Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দালাল বন্ধে ‘ট্রলি পার্সন’ পিজি-তে

সরকারি হাসপাতালে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ছবি নয়। রোগী ভর্তি নিয়ে সেখানে দালাল-চক্রের অভিযোগ ওঠে হামেশাই। অধিকাংশ সময়ে কর্তৃপক্ষের নজর এ়ড়িয়ে ওয়ার্ডে পড়ে থাকা ট্রলি ব্যবহার করে দালালেরা।

পাশে: রোগীকে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেবেন এঁরাই। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

পাশে: রোগীকে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেবেন এঁরাই। ছবি: রণজিৎ নন্দী।

তানিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৭ ০২:৪১
Share: Save:

বছর পঁয়ত্রিশের যুবক সিঁড়ি থেকে পড়ে গুরুতর চোট পেয়েছেন পায়ে। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি পর্যন্ত ট্যাক্সি এসেছে। কিন্তু ছেলেকে নামিয়ে ওয়ার্ড পর্যন্ত নিয়ে যাবে কে? হাসপাতালের কোনও কর্মীকেই আশপাশে দেখা যাচ্ছে না। অগত্যা ৬৫ বছরের বৃদ্ধ বাবাই ট্রলি ঠেলে ছেলেকে নিয়ে গেলেন ওয়ার্ডে।

সরকারি হাসপাতালে এটা কোনও বিচ্ছিন্ন ছবি নয়। রোগী ভর্তি নিয়ে সেখানে দালাল-চক্রের অভিযোগ ওঠে হামেশাই। অধিকাংশ সময়ে কর্তৃপক্ষের নজর এ়ড়িয়ে ওয়ার্ডে পড়ে থাকা ট্রলি ব্যবহার করে দালালেরা। ট্রলির বিনিময়ে দাবি করে মোটা টাকা। শুধু তাই নয়, ট্রলি ঠেলার নামে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন ওয়ার্ডে ঢুকে পড়ে অবাঞ্ছিত লোকজনও।

সেই ছবিটাই এ বার বদলাতে চলেছে এসএকেএম হাসপাতালে। বুধবার বাঙুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস (বিআইএন) এবং এসএসকেএমের ইমার্জেন্সি বিভাগকে জুড়ে দেওয়া হল। রোগী পরিষেবা উন্নত করতে সেখানেই জরুরি বিভাগে ট্রলিকর্মীর ব্যবস্থা করেছেন কর্তৃপক্ষ। তাঁদের মূল কাজই হবে রোগীকে ওয়ার্ডে পৌঁছে দেওয়া।

হাসপাতাল সূত্রের খবর, চতুর্থ শ্রেণির চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের মধ্যে থেকে ট্রলিকর্মীদের বেছে নেওয়া হয়েছে। রোগী পিছু অন্তত এক জন ট্রলিকর্মী থাকবেন। জরুরি বিভাগে তাঁর সঙ্গে ঢুকতে পারবেন রোগীর পরিবারের এক জন। রোগীকে ভর্তি করিয়ে ট্রলি নিয়ে বেরিয়ে আসবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি। তাঁরা নীল রঙের জ্যাকেট পরে থাকবেন। সেটির পিছনে লেখা থাকবে ট্রলি নম্বর। ওয়াকিটকিতে ওই ট্রলিকর্মীর সঙ্গে দিনভর যোগাযোগ রাখবেন কর্তৃপক্ষ। দিনের শেষে ওই ট্রলিকর্মী পোশাক, ওয়াকিটকি এবং ট্রলির হিসেব দেবেন।

হাসপাতালের সহকারী সুপার সেবন্তী মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘রোগী বা তাঁর পরিবারকে যাতে হাসপাতালের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত ছুটতে না হয়, তার জন্যই এই ব্যবস্থা।’’

কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন ব্যবস্থায় রোগী পরিষেবা উন্নত হওয়ার পাশাপাশি নিরাপত্তাও জোরদার হবে। এক জন রোগীকে ভর্তি করতে একাধিক ব্যক্তির যাওয়ার দরকার হবে না। ফলে অবাঞ্ছিত ব্যক্তি ঘোরাফেরা করতে পারবেন না। রোগীকে ভর্তি করে সংশ্লিষ্ট ট্রলিকর্মী যদি ট্রলি নিয়ে বেরিয়ে যান, ওয়ার্ডে তা পড়ে থাকবে না। ট্রলির হিসেব থাকলে দালাল-চক্রও দুর্বল হবে। সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘রোগী পরিষেবা আরও স্বচ্ছ করতেই ইমার্জেন্সিকে সাজানো হয়েছে। আশা করছি, নতুন এই প্রচেষ্টা সফল হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE