ঘণ্টা আটেক নিখোঁজ থাকার পর সন্ধান মিলল বছর বারোর দেবাঞ্জন সরকারের। সোমবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল সে। সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ চিংড়িঘাটা থেকে তাকে খুঁজে পান ট্রাফিক কর্মীরা।
পুলিশ জানায়, সোমবার সকালে সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও স্কুল থেকে বাড়ি ফেরেনি দেবাঞ্জন। অথচ একই স্কুল ও পুলকারের অন্য এক পড়ুয়া পাশের বাড়িতে এসে পৌঁছেছে ঠিক সময়েই। দুশ্চিন্তায় খোঁজাখুঁজি শুরু করেন দেবাঞ্জনের মা, কালিকাপুরের পূর্বাচল রোডের বাসিন্দা রঞ্জনা সরকার। আশপাশে না পেয়ে গরফা থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়।
ইতিমধ্যে জানা যায়, নির্দিষ্ট সময়ে স্কুল থেকে পুলকারে করে এসে বাড়ির সামনে নেমে কাছেই দাদুর বাড়িতে গিয়েছিল দেবাঞ্জন। তার দাদু জানান, সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাঁর বাড়িতে এসে ব্যাগ রেখে, জুতো খুলে চটি পরে সে। দিদার কাছে আবদার করে, ‘‘আইসক্রিম খাব, ২০ টাকা দাও।’’ দিদা টাকাও দেন। বলেন সাবধানে বাড়ি যেতে। স্কুলের পোশাকেই চলে যায় সে।
কিন্তু এর পরে আর খোঁজ মেলেনি তার। সারা দিন দুশ্চিন্তার প্রহর গোনার পর সন্ধে আটটা নাগাদ থানা থেকে খবর আসে, বেলেঘাটার ট্র্যাফিক গার্ডের দফতরে রয়েছে দেবাঞ্জন। বেলেঘাটা ট্রাফিক গার্ডের ওসি পঙ্কজ ঘটক জানিয়েছেন, সন্ধে সাড়ে সাতটা নাগাদ চিংড়িঘাটা এলাকায় স্কুলের পোশাক পরা এক বালককে ঘোরাঘুরি করতে দেখে সন্দেহ হয় কর্তব্যরত সার্জেনের। তিনি কথা বলে জানেন, পূর্বাচলে বাড়ি তার। দেবাঞ্জন তাঁকে জানায়, সে ঘুরতে ঘুরতে চলে এসেছে।
তাকে নিজের মোটরবাইকে করে সল্টলেকের পূর্বাচলে নিয়ে যান ওই সার্জেন। সেখানে পৌঁছে দেবাঞ্জন জানায়, এখানে তার বাড়ি নয়। কালিকাপুরের কাছে, অন্য পূর্বাচলে থাকে সে। তখনই বেলেঘাটার ট্রাফিক গার্ডের দফতরে নিয়ে আসা হয় দেবাঞ্জনকে। অফিসাররা খাওয়ান তাকে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তার মা-বাবার নাম ও ঠিকানা জানা যায়। ফোন নম্বর অবশ্য বলতে পারেনি সে।
ঠিকানা অনুযায়ী স্থানীয় থানায় ফোন করতেই নিখোঁজ ডায়েরির কথা জানতে পারেন ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তারা। জানান, তাঁরা পেয়েছেন ছেলেটিকে। এর পরেই দেবাঞ্জনের বাড়িতে খবর যায় এবং তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যান মা-বাবা।
দেবাঞ্জনের বাবা সুব্রত সরকার জানিয়েছেন, ক্রিকেট কোচিং সেন্টারে ভর্তি হওয়া নিয়ে দিন কয়েক ধরেই বায়না করছিল দেবাঞ্জন। মা রাজি হননি। তাই অভিমানে এ দিন স্কুল থেকে বাড়ি ফেরেনি সে। তবে ঘুরতে ঘুরতে যে হারিয়ে যাবে, তা নিজেও বোঝেনি। তবে সময়মতো পুলিশের নজরে না-পড়লে কী হতো, তা ভেবে বেশ ভয়ই পাচ্ছেন সুব্রতবাবু। কলকাতা পুলিশ ও বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তাদের ভূমিকার প্রশংসা করে হেসে বললেন, ‘‘ওঁরাই তো ছেলেকে খুঁজে দিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy