Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

পড়ে নতুন ভবন, আইসিডিএস কেন্দ্র চালু না হওয়ায় সমস্যা

দেখতে দেখতে ছ’বছর পার। প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে ডোমজুড়ের দক্ষিণ ঝাঁপরদহ পঞ্চায়েতের খাটোরা-সর্দারপাড়ার আইসিডিএস কেন্দ্রের জন্য নির্মিত ভবনটি এখনও চালুই হল না। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় আইসিডিএসের পরিষেবা চালানো হচ্ছিল একটি ক্লাব থেকে। কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়েছে সেই পরিষেবাও। ফলে, এলাকার কচিকাঁচা এবং গর্ভবতী মহিলারা পুষ্টিকর খাবার এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

পড়ে রয়েছে আইসিডিএস-এর নতুন বাড়ি। ছবি: সুব্রত জানা।

পড়ে রয়েছে আইসিডিএস-এর নতুন বাড়ি। ছবি: সুব্রত জানা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ডোমজুড় শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০২:০৮
Share: Save:

দেখতে দেখতে ছ’বছর পার। প্রায় দেড় লক্ষ টাকা খরচ করে ডোমজুড়ের দক্ষিণ ঝাঁপরদহ পঞ্চায়েতের খাটোরা-সর্দারপাড়ার আইসিডিএস কেন্দ্রের জন্য নির্মিত ভবনটি এখনও চালুই হল না। দীর্ঘদিন ধরে ওই এলাকায় আইসিডিএসের পরিষেবা চালানো হচ্ছিল একটি ক্লাব থেকে। কয়েক বছর আগে বন্ধ হয়েছে সেই পরিষেবাও। ফলে, এলাকার কচিকাঁচা এবং গর্ভবতী মহিলারা পুষ্টিকর খাবার এবং প্রয়োজনীয় পরামর্শ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

গোটা রাজ্যেই বহু আইসিডিএস কেন্দ্র বেহাল। বেশির ভাগ কেন্দ্রেরই নিজস্ব ভবন নেই। হয় সেগুলি কোনও ভাড়াবাড়িতে চলছে, নয়তো ক্লাবে বা গাছতলায়। রাজ্যের আইসিডিএস কেন্দ্রগুলির অবস্থা নিয়ে সম্প্রতি প্রতীচী ট্রাস্টের দ্বিতীয় ‘চাইল্ড রিপোর্ট’ও প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে কেন্দ্রগুলির হাল-হকিকত নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করা হয়েছে।

এই অবস্থায় একটি নতুন ভবন যে ভাবে তৈরি হয়েও পড়ে রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সর্দারপাড়ার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, এত দিনেও নতুন কেন্দ্রে পানীয় জল এবং শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়নি। দেখভালের অভাবে নতুন কেন্দ্রে দখলদারি বাড়ছে। এ জন্য প্রশাসনের অদূরদর্শিতা এবং পরিকল্পনাহীনতাকেই দায়ী করেছেন। তা ছাড়া, নতুন কেন্দ্রটি সর্দারপাড়া থেকে কিছুটা দূরে হওয়ায় কেউ কেউ অসন্তোষও প্রকাশ করেন। ডোমজুড়ের শিশু বিকাশ প্রকল্প আধিকারিক (সিডিপিও) উমা বসু জানিয়েছেন, ওই এলাকায় আইসিডিএস নিয়ে সমস্যার কথা তাঁর জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে প্রায় দেড় লক্ষ টাকায় ডোমজুড় পঞ্চায়েত সমিতি ওই কেন্দ্রের নিজস্ব ভবনটি তৈরি করে। তার আগে বেশ কয়েক বছর ধরে স্থানীয় একটি ক্লাবে ওই কেন্দ্রটি চলছিল। কথা ছিল, সেখান থেকে কেন্দ্রটি নতুন ভবনে সরিয়ে আনা হবে। কিন্তু তা হয়নি। গত বছর বাদে ক্লাবেও ওই পরিষেবা বন্ধ হয়ে যায় কর্মী ও সহায়িকার অভাবে। নতুন ভবনে পানীয় জল এবং এবং শৌচালয় তৈরির কথা ছিল সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের। তা এখনও হয়নি।

সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন দক্ষিণ ঝাঁপড়দহ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান, তৃণমূলের সমীর বর্মন। তাঁর দাবি, “পঞ্চায়েতের আগের বোর্ডই সমস্যা মিটিয়ে কেন্দ্রটি চালু করতে উদ্যোগী হয়নি।” কিন্তু পঞ্চায়েতের বর্তমান বোর্ডও তৈরি হয়েছে দেড় বছর আগে। এই সময়েও ওই পরিকাঠামোর উন্নতি সম্ভব হল না কেন? এ ক্ষেত্রে তাঁরা দ্রুত বিষয়টি নিয়ে ভাববেন বলে জানিয়েছেন সমীরবাবু।

ওই পঞ্চায়েত এলাকার মোট ২০টি আইসিডিএস কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু দূরত্বের কারণে তাঁরা সেই সব কেন্দ্রে সচরাচর যান না বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের মধ্যে অরণ্য সর্দার বলেন, “এখানে ওই কেন্দ্রের নতুন ভবন তৈরির আগে প্রশাসনের কেউ আমাদের সঙ্গে আলোচনা করেননি। নিজেদের ইচ্ছামতো তৈরি করেন। আমাদের বিষয়টি জানালে আশপাশে প্রয়োজনীয় জায়গার ব্যবস্থাও করা যেত।” পম্পা সর্দার নামে আর এক গ্রামবাসী বলেন, “এখানে আগে আইসিডিএস চালু থাকায় এলাকার বহু ছোট ছেলেমেয়ে এবং গর্ভবতীরা যেতেন। এখন তাঁরা কোথাও যেতে পারেন না। সরকারের দেওয়া পুষ্টিকর খাবারও পাচ্ছেন না। আমরা চাই, ওই কেন্দ্রটি দ্রুত চালু করা হোক।”

কর্মী ও সহায়িকা নিয়োগ করে ক্লাব থেকে বন্ধ হয়ে যাওয়া ওই পরিষেবা যে এখনই ফের শুরু করা যাচ্ছে না, সে ইঙ্গিতও মিলেছে জেলা আইসিডিএস কেন্দ্রের নিয়োগ কমিটির সহ-সভাপতি তথা বিধায়ক পুলক রায়ের কথায়। তিনি বলেন, “নিয়োগ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। ফলে, এখন নিয়োগ স্থগিত রয়েছে। আদালতের ছাড়পত্র মিললেই নিয়োগ করে নতুন জায়গায় কেন্দ্রটি চালু করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

domjur icds southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE