Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সব পঞ্চায়েতেই ব্যাঙ্ক পরিষেবা, তত্‌পর হুগলি জেলা প্রশাসন

হুগলিতে যে সব পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক বা ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেই, সেই সব এলাকায় ব্যাঙ্কের পরিষেবা পৌঁছে দিতে জোর তত্‌পরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলিতে মোট ২০৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪০টি পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত বা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক নেই।

পীযূষ নন্দী
আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৪ ০১:৩২
Share: Save:

হুগলিতে যে সব পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক বা ব্যাঙ্কিং পরিষেবা নেই, সেই সব এলাকায় ব্যাঙ্কের পরিষেবা পৌঁছে দিতে জোর তত্‌পরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলিতে মোট ২০৭টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৪০টি পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত বা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক নেই। ওই ৪০টি পঞ্চয়েতের মধ্যে প্রথম দফায় ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাঙ্কের শাখা খোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ব্যাঙ্কের শাখা খোলা হবে পঞ্চায়েত অফিস চত্বরেই। জেলাশাসক মনমীত নন্দা বলেন, “আগামী ১৪ অগাস্ট নাগাদ ব্যাঙ্কের শাখাগুলি চালু হবে। সেইমত সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা হয়েছে।”

ব্যাঙ্ক পরিষেবার পরিকাঠামো যথাযথ করার জন্য বিডিওদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ফিনান্সিয়াল ইনক্লুশন প্ল্যান’ কর্মসূচি রূপায়ণের লক্ষ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষদের কাছে পঞ্চায়েতেগুলির তালিকা আগেই পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সরেজমিনে পঞ্চায়েতগুলি পরিদর্শনও করে গিয়েছেন। কোন পঞ্চায়েতে কোন ব্যাঙ্কের শাখা হবে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।

প্রথম দফার ১১টি পঞ্চায়েতের মধ্যে আরামবাগের মলয়পুর ২ পঞ্চায়েত ছাড়া সবকটি পঞ্চায়েতেই স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া তাদের শাখা খুলতে রাজি হয়েছে। মলয়পুর ২ পঞ্চায়েতে পশ্চিমবঙ্গ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখা খোলা হবে। যে ব্যাঙ্কহীন পঞ্চায়েতগুলিতে ব্যাঙ্ক হচ্ছে তা হল আরামবাগ ব্লকের ৪টি (মলয়পুর ২, আরান্ডি ১, সালেপুর ১, মায়াপুর ২), পান্ডুয়া ব্লকের ৪টি (বেলুন-ধামাসিন, পাঁচঘড়া-তোরগ্রাম, জামনা, শিখিরা-চাঁপতা), খানাকুল ২ ব্লকের ২টি (রাজহাটি ১ ও নতিবপুর-২) এবং পোলবা-দাদপুর ব্লকের সাটিথান পঞ্চায়েত।

ব্যাঙ্ক পরিষেবা চালু হতে চলার খবরে খুশি সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের বক্তব্য, পঞ্চায়েত এলাকায় কোনও ব্যাঙ্ক না থাকায় দুর্ভোগের শেষ ছিল না। আরান্ডি ১ পঞ্চায়েতের ধামসা গ্রামের দিনমজুর রণেন মালিক বলেন, “১০০ দিনের কাজের মজুরি আনতে যেতে হত বাসে প্রায় ১২ কিমি দূরে আরান্ডি ২ পঞ্চায়েত এলাকার পুরা বাজারের ব্যাঙ্ক থেকে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা নিয়ে গড়িমসি করত ওরা। নিজের পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক হলে আর সেই সমস্যা থাকবে না।” আরামবাগেরই সালেপুর ১ পঞ্চায়েতের মানিকপাট গ্রামের মানিক রায় বলেন, “অন্য পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্কের নানা অসহযোগিতায় মাছ চাষ বা অন্য কিছুতে ঋণ পাওয়া যেত না। এখন পঞ্চায়েত অফিসেই ব্যাঙ্ক হয়ে গেলে সে সব অসুবিধা থাকবে না বলেই আষা করি।”

আরামবাগ, খানাকুল বা পান্ডুয়া ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকারি নানা প্রকল্পের মজুরি এবং অনুদান সরাসরি আসে ব্যাঙ্কে। পঞ্চায়েত চত্বরেই ব্যাঙ্ক হলে মজুরি নিয়ে বিলম্ব বা অন্যান্য সরকারি প্রকল্প রূপায়ণে গতি বাড়বে। ব্যাঙ্কগুলির অসহযোগিতার যে সব অভিযোগ উঠত তা থাকবে না বলেই আশা প্রশাসনের।

নিজেদের পঞ্চায়েত এলাকায় ব্যাঙ্ক হলে পঞ্চায়েত দফতরের টাকা দূরবর্তী কোনও ব্যাঙ্কে পৌঁছোনোর যে সমস্যা থাকত (চুরি-ছিনতাইয়ের ভয়) তা তাকবে না বলে সংশ্লিষ্ট প্রধানদের বক্তব্য। ব্যাঙ্কের শাখা খোলার জন্য সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতকে অন্তত ৪০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা দিতে বলা হয়েছে বছরে ১ টাকার বিনিময়ে। এ ছাড়া দিতে হবে বিদ্যুত্‌, জল থেকে প্রয়োজনীয় সুবিধা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE