত।’’ ছাত্র কাউন্সিলের বিষয়ে তাঁর মতামত জানতে চাইলে এই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীকেই প্রশ্ন করতে বলেন আচার্য-রাজ্যপাল।

সম্মাননীয় অতিথি হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীর নাম ছিল সমাবর্তনের আমন্ত্রণপত্রে। কেন গেলেন না তিনি? ‘‘আমি আগেই ওঁদের জানিয়েছিলাম, যেতে পারব না। আর এ দিন বিধানসভায় যা ব্যস্ত ছিলাম, চাইলেও যেতে পারতাম না,’’ বলেন পার্থবাবু।

ভোটের মাধ্যমে ছাত্র সংসদ গড়ার বদলে নির্বাচন এড়িয়ে ছাত্র কাউন্সিল তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পার্থবাবুরা। তার বিরোধিতা করে গত সপ্তাহে প্রথমে আন্দোলন শুরু হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। পড়ুয়াদের একাংশ উপাচার্য সুরঞ্জন দাসকে প্রায় দেড় দিন ঘেরাও করে রাখেন। তার পরে বিক্ষোভ ছড়ায় প্রেসিডেন্সিতেও। সেপ্টেম্বরে পড়ুয়াদের বক্তব্য জানাতে বলেছেন প্রেসিডেন্সি-কর্তৃপক্ষ। তা সত্ত্বেও এ দিন সমাবর্তনে বিক্ষোভ দেখানো হয়। ‘‘আন্দোলনের অধিকার আছে পড়ুয়াদের। ওরা তা করছে। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তের ব্যাপারে আমাদের কিছু করার নেই,’’ বলেন উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া।

প্রেসিডেন্সির মেন্টর গ্রুপের চেয়ারম্যান তথা শাসক দলের সাংসদ সুগত বসু আলোচনার মাধ্যমেই এই সমস্যার সমাধানের পক্ষপাতী। তিনি সমাবর্তনে ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধিকারের কথা তুলে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের আলোচনার উপরে জোর দেন সুগতবাবু। তবে সরকার পক্ষ যে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের সিদ্ধান্তে অনড়, তা জেনে ওই তৃণমূল সাংসদ আর কোনও মন্তব্য করতে চাননি। জানিয়ে দেন, প্রেসিডেন্সিতে তিনি আসেন শিক্ষাবিদ হিসেবেই।

সমাবর্তনে দীক্ষান্ত ভাষণ দেন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল এম কে নারায়ণন। সাম্মানিক ডিলিট দেওয়া হয় ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপরকে। সাম্মানিক ডিএসসি পেলেন শিল্পোদ্যোগী কিরণ মজুমদার শ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Presidency University Convocation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE