—নিজস্ব চিত্র।
গান-বাজনার আসর হোক বা নাটক, সম্মেলন হোক বা আলোচনাচক্র শ্রীরামপুরের রবীন্দ্রভবনে কোনও কিছুর আয়োজন মানেই গলদঘর্ম হতে হয় সকলকে। সিলিং ফ্যানে সমস্যা মেটে না। এ বার সেই কষ্ট দূর হতে চলেছে। এসি বসছে রবীন্দ্রভবনে। খুশি সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তবে, একই সঙ্গে তাঁরা ওই ভবনের পূর্ণাঙ্গ সংস্কারের দাবিও তুলেছে।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বিধায়ক সুদীপ্ত রায়ের এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে রবীন্দ্রভবনে এসি বসানোর জন্য ৯ লক্ষ ৪১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ওই যন্ত্র বসানোর কাজটি করবে পুরসভা। এ জন্য ইতিমধ্যেই টেন্ডার হয়ে গিয়েছে এবং শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায়।
বিধায়ক বলেন, “অনুষ্ঠান দেখতে এসে মানুষকে যাতে ঘেমেনেয়ে যেতে না হয় সে জন্য আপাতত রবীন্দ্রভবনটি বাতানুকূল করা হচ্ছে। সেখানে এ বার সহজেই উঁচু মানের অনুষ্ঠান হতেই পারে। শহরের বাকি দু’টি প্রেক্ষাগৃহেও এসি বসানোর চেষ্টা করব।”
সরকারি উদ্যোগে ষাটের দশকে শ্রীরামপুর আদালতের পাশে ৬০০ আসনের রবীন্দ্রভবনটি গড়ে ওঠে। পুরসভার তত্ত্বাবধানে রয়েছে আরও দু’টি প্রেক্ষাগৃহ টাউন হল এবং নেতাজি ভবন। কিন্তু কোনও প্রেক্ষাগৃহের মান নিয়েই সন্তুষ্ট নন শহরের সাংস্কৃতিক কর্মী বা সাধারণ মানুষ। তবে, আসনসংখ্যা বেশি রবীন্দ্রভবনেই। ভিতরে সিলিং ফ্যান থাকলেও দর্শকাসনে বসে থাকা রীতিমতো কষ্টকর। গলদঘর্ম হয়েই অনুষ্ঠান দেখতে হয়। মঞ্চে অতিথি বা কলাকুশলীরাও একই অবস্থার শিকার হন। এ জন্য শহরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল, প্রেক্ষাগৃহগুলিকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত করা হোক। পুরসভার তরফে রবীন্দ্রভবন এবং টাউন হলে বাতানুকুল যন্ত্র বসানোর প্রস্তাব পাঠানো হয়। সম্প্রতি রবীন্দ্রভবনের প্রস্তাবটি ছাড়পত্র পায়।
সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে যুক্ত লোকজন এই পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছেন। তবে তাঁদের বক্তব্য, পরিকাঠামোর দিক থেকেও আধুনিক করা দরকার রবীন্দ্রভবন-সহ তিনটি প্রেক্ষাগৃহকেই। সাংস্কৃতিক জগতের সঙ্গে যুক্ত মানুষদের অভিযোগ, শব্দ বা আলোর ব্যবহারের ক্ষেত্রে রবীন্দ্রভবন আধুনিক নয়। পূর্ণাঙ্গ সংস্কারেরও প্রয়োজন রয়েছে।
স্কুল-শিক্ষক তথা কবি রামকিশোর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘রবীন্দ্রভবন বাতানুকুল হচ্ছে, এটা সুখবর। নাটক করতে গিয়ে অভিনেতাদের মেক-আপ উঠে যাওয়ার জোগাড় হয়। নামী কোনও শিল্পী বা দল আনতে হলে একশো বার ভাবতে হয়। এ বার সেই সমস্যা মিটবে। তবে, বাকি পরিকাঠামো উন্নতি দরকার।” সাংস্কৃতিক কর্মী হারাধন রক্ষিতের বক্তব্য, ‘‘ভালই হল। এত দিন গলদঘর্ম হওয়ার ভয়ে সকালে বা দুপুরে কার্যত অনুষ্ঠান করা যেত না। এ বার সুবিধা হবে। তবে, ছোট সংস্থার কথা ভেবে পাখা যেন সরিয়ে ফেলা না হয়।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy