আমানতকারীদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগে একটি অর্থলগ্নি সংস্থার মালিক তথা ডিরেক্টরকে গ্রেফতার করল উত্তরপাড়া থানার পুলিশ। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুর থেকে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। ধৃত রাজকৃষ্ণ পলতার বাড়ি কোন্নগরের অরবিন্দ রোডে। বুধবার ধৃতকে শ্রীরামপুর আদালতে তোলা হলে তাঁর পক্ষে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি। বিচারক তাঁকে ৭ দিন পুলিশ হাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
পুলিশ সূত্রে খবর, ‘মাতৃভূমি প্রোজেক্টস ইন্ডিয়া লিমিটেড’ নামে ওই অর্থলগ্নি সংস্থায় আরও দু’জনের সঙ্গে ডিরেক্টর পদে ছিলেন রাজকৃষ্ণ। সংস্থার প্রধান কার্যালয় শ্রীরামপুরের বেল্টিং বাজারের অদূরে জিটি রোডের ধারে। জেলার অন্যত্রও সংস্থার অফিস রয়েছে। অভিযোগ, লোভনীয় সুদের কথা বলে কেয়ক বছর ধরেই সংস্থাটি সাধারণ মানুষের থেকে কোটি-কোটি টাকা তুলছিল। সারদা কাণ্ড সামনে আসার পর থেকেই সংস্থাটি একটু একটু করে ব্যবসা গোটাতে শুরু করে। বাজার থেকে নতুন আমানত সংগ্রহ বন্ধ হয়ে যায়। আমানতকারীরা তাঁদের টাকা ফেরত নিতে সংস্থার দফতরে ভিড় করতে থাকেন। তাঁদের অভিযোগ, টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়েও তা রাখেননি কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে আমানতকারীরা একাধিকবার বিক্ষোভও দেখান সংস্থার কার্যালয়ে। অভিযোগ, কিছু দিন আগে হঠাৎই সংস্থার ঝাঁপ বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। গা-ঢাকা দেন কর্মকর্তারাও। এর ফলে আমানতকারীদের পাশাপাশি এজেন্টরাও বিপাকে পড়েন। লক্ষ-লক্ষ টাকা খুইয়ে আন্দোলনে নামেন উত্তরপাড়া, কোন্নগর, শ্রীরামপুরের কয়েকশো মানুষ।
আমানতকারীদের তরফে শ্রীরামপুরের চাতরার বাসিন্দা সোমা দাস চট্টোপাধ্যায় মাস দু’য়েক আগে উত্তরপাড়া থানায় ওই সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে টাকা তছরূপের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। কিছু দিন আগে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত এক জন গ্রেফতার হন। সূত্র মারফত খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাতে বারুইপুরে হানা দিয়ে রাজকৃষ্ণকে গ্রেফতার করে উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।
রাজকৃষ্ণের গ্রেফতারের খবর পেয়ে এ দিন বহু আমানতকারী শ্রীরামপুর আদালতে গিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখান। পরিস্থিতি আঁচ করে আগে থেকেই আদালত চত্বরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। আদালত চত্বরে বিক্ষোভের মধ্যেই রাজকৃষ্ণ বলেন, “আমি টাকা ফেরত দিয়ে দেব।”
পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পক্ষে বেশ কিছু কাগজপত্র জমা দিয়েছেন অভিযোগকারিনী এবং অন্য আমানতকারীরা। জেলা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে সংস্থার অন্যদেরও গ্রেফতার করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy