Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পড়তে গিয়ে নিখোঁজ ছাত্রী, মুক্তিপণ চেয়ে ফোন

গৃহশিক্ষিকার কাছ থেকে পড়ে ফেরার পথে নিখোঁজ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। তাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে বাড়ির লোকের কাছে চাওয়া হয়েছে মুক্তিপণ। প্রথমবার তিন লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় বার ৩০ লক্ষ এবং বাড়ির লোক অত টাকা দিতে পারবেন না বলায় রফা হয় ১০ লক্ষে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হুগলির বলাগড়ের ওই ছাত্রীর সন্ধান এখনও মেলেনি। তবে তার চটিজোড়া এবং সাইকেল উদ্ধার হয়েছে।

উদ্বিগ্ন অন্বেষার পরিবার। ইনসেটে অন্বেষা মণ্ডল।  নিজস্ব চিত্র

উদ্বিগ্ন অন্বেষার পরিবার। ইনসেটে অন্বেষা মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদাতা
বলাগড় শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

গৃহশিক্ষিকার কাছ থেকে পড়ে ফেরার পথে নিখোঁজ ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। তাকে অপহরণ করা হয়েছে দাবি করে বাড়ির লোকের কাছে চাওয়া হয়েছে মুক্তিপণ। প্রথমবার তিন লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় বার ৩০ লক্ষ এবং বাড়ির লোক অত টাকা দিতে পারবেন না বলায় রফা হয় ১০ লক্ষে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ হুগলির বলাগড়ের ওই ছাত্রীর সন্ধান এখনও মেলেনি। তবে তার চটিজোড়া এবং সাইকেল উদ্ধার হয়েছে।

অন্বেষা মণ্ডল নামে বছর এগারোর ওই ছাত্রীর বাড়ি বলাগড় থানার গোপালপুরে। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টা নাগাদ সে জিরাট স্মৃতিমন্দিরের কাছে গৃহশিক্ষিকার বাড়িতে পড়তে গিয়েছিল। বাড়ি থেকে দূরত্ব বেশি না হওয়ায় সাইকেল নিয়ে মেয়েটি অনেক সময়ে একাই সেখানে যেত-আসত। কখনও তার বাবা চিন্ময় মণ্ডল ফেরার পথে তাকে নিয়ে আসতেন।

ফুলগাছের নার্সারি রয়েছে চিন্ময়বাবুর। তিনি বলেন, “শুক্রবার আমার ওকে আনতে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কাজ সেরে যেতে দেরি হয়ে গিয়েছিল। ভেবেছিলাম, রাস্তায় দেখা হয়ে যাবে। কিন্তু তা না হওয়ায় সরাসরি গৃহশিক্ষিকার বাড়ি যাই। ঘড়িতে তখন প্রায় পৌনে ৯টা। কিন্তু তিনি জানান, আধ ঘণ্টা আগে অন্বেষা বেরিয়ে গিয়েছে। বাড়ি ফিরে দেখি, মেয়ে ফেরেনি।”

পুলিশ সূত্রের খবর, চিন্ময়বাবু রাত ৯টা নাগাদ মেয়ের কাছে থাকা মোবাইলে ফোন করলে অন্বেষাই প্রথমে তা ধরে। কিন্তু সে আর কিছু বলার আগেই ফোন কেড়ে নিয়ে এক পুরুষকণ্ঠ চিন্ময়বাবুকে বলে, ‘তিন লক্ষ টাকা দিলে মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হবে’। এর পরেই ফোন কেটে যায়। ফের তিনি চেষ্টা করলে দেখা যায়, ফোন বন্ধ। সঙ্গে সঙ্গে তিনি বলাগড় থানায় গিয়ে সমস্ত ঘটনা জানিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। শুক্রবার রাত থেকেই মেয়েটির খোঁজ শুরু করে পুলিশ। অন্বেষার মা প্রমিতাদেবী বলেন, “আমাদের কোনও শত্রু নেই। এমন কিছু পয়সাও নেই। কেন এমন করা হল, বুঝতে পারছি না।”

শনিবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা জিরাট স্মৃতিমন্দিরের কাছে রাস্তায় অন্বেষার চটিজোড়া দেখতে পান। বেলা ৩টে নাগাদ খবর মেলে স্থানীয় হাটতলা শ্মশানঘাটের কাছে গঙ্গার ধারে অন্বেষার সাইকেল পড়ে রয়েছে। পুলিশ সে সব উদ্ধার করে।

এর পরে বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ অন্বেষার দাদু কালীপদ মণ্ডলের মোবাইলে অচেনা নম্বর থেকে ফোন আসে।

পুরুষকণ্ঠে বলা হয়, ‘তিরিশ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দিতে হবে’। পরিবারের লোকেরা এত টাকা দেওয়া সম্ভব নয় বলায় শেষমেশ ১০ লক্ষ টাকা দিতে বলে ওই পুরুষকণ্ঠ। কোথায় টাকা পাঠাতে হবে, সে নির্দেশ পরে দেওয়া হবে বলেও জানায়। তবে হুমকি দেয়, ‘যে টাকা আনতে যাবে, তাকে পুলিশ ধরলে মেয়েকে আস্ত পাবেন না’। হুগলির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) তথাগত বসু বলেন, “তদন্ত শুরু হয়েছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bolagarh annesha kidnap southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE