দুর্ঘটনাগ্রস্ত সেই লরি। ছবি: সুব্রত জানা।
একটি গাড়িকে পাশ কাটাতে গিয়ে ইট বোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নয়ানজুলিতে পড়ে যাওয়ায় ইট চাপা পড়ে মৃত্যু হল চালক এবং চার খালাসির। জখম হন দু’জন। সোমবার রাতে দুর্ঘটনাটি ঘটে শ্যামপুরের কানপুরে। পুলিশ জানায়, মৃতেরা হলেন শেখ আজিজুল (২৯), শেখ আবিদ (৩৮), সমীর দলুই (৩৫), গণেশচন্দ্র পাল (২৫) এবং রবীন্দ্রনাথ বীর (৪৫)। সকলেরই বাড়ি শ্যামপুরে। আজিজুল এবং আবিদ পলতাবেড়িয়ার, সমীর রামনগরের, গণেশ রাধাপুরের এবং রবীন্দ্রনাথ অনন্তপুরের বাসিন্দা ছিলেন।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই লরিটি দুর্ঘটনায় পড়ে। গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অনন্তপুরের ফ্ল্যাই-অ্যাশের ইট তৈরির একটি কারখানা থেকে সোমবার রাত সাতটা নাগাদ ইট বোঝাই করে লরিটি বাগনান-শ্যামপুর রোড ধরে কলকাতার দিকে রওনা দেয়। চালাচ্ছিলেন গণেশ। বাকিরাও কেবিনেই ছিলেন। পথে বেলপুকুরে সকলে খাওয়া-দাওয়া করেন। রাত ১০টা নাগাদ উল্টো দিক থেকে আসা গাড়িটিকে কাটাতে গিয়ে লরিটি কানপুরের কাছে রাস্তার বাঁ দিকের একটি শুকিয়ে যাওয়া নয়ানজুলিতে পড়ে যায়। লরি ভর্তি ইট কেবিনের দেওয়াল ভেঙে সামনে চলে আসে। তার নীচেই চাপা পড়ে যান সাত জন। তাঁদের মধ্যে বাপি দলুই নামে এক খালাসি কোনও মতে গেট খুলে বেরিয়ে আসতে সক্ষম হন। দুর্ঘটনার শব্দে আশপাশের লোকজন চলে আসেন। তাঁরাই প্রাথমিক ভাবে উদ্ধার কাজ শুরু করেন। খবর পেয়ে আসে পুলিশও। মাটি কাটার যন্ত্র দিয়ে ইট সরিয়ে ছ’জনকে উদ্ধার করা হয়। তাঁদের মুগকল্যাণ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিত্সকেরা পাঁচ জনকে মৃত ঘোষণা করেন। জখম গুরুতর হওয়ায় সোমনাথ দলুই নামে এক খালাসিকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করানো হয়। পুলিশ দেহগুলি ময়না-তদন্তে পাঠায়।
মঙ্গলবার উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ভিড় করেন হতাহতদের আত্মীয়েরা। মৃত সমীরের শ্যালক চিন্ময় দলুই বলেন, “সোমবার রাত দেড়টা নাগাদ দুর্ঘটনার খবর পাই। জামাইবাবুর তিন ছেলেমেয়ে। তাঁর একার উপার্জনেই সংসার চলত। এ বার কী হবে জানি না।” ইট কারখানার ম্যানেজার অমলেশ চাউলিয়া বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ওই সাত জনের পরিবারকে সাহায্যের জন্য চিন্তাভাবনা চলছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy