Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

বাস নেই, বিপজ্জনক জেনেও ট্রেকারই সম্বল

বাস নেই। তাই ট্রেকারেই বাদুরঝোলা হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোজ যাতায়াত করছেন চলছে হাজার হাজার মানুষ। বাস চালানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের এবং নিত্যযাত্রীদের তরফে প্রশাসনের কাছে বহু আবেদন গেলেও কাজ হয়নি। এমনই অভিযোগ তাঁদের।

রোজ এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

রোজ এ ভাবেই চলে যাতায়াত। ছবি: রমাপ্রসাদ গঙ্গোপাধ্যায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাঁকরাইল শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৪ ০০:৫৬
Share: Save:

বাস নেই। তাই ট্রেকারেই বাদুরঝোলা হয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রোজ যাতায়াত করছেন চলছে হাজার হাজার মানুষ। বাস চালানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের এবং নিত্যযাত্রীদের তরফে প্রশাসনের কাছে বহু আবেদন গেলেও কাজ হয়নি। এমনই অভিযোগ তাঁদের। ফলে বিপজ্জনক ভাবে হয়ে যাতায়াতই ভবিতব্য বলে মেনে নিয়েছেন তাঁরা।

প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়ার সাঁকরাইল রেল স্টেশন থেকে মুন্সিরহাট প্রায় ২৪ কিলোমিটার রাস্তা। কোনও বড় বাস চলে না। বছর পনেরো আগে ৬৯ নম্বর রুটের একটি বাস হাওড়া থেকে সাঁকরাইল রেল স্টেশন হয়ে একবরপুর পর্যন্ত যাতায়াত করত। এক সময় সেটি নানা কারণে বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া কলকাতার রাজাবাজার থেকে ফটিকগাছি রুটে একটি মিনিবাস চলে। কিন্তু সেটিও সাঁকরাইল রেল স্টেশন হয়ে যায় না। বদলে ধুলাগড় হয়ে ফটিকগাছি পর্যন্ত যায়। এর ফলে রেল স্টেশন থেকে কোনও বাসরুট না থাকায় যাত্রীদের একমাত্র ভরসা ট্রেকারই। ট্রেকারই একমাত্র সম্বল হওয়ায় সাঁকরাইল স্টেশনে নামার পরেই বাড়ি ফেরার তাগিদে কে আগে ট্রেকারে উঠবেন তা নিয়ে হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। দুর্ঘটনাও ঘটে। সাঁকরাইল-মুন্সিরহাট রোডের উপর পড়ে গঙ্গাধরপুর বিদ্যামন্দির, গঙ্গাধরপুর গার্লস হাই স্কুল, গঙ্গাধরপুর কলেজ, গঙ্গাধরপুর বি এড কলেজ, নবোদয় বিদ্যালয়, সাঁকরাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ধুলাগড় আদর্শ বিদ্যালয়, দেউলপুর হাই স্কুল, একবরপুর গোবিন্দ পাঁজা হাই স্কুল, সিদ্ধেশ্বর হাই স্কুল, ফটিকগাছি গার্লস হাই স্কুল, গড়বালিয়া গার্লস হাই স্কুল এবং একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও কুলডাঙা বাজার, ধুলাগড় বাজার, সিদ্ধেশ্বর বাজার, ৩-টি পোস্ট অফিস, ৬-টি ব্যাঙ্ক, ৪টি পঞ্চায়েত অফিস। ফলে স্কুল-কলেজের পড়ুয়া ছাড়াও নিত্য কয়েক হাজার যাত্রী এই পথে যাতায়াত করেন। সময়ে গন্তব্যে পৌঁছোনোর জন্য সকলেরই তাড়া থাকে। ফলে বিপজ্জনক জেনেও শিশু কোলে মহিলা থেকে স্কুলপড়ুয়া, অফিসযাত্রী সকলেই কেউ পাদানিতে ঝুলে, কেউ ট্রেকারের মাথায় চড়ে বসেন। এ জন্য দুর্ঘটনা ঘটে। তখন তা নিয়ে হইচইও হয়। ফের প্রয়োজনের তাগিদে একই অবস্থা ফিরে আসে।

পাঁচলার বিধায়ক গুলশন মল্লিক বলেন, “সাঁকরাইল স্টেশন হয়ে একবরপুর পর্যন্ত ৬৯ নম্বর রুটের বাস বহু দিন বন্ধ। যাত্রীদের স্বার্থে সাঁকরাইল স্টেশন হয়ে মুন্সিরহাট পর্যন্ত সিটিসি-র বাস চালানোর ব্যাপারে আমি পরিবহণ মন্ত্রীকে লিখিতভাবে জানিয়েছি।”

পাঁচলা-গঙ্গাধরপুর স্কুল ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সন্তোষ দাস বলেন, “সাঁকরাইল স্টেশন থেকে মুন্সিরহাট পর্যন্ত বাস চলে না। ধুলাগড় হয়ে যে মিনিবাসটি চলে, তাও টানা মুন্সিরহাট পর্যন্ত না আসায় ভোগান্তি হয়। ফলে বিপজ্জনক ভাবে ট্রেকারে চড়েই স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অফিস যাত্রীদের যাতায়াত করতে। গত ২৭ অক্টোবর আমাদের স্কুলের এক ছাত্রী বিদ্যালয়ে অটো থেকে পড়ে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়।” তাঁর অভিযোগ, ৬৯ নম্বর বাস ফের চালু করার জন্য জেলা হাওড়া আরটিও অফিসে বার বার আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু সাড়া মেলেনি।”

পাঁচলা-দেউলপুর গ্রামের সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, “সাঁকরাইল থেকে মুন্সিরহাট পর্যন্ত বাস নেই। ফলে ট্রেকারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে আমাদের। দুর্ঘটনা ঘটললেও প্রশাসনের টনক নড়ে না।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

no bus trecker sankrail southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE