Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

মাছের পদে উদ্যাপন দুই উৎসবের

এর আগে পুজো, বড়দিন, পয়লা বৈশাখ থেকে জামাইষষ্ঠী অবধি বঙ্গজীবনের অঙ্গ হয়ে উঠতে পেশাদার রেস্তোরাঁর কায়দায় মাঠে নেমেছিল নিগম। রথ ও ইদকে ঘিরেই নয়া পরিকল্পনা। আজ, রবিবার রথযাত্রা। ইদ পড়ছে সম্ভবত সোমবার। এই দু’টি দিনকে মাথায় রেখে নলবনের ফুডপার্কে নিগমের রেস্তোরাঁয় শনিবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষ মেছো পার্বণ। চলবে উল্টোরথ পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ০২:৩৭
Share: Save:

রথে পাঁপড়ভাজা, আর ইদে শুধু সিমুই খেতে হবে, কে বলেছে? পর পর দু’দিন বাঙালির এই দুই প্রিয় উৎসবে মাছ থাকবে না, তা-ও কি হয়?

এটা মাথায় রেখেই এগিয়ে আসছে রাজ্য মৎস্য উন্নয়ন নিগম। রাজ্যে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধি বা নানা কিসিমের মেছো রান্নার প্রসারের কাজ চলছে অনেক দিনই! নলবনের ফুডপার্কে মাছের রেস্তোরাঁ-পানশালা-ফাস্টফুড কাউন্টার— চলছে রমরমিয়ে। মাছ অন্তপ্রাণ বাঙালিয়ানার পরিকল্পনামাফিক ব্র্যান্ডিংও এ বার লক্ষ্য নিগমের। আর সেই সূত্র ধরেই নানা ছক-ভাঙা মেছো পার্বণের ভাবনা।

এর আগে পুজো, বড়দিন, পয়লা বৈশাখ থেকে জামাইষষ্ঠী অবধি বঙ্গজীবনের অঙ্গ হয়ে উঠতে পেশাদার রেস্তোরাঁর কায়দায় মাঠে নেমেছিল নিগম। রথ ও ইদকে ঘিরেই নয়া পরিকল্পনা। আজ, রবিবার রথযাত্রা। ইদ পড়ছে সম্ভবত সোমবার। এই দু’টি দিনকে মাথায় রেখে নলবনের ফুডপার্কে নিগমের রেস্তোরাঁয় শনিবার থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে বিশেষ মেছো পার্বণ। চলবে উল্টোরথ পর্যন্ত।

রথযাত্রার মেনু বলতে জগন্নাথদেবের চারণভূমি ওড়িশার বিশেষ মেছো থালি। জগন্নাথের ভোগে আমিষস্পর্শ না-হলেও মন্দিরে দেবী বিমলাকে আমিষ উৎসর্গ করার রীতি চালু রয়েছে। তবে বাঙালি বা ওড়িয়া— দুই পড়শি রাজ্যই মাছের পোকা। অত এব বাঙালির উৎসবে মাছ ব্রাত্য কেন হবে? এই ভাবনা থেকেই নিগম রেখেছে, উৎকলীয় পোলাও, ‘মিঠা ভাতের’ সঙ্গে মাছ মুণ্ড ডালি, মাছা পাতুরি, সরিষো মাছো ঝোড়ো, চিংড়ি ঝোড়ো মাছ—প্রমুখ পদের সমারোহ। আবার ইদ উপলক্ষে মাংসের বিরিয়ানির বদলে ফিশ জরদা রাইস, রকমারি মেছো কবাব, ফিশ চাঁপ ইত্যাদির অভিজাত নবাবি থালি। এ ছাড়া, শেষ পাতে জিলিপি, পাঁপড় থেকে ফিরনি, সিমুইয়েরও অভাব নেই।

আমজনতার কথা ভেবে দাম ধরাছোঁয়ার মধ্যেই রাখা হয়েছে। তবে নিগম-কর্তাদের আশা, বছরভর বিভিন্ন উৎসবের বিশেষ মেনুর একটা বাড়তি আকর্ষণ আছে। এই চাহিদার হাত ধরে নিগমের লক্ষ্মীলাভের সম্ভাবনা ভালই। নিগম-কর্তাদের হিসেব, মাছের বিভিন্ন পদ থেকে ২০১১-তে তাদের আয় ১৫ লক্ষের বেশি উঠতে পারেনি। এ বছর সেটা সাড়ে তিন কোটি ছুঁই ছুঁই। আগামী বছরে সা়ড়ে চার কোটি লাভের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগোচ্ছে নিগম। এটা মাথায় রেখেই বাঙালির বিভিন্ন উৎসবে তারা জোর দিচ্ছে গত বছর থেকে।

তবে রাজ্যের মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহের কথায়, ‘‘শুধু ব্যবসায়িক সাফল্য নয়, মাছকে ঘিরে নানা উৎসবে বাঙালির গর্বের দিকটি তুলে ধরাও সরকারি কাজ। মাছের মতো বাঙালি সত্তার বিজ্ঞাপন, ক’টাই বা আছে?’’

আর নিগমের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৌম্যজিৎ দাস বলছিলেন, ‘‘ওড়িয়া পদগুলির জন্য শহরের এক চিকিৎসক, স্মরণিকা ত্রিপাঠীর সাহায্য নিয়েছি। তিনি আদতে ভুবনেশ্বরের মেয়ে। আর ইদের স্পেশ্যাল আইটেম ঠিক করতে কয়েক জন অভিজাত ঘরের সরকারি আমলাই বুদ্ধি বাতলেছেন।’’ তবে সৌম্যজিৎবাবুর কথায়, ‘‘কেউ ইদ পালন করতে রথের মেনু বা রথ উপলক্ষে এসে ইদের মেনু চেখে গেলেন বা মিশিয়ে খেলেন, তা-ও দিব্যি হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE