Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তায় ঝুপড়ি, থমকে রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প

রবীন্দ্র সরোবরের সামনে বরজ রোডে রয়েছে ঝুপড়ি। কিন্তু এই রাস্তার দায়িত্ব কার তা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ফলে ঝুপড়ি উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। তাই ব্যাহত হচ্ছে সরোবরের সৌন্দর্যায়ন। লেক গার্ডেন্স উড়ালপুলের কাছে বরজ রোডের একাংশে গজিয়ে উঠছে ঝুপড়ি দোকান। তাতেই প্রশাসনের কপালে ভাঁজ পড়েছে। সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে চায় কেআইটি কর্তৃপক্ষ এবং পূর্ত দফতর।

রাস্তার দু’ধারে ঝুপড়ি।  ছবি:শুভাশিস ভট্টাচার্য

রাস্তার দু’ধারে ঝুপড়ি। ছবি:শুভাশিস ভট্টাচার্য

কৌশিক ঘোষ
শেষ আপডেট: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০০:০০
Share: Save:

রবীন্দ্র সরোবরের সামনে বরজ রোডে রয়েছে ঝুপড়ি। কিন্তু এই রাস্তার দায়িত্ব কার তা নিয়ে সমস্যা রয়েছে। ফলে ঝুপড়ি উচ্ছেদ করা যাচ্ছে না। তাই ব্যাহত হচ্ছে সরোবরের সৌন্দর্যায়ন।

লেক গার্ডেন্স উড়ালপুলের কাছে বরজ রোডের একাংশে গজিয়ে উঠছে ঝুপড়ি দোকান। তাতেই প্রশাসনের কপালে ভাঁজ পড়েছে। সমস্যা দ্রুত সমাধানের জন্য আলোচনায় বসতে চায় কেআইটি কর্তৃপক্ষ এবং পূর্ত দফতর। রাজ্যের পুর এবং নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “রবীন্দ্র সরোবরে ঢোকার মুখের রাস্তায় ঝুপড়ি তৈরি হওয়ায় রবীন্দ্র সরোবরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্প অনেকটাই ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু এই রাস্তাটা পূর্ত দফতরের। পূর্ত দফতর বা কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার মধ্যে যে কোনও একটি সংস্থাকে এই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করা ছাড়াও পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব নিতে হবে। নগরোন্নয়ন দফতর এবং পূর্ত দফতর আলোচনা করে ব্যবস্থা নেব।”

পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবর স্টেডিয়ামের সামনে সাদার্ন অ্যাভিনিউ থেকে লেক গার্ডেন্স তিন নম্বর গেটের মুখ পর্যন্ত রাস্তাটি পূর্ত দফতরের অধীন। নিয়মানুযায়ী, শহরের যে রাস্তা যে সংস্থার অধীন সেই সংস্থাই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণ করবে। পূর্ত দফতরের দাবি, এই রাস্তা তারাই দেখাশোনা করে। কয়েক দিন আগেও এই রাস্তায় অল্প বৃষ্টিতে জল জমে যেত। পূর্ত দফতরই তা মেরামত করেছে। এ ছাড়াও রাস্তাটিতে পূর্ত দফতর পিচ করেছে বলেও তাঁদের দাবি। তবে ঝুপড়ি বা দোকান উচ্ছেদের ব্যাপারে পূর্ত দফতরের কিছু করার নেই বলেও পূর্ত দফতর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এই ব্যাপারে কলকাতা পুরসভা বা কলকাতা উন্নয়ন সংস্থা ব্যবস্থা নিতে পারে বলে তাঁদের বক্তব্য।

অন্য দিকে, কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার বক্তব্য, এই রাস্তা হস্তান্তর না করলে রাস্তার কোনও কাজ করা তাঁদের সম্ভব নয়। কলকাতা পুরসভার পক্ষ থেকেও একই কথা জানানো হয়েছে। লেক গার্ডেন্স রেলওয়ে স্টেশনে পেরিয়ে তিন নম্বর রেল গেট পেরোলেই যে রাস্তা পড়ে তা দিয়ে সরাসরি ঢোকা যায় রবীন্দ্র সরোবরের দু’দিকের দু’টি উদ্যানেই। এই রাস্তার দু’দিকের ফুটপাথ বরাবর গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়ি এবং খাবারের দোকান।

রবীন্দ্র সরোবরে নতুন রং করা রেলিংয়ের এক পাশে ডাঁই করা থাকছে আবর্জনা। অভিযোগ, অনেক সময়ে এই ঝুপড়ির বাসিন্দারা সরোবরের জলেও আবর্জনা ফেলেন। ফলে, রবীন্দ্র সরোবরের খোল নোলচে পাল্টালেও এই অংশের গেটের মুখে এ ধরনের অবস্থা থাকায় সৌন্দর্যায়নে ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। কলকাতা উন্নয়ন সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সরোবরে প্রবেশের জন্য অনেকগুলি গেট আছে। তিন নম্বর রেল গেটের কাছের গেটটি অন্যতম। এইখানেই মূলত তৈরি হয়েছে সমস্যা। এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ ইতিমধ্যেই কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার কাছে এ বিষয়ে অভিযোগও করেছেন।

কলকাতা উন্নয়ন সংস্থার এক আধিকারিক জানান, রবীন্দ্র সরোবর এবং তার আশপাশের কয়েকটি রাস্তা কেএমডিএ-র অধীনস্থ কেআইটি-র হলেও এই রাস্তার ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম রয়েছে। এই রাস্তাটিও কেআইটির ছিল। ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি লেক গার্ডেন্স উড়ালপুল তৈরি করার সময়ে রাজ্যের পূর্ত দফতর এই রাস্তাটি কেআইটি-র কাছ থেকে অধিগ্রহণ করে। তার পর থেকেই তারাই রাস্তাটি রক্ষণাবেক্ষণ করে। কেআইটি কর্তৃপক্ষের দাবি, উড়ালপুল তৈরির পরে দু’একবার এই রাস্তা হস্তান্তরের বিষয়ে পূর্ত দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছিল। কিন্তু এখনও তা বাস্তবায়িত হয়নি।

রবীন্দ্র সরোবর হাইকোর্ট মনিটরিং কমিটির সদস্যা সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সম্প্রতি, রবীন্দ্র সরোবরের সব ক’টি গেটের সামনে থেকে অন্তত ৩০ গজ দূরে ঝুপড়ি সরিয়ে ফেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আর্জি জানিয়েছি। এমনকী, রবীন্দ্র সরোবরের মধ্যে যাতে কোনও হকার না ঢুকতে পারে সেই ব্যাপারেও আবেদন জানানো হয়েছে।” কেআইটি-র এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি যাতে দ্রুত বাস্তবায়িত করা যায় সেই ব্যাপারে চেষ্টা চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kaushik ghosh rabindra sarobar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE