Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

বেচারামের খাসতালুকে হানা বিজেপির

রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার খাসতালুকে হানা দিয়ে ঘর গোছানো শুরু করল বিজেপি! বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের উপস্থিতিতে রবিবার হরিপালে এক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। সেই দলে এক বহিষ্কৃত এবং নানা ঘটনায় অভিযুক্ত এক তৃণমূল নেতা থাকায় বিতর্কও দেখা দিয়েছে। তবে, বৃষ্টির মধ্যেও সভায় ভিড় হয় ভালই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
হরিপাল শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২৫
Share: Save:

রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী বেচারাম মান্নার খাসতালুকে হানা দিয়ে ঘর গোছানো শুরু করল বিজেপি!

বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের উপস্থিতিতে রবিবার হরিপালে এক সভার আয়োজন করা হয়। সেখানেই বেশ কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। সেই দলে এক বহিষ্কৃত এবং নানা ঘটনায় অভিযুক্ত এক তৃণমূল নেতা থাকায় বিতর্কও দেখা দিয়েছে। তবে, বৃষ্টির মধ্যেও সভায় ভিড় হয় ভালই। বেচারামবাবুরা মুখে সভাকে গুরুত্ব দিতে চাননি। তবে, বিকেলে হরিপালেই পাল্টা সভা করতে হয়েছে তাঁদের। বেচারামবাবুর দাবি, “ভোট এলেই সিঙ্গুর আর হরিপালের মানুষ বিজেপি-কে ভাল করে বুঝিয়ে দেবেন, তাঁরা কোনও দিকে।”

এই সভা এবং দলবদল নিয়ে শনিবার থেকেই জেলা জুড়ে উত্তেজনা ছিল। সভায় যাওয়া নিয়ে শনিবার গোঘাটের তারাহাটে দলীয় বৈঠক চলাকালীন একটি বাড়িতে ঢুকে দম্পতি-সহ বিজেপির আট জন কর্মী-সমর্থককে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। ছোট ডোঙ্গল গ্রামেও এক বিজেপি কর্মী প্রহৃত হন।

সিঙ্গুর লাগোয়া হরিপালেরই বিধায়ক বেচারাম মান্না। সেখানকার চৌতারায় রবিবার সভা করেন রাহুলবাবুরা। ভিড় দেখে খুশি জেলা বিজেপি-র সহ-সভাপতি স্বপন পাল বলেন, “এক সময় ওই সব এলাকায় ৩০ জনকে বের করতেও আমাদের কালঘাম ছুটে যেত। এখন চিত্রটা কেমন বদলে গিয়েছে।”

এ দিন মহীতোষ হালদার-সহ হরিপালের কিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দেন। তবে, পঞ্চায়েত বা পঞ্চায়েত সমিতি স্তরের কোনও তৃণমূল নেতাকে সেই দলে দেখা যায়নি। অবশ্য কিছু অনুগামীকে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন ব্লকের এক সময়ের ডাকাবুকো যুব তৃণমূল সভাপতি, অধুনা বহিষ্কৃত মুজফ্ফর আলি ওরফে মাজা। নানা দলবিরোধী কাজের অভিযোগে বছর দুয়েক আগে মাজাকে বহিষ্কার করে তৃণমূল। রাজনৈতিক হানাহানি ছাড়াও মাজার বিরুদ্ধে কয়েকটি অপরাধমূলক কাজকর্মে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায়। তিনি বর্তমানে জামিনে রয়েছে। তাই এ দিন মুজফ্ফরের বিজেপিতে যোগদান নিয়ে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের কেউ কেউ ‘বিজেপি-দুষ্কৃতী যোগ’-এর অভিযোগও তুলেছেন। শাসক দলের ব্লক স্তরের এক নেতার কথায়, “ওরা হরিপাল ছাড়াও জেলার নানা জায়গা থেকে লোক নিয়ে এসেছিল। মাজাকে দলে নিয়ে ওরা বুঝিয়ে দিল ওদের চরিত্র। মাজার বিরুদ্ধে অনেক মামলা ঝুলছে।”

এ প্রসঙ্গে রাহুলবাবু বলেন, “রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে অনেক সময় উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মামলা করে দেওয়া হয়। তা ছাড়া, উনি তো সবে আমাদের দলে এলেন। সব কিছু দেখে পরে অন্য রকম কিছু হলে ব্যবস্থা নেওয়ার তো সুযোগ রয়েছেই।” মুজফ্ফর অবশ্য কোনও রাখঢাক না করেই এ দিন বলেন, “আমার বিরুদ্ধে ২৯টা মামলা ছিল। রাজ্য সরকার আটটি প্রত্যাহার করেছে। ২১টা চলছে।”

বিজেপির-র সভায় রাহুলবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন পি সি সরকার এবং অভিনেতা নিমু ভৌমিক। সিঙ্গুর লাগোয়া এলাকায় ওই সভায় রাহুলবাবু তৃণমূলের অপশাসনের অভিযোগ তুলে বলেন, “আমাদের লক্ষ্য ২০১৬ সালে তৃণমূলমুক্ত বাংলা। সিঙ্গুরে তৃণমূল আন্দোলন করল। লাভের লাভ কী হল? শিল্প তো হলই না। চাষিও জমি ফেরত পেল না।”

বিকেলে বেচারামবাবুর নেতৃত্বে সভা হয় ডাকবাংলো মাঠে। তবে, এই সভাকে ‘পূর্ব ঘোষণামাফিক’ বলেই দাবি করে তৃণমূল। বেচারামবাবুর দাবি, “বিজেপির পাল্টা সভা আমরা করিনি। সোমবার কলকাতায় আমাদের দলীয় কর্মসূচির সমর্থনেই সভা করা হয়।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE