Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বৃদ্ধাবাসকে টাকা ফেরতের নির্দেশ

অসুস্থতার কারণে এক দম্পতি চুঁচুড়ার একটি বৃদ্ধাবাস ছাড়ার সময়ে সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে জমা রাখা টাকা ফেরত চেয়েও পাননি। দ্বারস্থ হয়েছিলেন জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৪ ০০:২৬
Share: Save:

অসুস্থতার কারণে এক দম্পতি চুঁচুড়ার একটি বৃদ্ধাবাস ছাড়ার সময়ে সেখানকার কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁদের ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে জমা রাখা টাকা ফেরত চেয়েও পাননি। দ্বারস্থ হয়েছিলেন জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের। দিন কয়েক আগে বিচারক শর্মি বসু ওই বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষকে ৪৫ দিনের মধ্যে দম্পতির টাকা ফেরত এবং মামলা চালানোর খরচ বাদেও জরিমানার নির্দেশ দেন। দম্পতির সঙ্গে বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষের চুক্তিটি আইনবিরুদ্ধ বলে রায়ে জানান বিচারক। নারায়ণচন্দ্র কীট এবং কৃষ্ণা কীট নামে ওই দম্পতির আইনজীবী সুশীল পাল বলেন, “বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষ দম্পতির সঙ্গে যে চুক্তিপত্র করেছিলেন তা আইনবিরুদ্ধ। প্রবীণ নাগরিকদের সরকার নানা সুবিধা দিচ্ছে। সেখানে বিনা সুদে ওই দম্পতির জীবনের শেষ সম্বল নিয়ে ওই বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষ তা কী ভাবে ব্যবহার করলেন? তাই বিচারক ওই নির্দেশ দিয়েছেন।”

বৃদ্ধাবাসের পরিচালন সমিতির সদস্য দ্যুতিষ বিশ্বাস বলেন, “ওই দম্পতি স্বেচ্ছায় আমাদের টাকা দেন চুক্তি-মাফিক। নারায়ণবাবু আমাদের কাছে না এসে আদালতে গেলেন। আদালতের রায়ের সাপেক্ষে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত পরিচালন সমিতির পক্ষ থেকে নেওয়া হয়নি।” ওই বৃদ্ধাবাসটি চুঁচুড়ার অ্যাডকোনগর ঈশ্বরবাহায়। সেখানে মোট ১০০ জন আবাসিকের থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। এক দশকেরও বেশি সময় জুড়ে ওই বৃদ্ধাবাসটি চলছে। ২০০৯ সালে নারায়ণবাবুরা সেখানে আশ্রয় নেন। ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে কর্তৃপক্ষ তাঁদের থেকে ২ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা নেন। এ জন্য চুক্তিও হয়।

বেশ কয়েক মাস সেখানে থাকার পর নারায়ণবাবুর স্ত্রী কৃষ্ণার হৃদযন্ত্রে সমস্যা দেখা দেয়। তাঁর পেসমেকার বসে। চিকিত্‌সকের পরামর্শ অনুযায়ী তার পর থেকে সকালে ওই বৃদ্ধা হাঁটতে বেরোতেন। কিন্তু অন্য একটি সমস্যার শুরু হয়। বৃদ্ধাবাসটি যে অঞ্চলে, সেখান দিয়েই গিয়েছে বিদ্যুতের হাইটেনশন তার। বৃ্দ্ধার পেসমেকার লাগানো থাকায় এবং ওই তারের কারণে হাঁটাহাটি স্বাস্থ্যহানিকর বলে জানান চিকিত্‌সক। এই কারণে বৃদ্ধাবাস ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। কিন্তু আশ্রয় নেওয়ার জন্য ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’ হিসেবে জমা রাখা টাকা ফেরত চাইতে যেতেই বিপত্তি বাধে, কর্তৃপক্ষ টাকা দিতে অসম্মত হন বলে তাঁদের অভিযোগ। তার পরেই বৃদ্ধাবাস ছাড়েন দম্পতি। দ্বারস্থ হন ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের। তাঁদের আইনজীবী জানান, ক্ষতিপূরণসহ অন্য বিষয় নিয়ে এক লক্ষ টাকা দিতে হবে ওই বৃদ্ধাবাস কর্তৃপক্ষকে। ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের তহবিলে জমা হবে ৫০ হাজার টাকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal chunsurah gautam bandyopadhyay
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE