Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪

বকেয়া না মেলায় কর্তৃপক্ষকে গ্রেফতারের দাবি

যে সব কারখানা কর্তৃপক্ষ দিনের পর দিন কর্মীদের বকেয়া দিচ্ছেন না, তাঁদের গ্রেফতারের দাবি তুললেন শ্রমিকেরা। কর্তৃপক্ষ আইন-আদালত কিছুই মানছেন না বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চন্দননগর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫ ০২:২১
Share: Save:

যে সব কারখানা কর্তৃপক্ষ দিনের পর দিন কর্মীদের বকেয়া দিচ্ছেন না, তাঁদের গ্রেফতারের দাবি তুললেন শ্রমিকেরা। কর্তৃপক্ষ আইন-আদালত কিছুই মানছেন না বলে শ্রমিকদের অভিযোগ।

শুক্রবার চন্দননগরের মহকুমা শাসককে বন্ধ কল-কারখানার শ্রমিকদের পক্ষ থেকে একটি স্মারকলিপিও দেওয়া হয়। এদিনের শ্রমিকদের ওই সমাবেশে হুগলির ডানলপ, হিন্দমোটর, হাওড়ার কানোরিয়া জুটমিল-সহ রাজ্যের অন্তত ১৫টি মিল এবং বন্ধ কারখানার কয়েকশো শ্রমিকরা হাজির হয়েছিলেনি। হুগলিতে হিন্দমোটর এবং ডানলপের মতো বড় কারখানা কয়েক বছর আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ওই দুই কারাখানা বন্ধের জেরে কয়েকশো শ্রমিক বেকার হয়ে গিয়েছেন। একইভাবে হুগলির রিলাক্সন কারখানা-সহ আরও কিছু কারখানা বন্ধ রয়েছে। আর্থিক সঙ্কটে ওইসব কারখানার কর্মীদের কাছে বেঁচে থাকাই এখন প্রধান সমস্যা।

হুগলির মতো অবস্থা কলকাতা লাগোয়া শিল্পের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ জেলা হাওড়ারও। সেখানেও বহু কারখানা বন্ধ। বহু শ্রমিক বেকার। পাওনাগণ্ডা মিলছে না। এই সমস্যার পাশাপাশি আরও একটি সমস্যা এখন বড় হয়ে ওঠেছে। তা হল রাজ্যের চালু জুটমিলগুলির অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদেরও ন্যায্য বকেয়া মিল কতৃর্পক্ষ দিচ্ছিন না। দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিকদের বকেয়ার দাবিতে লড়াই করছেন বিশিষ্ট আইনজীবী বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘জুটমিল কর্তৃপক্ষ নানা কৌশলে শ্রমিকদের বকেয়া দিচ্ছেন না। শ্রমিকেরা বিচার চাইতে শ্রম দফতর হয়ে আদালতে যাচ্ছেন। আদালতের রায় শ্রমিকদের পক্ষে গেলেও সেই নির্দেশ ওঁরা মানছেন না। তবে নির্দেশ না মানলে প্রশাসনের হাতে কিন্তু আইন আছে। এ বার তা প্রয়োগের সময় এসেছে।’’

হুগলিতে ১৪টি জুটমিল রয়েছে। রাজ্যে ৫৯টি। প্রতিদিন প্রতিটি মিল থেকে শ্রমিকেরা নিয়মমাফিক অবসর নেন। সেইসব শ্রমিকেরা অবসর এবং গ্র্যাচুইটির টাকা পাচ্ছেন না। সমস্যা মেটাতে লোক আদালতের মাধ্যমেও সম্প্রতি চেষ্টা হয়েছিল চন্দননগরে। লোক আদালত শ্রমিক, মালিক সবপক্ষকে নিয়ে দফায় দফায় আলোচনায় বসে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও আশানুরূপ ফল মেলেনি। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মিল কর্তৃপক্ষ অনমনীয় থেকে গিয়েছেন।

শেষ পর্যন্ত শ্রমিকেরা বাধ্য হয়ে আদালতে যাচ্ছেন পাওনা আদায়ে। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও শ্রমিকদের পাওনা দিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে পড়ে এ দিন চন্দননগরে সমাবেশে উপস্থিত শ্রমিকেরা দাবি তুলেছেন, ‘‘সারা জীবন খেটে যখন বকেয়া পাব না, তখন প্রশাসনের কিন্তু কিছু দায় আছে আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে।’’ তাঁদের, ‘‘আইন যখন আছে, তখন তা প্রয়োগে বাধা কোথায়? তাতে হাজার হাজার শ্রমিক উপকৃত হবেন।’’

যদিও এই নিয়ে মিল কতৃর্পক্ষ মুখে কুলুপ এঁটেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE