Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

‘অকারণে’ নিগ্রহ, বিপাকে ট্র্যাফিক পুলিশ

ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে কিয়স্কে বসিয়ে তাঁর ছবি মোবাইলে তুলে রাখেন সার্জেন্ট। ডিসি-র কাছে স্নেহাশিসবাবুর নালিশ, তিনি সার্জেন্টকে ছবি তুলতে বারণ করেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩০
Share: Save:

ছিনতাইয়ের মিথ্যা অভিযোগ তুলে শারীরিক নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠল রণবীর দাস নামে কলকাতা পুলিশের এক ট্র্যাফিক সার্জেন্টের বিরুদ্ধে। অভিযোগকারীর নাম স্নেহাশিস ঘোষ। তিনি মহেশতলার বাসিন্দা। গত ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে ওই ঘটনা ঘটে শোভাবাজার মেট্রো স্টেশনের কাছে। তার সাত দিনের মাথায় ৩ জানুয়ারি স্নেহাশিস ওই ঘটনা বিশদে জানিয়ে ডিসি (ট্র্যাফিক) থেকে শুরু করে বড়তলা থানা ও জোড়াবাগান ট্র্যাফিক গার্ডের ওসি-কে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার লালবাজার জানিয়েছে, স্নেহাশিসবাবুর অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

ডিসি (ট্র্যাফিক)-এর কাছে লিখিত অভিযোগে স্নেহাশিস বলেন, ২৭ ডিসেম্বর বিকেলে শোভাবাজার মেট্রো স্টেশন থেকে বেরিয়ে রাস্তায় পড়তেই দুই মহিলা তাঁকে ঘিরে ধরে হাতের বালা ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলে চিৎকার করে লোক জড়ো করেন। তিনি ছিনতাইয়ের অভিযোগ অস্বীকার করলে দুই মহিলা তাঁর জামা ধরে টানাটানি শুরু করে দেন। কাছেই ডিউটি করছিলেন রণবীরবাবু। মহিলাদের চিৎকার শুনে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছেই কোনও কথা না শুনে তাঁকে মারতে মারতে কাছের পুলিশ কিয়স্কে নিয়ে যান বলে স্নেহাশিসবাবু অভিযোগ করেছেন।

ওই ব্যক্তির আরও অভিযোগ, ছিনতাইকারী আখ্যা দিয়ে কিয়স্কে বসিয়ে তাঁর ছবি মোবাইলে তুলে রাখেন সার্জেন্ট। ডিসি-র কাছে স্নেহাশিসবাবুর নালিশ, তিনি সার্জেন্টকে ছবি তুলতে বারণ করেন। বলেছিলেন, তাঁর দোষ প্রমাণিত হয়নি।
কিন্তু সেই আবেদনে সাড়া না দিয়ে ওই রাতেই স্নেহাশিসের ছবি বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেন ওই সার্জেন্ট। স্নেহাশিসবাবুকেও বড়তলা থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তদন্তে নেমে বড়তলা থানার পুলিশ শোভাবাজার মেট্রো স্টেশন এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখে। কিন্তু ছিনতাইয়ের কোনও ছবি মেলেনি। এর পরেই থানা থেকে স্নেহাশিসবাবুকে ছেড়ে দেওয়া হয়। লালবাজারের এক কর্তা জানান, ছিনতাইয়ের অভিযোগ ওঠার পরে সার্জেন্ট অভিযোগকারীকে ধরলেও যে দুই মহিলা তাঁদের বালা ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেছিলেন, তাঁরা বড়তলা থানায় কোনও অভিযোগ দায়ের করেননি। কেন অভিযোগ দায়ের হল না, কেনই বা সার্জেন্ট অভিযোগকারীদের অভিযোগ দায়ের করতে বাধ্য করলেন না, তদন্তে এই বিষয়গুলিও গুরুত্ব পাবে।

এ দিন রাতে রণবীর দাসের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে প্রথমে তিনি বলেন, ‘‘উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানাব।’’ কিছু পরে তাঁর মোবাইলে ফের ফোন করা হলে অন্য এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘স্যার খুব অসুস্থ। তিনি কথা বলতে পারবেন না।’’ এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। এটুকু বলতে পারি অভিযোগ গুরুত্ব দিয়ে খতিয়ে দেখা হবে।’’ তবে পুলিশের একাংশও রণবীরের পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন, অভিযোগ উঠতেই পারে। আগে তা প্রমাণ হোক। এ কথা শুনে স্নেহাশিসবাবু বলেন, ‘‘এটি পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা। লালবাজার ব্যবস্থা না নিলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Traffic Harassment Assault
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE