Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
ধৃত চার

হুগলি থেকে উদ্ধার কড়েয়ার অপহৃত ২ শিশু

অপহরণকারীদের আগেই চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। কিন্তু কড়েয়া থেকে অপহৃত হওয়া দুই শিশুর নিরাপত্তার খাতিরে তল্লাশি অভিযান শুরু করেনি তারা।

উদ্ধার হওয়া সেই দুই শিশু। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার হওয়া সেই দুই শিশু। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৬ ০১:১৭
Share: Save:

অপহরণকারীদের আগেই চিহ্নিত করেছিল পুলিশ। কিন্তু কড়েয়া থেকে অপহৃত হওয়া দুই শিশুর নিরাপত্তার খাতিরে তল্লাশি অভিযান শুরু করেনি তারা। দুই শিশুকে উদ্ধার এবং অপহরণকারীদের পাকড়াও করার পরে সোমবার এমনটাই দাবি

করছে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ধৃতেরা হল সোনুকুমার ওঝা ওরফে সৌরভ ও সাহিদ আখতার খান ওরফে মহম্মদ আকবর খান নামে দুই যুবক এবং সাবির খাতুন ওরফে খুশবু নামে এক মহিলা। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তাদের তিনটি মোবাইলও। এই ঘটনায় অবশ্য অপহৃত শিশুদের আত্মীয় মেহরাজউদ্দিনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। খুশবু-ই এই চক্রের মাথা বলে দাবি পুলিশের।

পুলিশের দাবি, মেহরাজকে জেরা করেই অপহরণকারীদের পরিচয় জানা গিয়েছিল। মুক্তিপণের ফোনের সূত্রে শ্রীরামপুরে তাদের ডেরাও চিহ্নিত করেন তদন্তকারীরা। কিন্তু বিপদ বুঝে দুষ্কৃতীরা শিশু দু’টির ক্ষতি করে ফেলবে, এই আশঙ্কায় আগেভাগে হানা দেননি তাঁরা। গোয়েন্দাদের একটি সূত্র জানাচ্ছে, পুলিশ যে ঘিরে ফেলেছে, বুঝে গিয়েছিল অপহরণকারীরা। তাই নিজেরা বাঁচতে শিশু দু’টিকে রেহাই দেয় তারা। কিন্তু তাতেও শেষরক্ষা হয়নি।

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার বিকেলে কড়েয়ার রাধাগোবিন্দ শাহ লেনে বাড়ির সামনে খেলছিল পাঁচ বছরের উবেদ আলি ও তার ছ’বছরের মামাতো দিদি সৈয়দ রুকসার। সে সময়ে তালতলার বাসিন্দা মেহরাজ এন্টালিতে মেলা দেখাতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে শিশু দু’টিকে একটি বাসে তোলে। এন্টালির রামলীলা ময়দানে পৌঁছে সে একটি ট্যাক্সিতে চাপে। এর পরে হাওড়া স্টেশনে গিয়ে খুশবুর এক শাগরেদের হাতে উবেদ ও রুকসারকে তুলে দিয়ে কড়েয়ায় ফিরে আসে সে। শিশু দু’টির সঙ্গেই মেহরাজের উধাও হওয়া ও কিছুক্ষণ পরে তার ফিরে আসার ঘটনায় শুক্রবার রাতেই সন্দেহ হয়েছিল পুলিশের। গ্রেফতার করে জেরা শুরু করতেই ভেঙে পড়ে মেহরাজ এবং দোষ কবুল করে। পুলিশি জেরায় তার দাবি, টাকার লোভ দেখিয়ে খুশবু তাকে কাউকে অপহরণ করতে বলেছিল। আর সহজ শিকার হওয়ায় নিজের আত্মীয়ের সন্তানদেরই পাচার করেছিল সে।

পুলিশ জানায়, প্রথমে ৩ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়েছিল। তদন্তকারীদের পরামর্শে শিশুদের পরিজনেরা দরাদরি করে ১ লক্ষ টাকায় রফা করে। শনিবার রাতে অপহরণকারীদের ফোন পেয়ে টাকা নিয়ে হাওড়া স্টেশনে গিয়েছিল উবেদ ও রুকসারের পরিবার। আশপাশে ঘাপটি মেরে ছিল পুলিশ। কিন্তু সারা রাতেও অপহরণকারীরা আসেনি। পরের দিন সকালে ফের ফোন করে হাওড়া স্টেশনে যেতে বলে দুষ্কৃতীরা। অপহৃতদের পরিবার গেলেও অপহরণকারীরা আসেনি। উল্টে কিছুক্ষণ পরে ফোন করে জানায়, শিশু দু’টিকে কোন্নগর স্টেশনে বসিয়ে রাখা হয়েছে। সেই মতো জিআরপিকে ফোন করে শিশু দু’টিকে উদ্ধার
করা হয়।

পুলিশের এক কর্তা জানান, আগে থেকেই শ্রীরামপুর থানার সঙ্গে যোগাযোগ করে খটির বাজারে অপহরণকারীদের ডেরার উপরে নজর রাখা হচ্ছিল। শিশু দু’টি উদ্ধার হওয়ার পরেই কড়েয়া ও শ্রীরামপুর থানার যৌথ দল সেখানে হানা দিয়ে অপরাধীদের পাকড়াও করে। পুলিশের দাবি, এই চক্রটি আগেও কোনও অপহরণ করেছে কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

two child kidnapped rescued
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE