Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

চাঁদার জুলুম, মার খেলেন টোটোচালক

বিভিন্ন কারণে পথ আটকে চাঁদার জুলুম এখন অভিনব ঘটনা নয়। পুজোর মরসুমে সেই অত্যাচার আরও বাড়ে। তা সে দুর্গা, কালী, সরস্বতী যে পুজোই হোক না কেন। ধারাবাহিক এই জুলুম রুখতে পুলিশও যে কার্যত ব্যর্থ, সে প্রমাণও মিলেছে বারবার। ফের সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে চাঁদার জুলুমবাজি ও মারধরের ঘটনার অভিযোগ সামনে এল।

জখম উত্তমবাবু। — নিজস্ব চিত্র

জখম উত্তমবাবু। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলুড় শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ০২:০৭
Share: Save:

বিভিন্ন কারণে পথ আটকে চাঁদার জুলুম এখন অভিনব ঘটনা নয়। পুজোর মরসুমে সেই অত্যাচার আরও বাড়ে। তা সে দুর্গা, কালী, সরস্বতী যে পুজোই হোক না কেন। ধারাবাহিক এই জুলুম রুখতে পুলিশও যে কার্যত ব্যর্থ, সে প্রমাণও মিলেছে বারবার। ফের সরস্বতী পুজোকে কেন্দ্র করে চাঁদার জুলুমবাজি ও মারধরের ঘটনার অভিযোগ সামনে এল।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার বেলুড় এলাকায় সরস্বতী পুজোর চাঁদার জুলুম ঘিরে এক টোটোচালককে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ জানায়, বেলুড় স্টেশন স্ট্যান্ডে টোটো চালান উত্তম সরকার নামে এক যুবক। সন্ধ্যায় যাত্রী নিয়ে তিনি জিটি রোডের দিকে যাচ্ছিলেন। অভিযোগ, তখন বেলুড় ধর্মতলা রোডের ওড়িয়াপাড়ায় তাঁর পথ আটকান স্থানীয় একটি ক্লাবের কিছু সদস্য। তাঁরা সরস্বতী পুজোর জন্য চাঁদা চাইলে উত্তমবাবু দিতে রাজি হননি। ওই যুবকেরা দাবি করেন যেতে হলে চাঁদা দিয়ে তবেই যেতে হবে। উত্তমবাবুর অভিযোগ, বিষয়টি জানাতে পরিচিত এক জনকে ফোন করতেই আরও খেপে ওঠে চাঁদা আদায়কারীরা। তিনি বলেন, ‘‘আমি ওদের বলেছিলাম এখন তাড়া রয়েছে, ছেড়ে দাও। চাঁদার জন্য এমন করে রাস্তা আটকাতে পার না। এর পরেই ওই ছেলেগুলি আমাকে মাটিতে ফেলে মারতে শুরু করে।’’ তাঁর মাথায়, হাতে, পেটে মারা হয় বলেও অভিযোগ। এর মধ্যেই খবর পেয়ে হাজির হয়ে যান অন্য কয়েক জন টোটো চালক। অভিযোগ, তাঁদের উপরেও চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে চাঁদা আদায়কারীরা। কিন্তু বেলুড় স্টেশন স্ট্যান্ড থেকে সমস্ত টোটো চালকেরা আসতেই রণে ভঙ্গ দিয়ে পালায় ওই যুবকেরা।

পুলিশ সূত্রের খবর, উত্তমবাবুকে বেলুড় স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বাঁ হাতে গুরুতর চোট লেগেছে। মাথাতেও চোট আছে।

বেলুড় স্টেশন টোটো স্ট্যান্ডের সম্পাদক মানস দে জানান, এ দিন সকালে তাঁরা বিনামূল্যে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরিষেবা দিচ্ছিলেন। তখনও ওড়িয়াপাড়ায় চাঁদা নেওয়ার জন্য টোটোর পথ আটকানো হয়। টোটো প্রতি ১০ টাকা করে চাঁদা দাবি করা হয়। মানসবাবু বলেন, ‘‘ওঁদের বলি, পরীক্ষার্থীদের নিয়ে যাচ্ছি, পথ আটকাবেন না। চাঁদা নিতে হলে স্ট্যান্ডে যোগাযোগ করুন।’’

খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছয় বালি থানার পুলিশ। পাশাপাশি হাজির হন বালির ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর প্রা‌ণকৃষ্ণ মজুমদার ও ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বলরাম ভট্টাচার্য। পরে প্রা‌ণকৃষ্ণবাবু বলেন, ‘‘পুজোর নামে কোনও জোর-জুলুম বরদাস্ত করা হবে না। যে বা যারাই এ কাজ করে থাকুক না কেন কাউকেই রেয়াত করা হবে না। পুলিশকেও বলেছি ব্যবস্থা নিতে।’’ পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনায় দু’জনকে আটক করা হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের খোঁজ চলছে। ওই ক্লাবটির পুজো বন্ধ করার বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE