Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

সংস্কারের কাজ শেষ হয়নি, পুজোয় ভোগাবে জিটি রোড

পুজো চলে এল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েও জিটি রোড সংস্কারের কাজ শেষ করতে পারল না পূর্ত দফতর। ফলে, ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে নাস্তানাবুদ হওয়া প্রায় অবধারিত। মাস কয়েক আগে হাওড়ার শিবপুর থেকে হুগলির মগরা পর্যন্ত জিটি রোড সংস্কারের কাজে হাত দেয় রাজ্যের পূর্ত দফতর। ডানকুনিতে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে যান, যাতে পুজোর আগে কাজ শেষ হয়ে যায়, সেটা দেখতে। পূর্ত কর্তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তার পরেও দশ দিন অতিক্রান্ত। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু-কিছু অংশে কাজ অনেকখানি হয়ে গেলেও বাকি রয়েছে অনেকটাই।

বেহাল জিটি রোড। চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে। ছবি: তাপস ঘোষ।

বেহাল জিটি রোড। চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগরে। ছবি: তাপস ঘোষ।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০৩:৫২
Share: Save:

পুজো চলে এল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীকে আশ্বাস দিয়েও জিটি রোড সংস্কারের কাজ শেষ করতে পারল না পূর্ত দফতর। ফলে, ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে নাস্তানাবুদ হওয়া প্রায় অবধারিত।

মাস কয়েক আগে হাওড়ার শিবপুর থেকে হুগলির মগরা পর্যন্ত জিটি রোড সংস্কারের কাজে হাত দেয় রাজ্যের পূর্ত দফতর। ডানকুনিতে প্রশাসনিক বৈঠকে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলে যান, যাতে পুজোর আগে কাজ শেষ হয়ে যায়, সেটা দেখতে। পূর্ত কর্তারা আশ্বাস দিয়েছিলেন, ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। তার পরেও দশ দিন অতিক্রান্ত। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু-কিছু অংশে কাজ অনেকখানি হয়ে গেলেও বাকি রয়েছে অনেকটাই।

পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, শুধু উত্তরপাড়া থেকে মগরা পর্যন্ত ৪০ কিলোমিটারের জন্যই ৫৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। হুগলির এক পদস্থ পূর্তকর্তা বলেন,“ভদ্রেশ্বর থেকে মগরা পর্যন্ত রাস্তার কাজ এখনও চলছে। গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে কাজ করা যায়নি।” তা হলে মুখ্যমন্ত্রীর কথা রাখা গেল না? ওই কর্তার দাবি, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, রাস্তাটা অন্তত যান চলাচলের যোগ্য করে দিতে। কাজ শেষের কথা উনি বলেননি। সেই কাজ কিন্তু ইতিমধ্যেই হয়ে গিয়েছে।”

হুগলির ডানকুনি থেকে বর্ধমানে পালশিট পর্যন্ত দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের রক্ষণাবেক্ষণের কাজের ধারাবাহিকতা থাকলেও দুই জাতীয় সড়ক দিল্লি রোড এবং জিটি রোড বিগত কয়েক বছর ধরেই উপেক্ষিত থেকে গিয়েছে। বিষয়টি সরকারের নজরে আসার পরেই শিবপুর থেকে টানা হুগলির মগরা পর্যন্ত জিটি রোডের ৬২টি কিলোমিটার আমূল সংস্কারের কাজে হাত দেওয়া হয়। কাজ শুরু হয় মার্চে।

হাওড়ায় শিবপুর থেকে বালি এবং হুগলিতে উত্তরপাড়া থেকে মগরা কাজের এলাকাকে এই দুই ভাগে ভাগ করে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যেও আবার নানা অংশে ধাপে-ধাপে কাজ হচ্ছে। কাজ শুরুর আগে সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, কিছু নিচু এলাকায় জল জমায় জিটি রোড বারবার ভেঙে যায়। কেননা পিচের আস্তরণ উঠে যায়। পূর্ত দফতর সিদ্ধান্ত নেয়, ওই সব অংশ কংক্রিটে বাঁধিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু তার জন্য রাস্তা পুরোপুরি বন্ধ রেখে কাজ করা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, যে কোনও ভাবেই হোক, যান চলাচল চালু রাখতে হবে। ফলে প্রথম দফায় রাস্তার এক দিক বন্ধ রেখে কাজ করতে হয়েছে। সে দিকের কাজ মিটলে তবেই অন্য দিকের কাজে হাত দেওয়া গিয়েছে।

হাওড়ার সালকিয়া চৌরাস্তা থেকে বালিখাল পর্যন্ত জায়গায়-জায়গায় এই ভাবে কংক্রিট করা হয়েছে। কংক্রিট হওয়ার পরে অন্তত ২৮ দিন তা ফেলে রাখতে হয় মজবুত করার জন্য। তার ফলেও সময় গড়িয়ে গিয়েছে। নিত্য যানজটে নাকাল হচ্ছেন এলাকার মানুষ। কাজের গতি খতিয়ে দেখতে পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী এবং বিভাগীয় সচিব পরিদর্শনও করে গিয়েছেন।

পূর্ত দফতরের এক বাস্তুকার অবশ্য বলেন, “রাস্তা সংস্কারের জন্য মানুষের সাময়িক কিছু অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু এটা অত্যন্ত সময়োচিত সিদ্ধান্ত। এতে বারবার খরচের হাত থেকেও রেহাই পাওয়া যাবে।”

সময়ে শেষ করতে পারলে ঝাঁ চকচকে জিটি রোডই হয়তো গঙ্গার পশ্চিমপাড়ে পুজোর সেরা উপহার হতে পারত। তা আর হল কই?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

gt road hooghly chinsurah southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE