Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

নির্দেশই সার, পুরনো ফ্লেক্স পুর দফতরেই

ঘটনাচক্রে, দক্ষিণ দমদম পুরভবনের দরজায় যে ফ্লেক্সের কাট-আউট রয়েছে, সেটিই এক মাসের বেশি পুরনো। গত ২৩ জানুয়ারি পুরসভার ক্রীড়া বিভাগের পরিচালনায় ‘সুভাষ উৎসব’-এর আয়োজন করা হয়েছিল।

অনুষ্ঠান হয়ে গিয়েছে ২৩ জানুয়ারি। এখনও খোলা হয়নি ফ্লেক্স। বুধবার, দক্ষিণ দমদম পুরসভার সামনে। নিজস্ব চিত্র

অনুষ্ঠান হয়ে গিয়েছে ২৩ জানুয়ারি। এখনও খোলা হয়নি ফ্লেক্স। বুধবার, দক্ষিণ দমদম পুরসভার সামনে। নিজস্ব চিত্র

সৌরভ দত্ত
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৮ ০২:২৯
Share: Save:

এলাকা তো বহু দূর! পুরসভার সদর দফতরেই রয়ে গিয়েছে পুরনো ফ্লেক্স!

মঙ্গলবার বারাসতে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে দমদম ও দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধানদের কাছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানতে চেয়েছিলেন, পুর এলাকায় পুরনো ফ্লেক্স খোলা হয় না কেন? তিনি বলেন, ‘‘রাস্তায় যাতায়াতের সময়ে দেখি, বিভিন্ন জায়গায় দলীয়, সরকারি ও প্রশাসনিক হোর্ডিং-ফ্লেক্স রয়েছে। প্রতিটি ফ্লেক্সের তো একটা নির্দিষ্ট আয়ু আছে। সেগুলো রাস্তার পাশে ধুলো মাখা, কর্দমাক্ত হয়ে রয়েছে। এগুলো তুলে ফেলা হয় না কেন?’’

ঘটনাচক্রে, দক্ষিণ দমদম পুরভবনের দরজায় যে ফ্লেক্সের কাট-আউট রয়েছে, সেটিই এক মাসের বেশি পুরনো। গত ২৩ জানুয়ারি পুরসভার ক্রীড়া বিভাগের পরিচালনায় ‘সুভাষ উৎসব’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের পরেও যে সেটি খুলতে পুর কর্তৃপক্ষ তৎপর হয়েছেন, এমন কোনও খবর নেই। বস্তুত, পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডেই এক চিত্র। ভিআইপি রোডে লেকটাউন ট্র্যাফিক গার্ড সংলগ্ন রেলিংয়ে এখনও ‘রাজারহাটে ভোজেরহাট’, ‘পাঠ্যপুস্তক প্রদান’ প্রভৃতি হোর্ডিং রয়েছে। নাগেরবাজার উড়ালপুলে এখনও ঝুলছে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা!

দক্ষিণ দমদমের মতোই অবস্থা দমদমে। পুরসভা চত্বরে গত অগস্টে শাসক দলের যে কর্মসূচি হয়ে গিয়েছে, তার ফ্লেক্স মলিন অবস্থায় রয়েছে এখনও। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দমদম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব শেষ হয়ে গেলেও পুরসভার একেবারে সামনে সেই হোর্ডিং সরানো হয়নি।

এ বিষয়ে দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান বলেন, ‘‘অভিযান চালিয়ে ফ্লেক্স-হোর্ডিং অনেক সরানো হয়েছে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে সব খুলে দেব।’’ দমদমের পুরপ্রধান হরীন্দ্র সিংহ বলেন, ‘‘ফ্লেক্স নিয়ে সার্বিক ভাবে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন। নষ্ট হয়ে যাওয়া ফ্লেক্স সরিয়ে ফেলব।’’

ফ্লেক্সের পাশাপাশি পুর এলাকার নোংরা রাস্তাঘাট প্রসঙ্গে বারাসতে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘আসার সময়ে দেখলাম, রেলিংগুলো খুব নোংরা। ১০০ দিনের কাজে তো ধুয়ে দিতে পারো! নিজেদের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে কাজ করতে হবে।’’

ফ্লেক্স নিয়ে আশ্বাস দেওয়ার পরে রেলিংয়ের ধুলো প্রসঙ্গে একে অপরের কোর্টে বল ঠেলছে পুরসভাগুলি। দক্ষিণ দমদমের পুরপ্রধান বলেন, ‘‘রেলিং তো আমাদের নয়! ওটা তো দমদম আর উত্তর দমদমের এলাকা।’’ দমদমের পুরপ্রধানের বক্তব্য, ‘‘রেলিং পরিষ্কার করতে ঠিক আমাদের বলেননি। রেলিং পরিষ্কার প্রধানত পূর্ত দফতরই করে।’’ পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘রেলিংয়ের বেশির ভাগটা উত্তর দমদমের। আমাদের হাতে এ ধরনের কাজ করার মতো কোনও তহবিল নেই। কলকাতা পুরসভা যাতে ১০০ দিনের কাজে এগুলি করে, মুখ্যমন্ত্রী সে কথাই বলতে চেয়েছেন।’’ উত্তর দমদমের পুরপ্রধানের সঙ্গে একাধিক বার যোগাযোগ করা হলেও ফোন ধরেননি। টেক্সট মেসেজেরও জবাব দেননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE