আগের বার অবস্থান হয় উপাচার্যের ঘরের সামনে। ভিতরে ছিলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাস। অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের বিরোধিতায় নামা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সোমবার ফের অবস্থান করলেন। এ বার কর্মসমিতির বৈঠকের বাইরে। এবং এ বারেও ভিতরে উপাচার্য, সঙ্গে কর্মসমিতির অন্য সদস্যেরা।
রাজনৈতিক ছাত্র সংসদ বহাল রাখার দাবিতে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান করেন আন্দোলনকারীরা। কর্মসমিতির বৈঠকে সমাধানসূত্র মেলেনি। এ দিন তিন ছাত্র সংসদের পক্ষ থেকে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের প্রতিবাদে মিছিল করে গিয়ে কর্মসমিতিতে স্মারকলিপি পেশ করা হয়। তার পরেই অবস্থান শুরু হয় কর্মসমিতির বৈঠকের বাইরে।
কলা বিভাগের ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক দেবরাজ দেবনাথ জানান, যাদবপুরে ছাত্র সংসদ তিনটি। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটিই অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার কথা বলা হয়েছে। তাঁরা এই সিদ্ধান্ত মানবেন না। দেবরাজের বক্তব্য, অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল তৈরির পিছনে যুক্তি দেখানো হয়েছে, ছাত্রভোটে হিংসাত্মক ঘটনা ঘটে। কিন্তু যাদবপুরের ভোটে এমন ঘটনা কখনও ঘটেনি। দেবরাজদের দাবি, রাজনৈতিক ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জন্য দিনক্ষণ অবিলম্বে ঘোষণা করতে হবে। ৩১ জানুয়ারির পরে বর্তমান ছাত্র সংসদের বৈধতা থাকবে না।
কর্মসমিতির তরফে বলা হয়েছে, তিনটি ছাত্র সংসদের বিষয়টি রাজ্য সরকারকে জানানো হবে। কিন্তু রাজনৈতিক ছাত্র সংসদ বহাল রাখার ব্যাপারে সমাধানসূত্র পাওয়া যায়নি। সুরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘ওরা বলেছিল, অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিলের সরকারি বিধির বিষয়ে কিছু জানে না। আমরা প্রমাণ দিয়ে দেখিয়েছি, আগেই সেটি ওদের জানানো হয়েছে। ওরা নিজেদের দাবিতে অনড়। তবে ওরা লিখিত বক্তব্য আমাকে জানালে আমি সেটি সরকারকে জানাব।’’
সেন্ট জেভিয়ার্সের মডেলে চলতি শিক্ষাবর্ষেই কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজনৈতিক ছাত্র কাউন্সিল গড়ার কথা ঘোষণা করেছে সরকার। তার বিরোধিতায় যাদবপুরের পড়ুয়াদের একাংশ অগস্টে উপাচার্যকে প্রায় দেড় দিন ঘেরাও করে রাখেন। পড়ুয়াদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু সমাধানসূত্র বেরোয়নি। তার উপরে ছাত্রভোট হবে কি না, সেই বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যের জেরে ব্যাপক সংশয়ের সৃষ্টি হয়। পরে মন্ত্রী জানান, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার পরে ছাত্রভোটের দিন ঘোষণা করা হবে। তবে সেই সময়ে ছাত্রভোট আদৌ করা যাবে কি না, সেই ব্যাপারে সংশয় থেকেই যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে শিক্ষা শিবির। গত সপ্তাহে উপাচার্যের দফতরে এক দফা অবস্থান করেন পড়ুয়ারা। কর্তৃপক্ষ সোমবার কর্মসমিতির বৈঠকে এই বিষয়ে আলোচনা হবে জানানোর পরে সেই ধর্না তুলে নেওয়া হয়। এ দিন কর্মসমিতিতে বিষয়টি উঠলেও সমস্যার সুরাহা না-হওয়ায় গভীর রাত পর্যন্ত ধর্না চালিয়ে যাওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy