Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
হুগলি-চঁচুড়া পুরসভা

রান্নার খরচ অমিল, দু’ঘণ্টা তালাবন্দি হলেন সিডিপিও

রান্নার খরচ না-পাওয়ার অভিযোগ তুলে গত মাসেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। এ বার সেই বকেয়া টাকার দাবিতে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প দফতরের আধিকারিক (সিডিপিও)-কে প্রায় দু’ঘণ্টা তালাবন্দি করে রাখলেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে চার জন তিন মাস ধরে সাম্মানিক পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ তোলেন।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

চলছে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০২:৩২
Share: Save:

রান্নার খরচ না-পাওয়ার অভিযোগ তুলে গত মাসেই কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। এ বার সেই বকেয়া টাকার দাবিতে সুসংহত শিশু বিকাশ প্রকল্প দফতরের আধিকারিক (সিডিপিও)-কে প্রায় দু’ঘণ্টা তালাবন্দি করে রাখলেন তাঁরা। তাঁদের মধ্যে চার জন তিন মাস ধরে সাম্মানিক পাচ্ছেন না বলেও অভিযোগ তোলেন।

তাঁর প্রযুক্তিগত ভুলের কারণে চার কর্মী সাম্মানিক পাননি বলে সিডিপিও জয়ন্তী নাথ স্বীকার করে নেন এবং দ্রুত তা মেটানোর লিখিত আশ্বাস দেন। একই ভাবে দ্রুত রান্নার খরচের টাকা বিলির ব্যবস্থা করারও আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। এর পরেই ঘেরাও ওঠে। বিক্ষোভ প্রশমিত হয়।

ওই দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে চিরাচরিত পদ্ধতিতে ওই কর্মীদের প্রতি মাসে হাতে সাম্মানিক তুলে দেওয়া হতো। চলতি অর্থবর্ষের গোড়া থেকে সেই টাকা ওই কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একই ভাবে দেওয়ার কথা রান্নার খরচের টাকাও। কিন্তু সেই টাকা মিলছে না বলে অভিযোগ। স্বাগতা দত্ত, মমতা দাস রায়, কৃষ্ণা তালুকদার এবং রাজশ্রী দত্ত নামে চার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর অভিযোগ, তিন মাস ধরে তাঁদের অ্যাকাউন্টে সাম্মানিকের টাকা জমা পড়ছে না।

জয়ন্তীদেবী বলেন, ‘‘ওই চার কর্মীর অ্যাকাউন্ট নম্বর কম্পিউটারে নথিভুক্ত করার সময়ে ভুল হয়েছে। অন্য রাজ্যের চার জনের অ্যাকাউন্টে সেই টাকা চলে গিয়েছে। ভুল ধরার পড়ার পরেই ওই সব নম্বরের গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। শীঘ্রই টাকা ফেরত পাওয়া যাবে। চার কর্মীর বকেয়া মিটিয়ে দেওয়া হবে।’’ মহকুমাশাসক সুদীপ সরকারও জানান, কম্পিউটারে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নথিভুক্ত করতে গিয়েই ভুল হয়েছে। তা সংশোধন করা হচ্ছে। শীঘ্রই সমস্যা মিটবে। প্রযুক্তিগত কারণে রান্নার খরচের টাকা বিলি কিছু দিন বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে তিনি মেনে নেন।

হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার ৩০টি ওয়ার্ডে মোট ১১১টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে ২২২ জন কর্মী কাজ করেন। প্রতিটি কেন্দ্রে এক জন কর্মী এবং এক জন সহায়িকা থাকেন। ওই সব কেন্দ্র থেকে শিশু, প্রসূতি বা গর্ভবতী মহিলাদের পু্ষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। শিশুদের পড়ানোও হয়। প্রতি মাসের শেষে খরচের হিসাব দফতরে জমা দেন কর্মীরা। সেই টাকা সাম্মানিকের সঙ্গেই তাঁদের মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে ব্যাঙ্কের মাধ্যমে। কিন্তু ওই সব কর্মীদের অভিযোগ, সাম্মানিক পেলেও এপ্রিল মাস থেকে রান্নার খরচের টাকা তাঁরা পাচ্ছেন না। গত মাসের মাঝামাঝি পর্যন্ত তাঁরা নিজেরাই রান্নার খরচ চালিয়েছেন। কিন্তু আর সম্ভব না হওয়ায় ২৫ মে থেকে তাঁরা কেন্দ্র বন্ধ করে দেন।

এ দিন বেলা ২টো নাগাদ চুঁচুড়ার তোলাফটকে সিডিপিও দফতরে বিক্ষোভ দেখাতে হাজির হন শ’খানেক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন স্বাগতা দত্ত, মমতা দাস রায়, কৃষ্ণা তালুকদার এবং রাজশ্রী দত্তও। চার জনের সাম্মানিক এবং রান্নার বকেয়ার আশ্বাস না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। জয়ন্তীদেবীর ঘরে তালা মেরে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের মধ্যে সুস্মিতা দে বলেন, ‘‘এপ্রিল মাস থেকে রান্না চালানোর খরচ দেওয়া হচ্ছে না। দফতরের ভুলে চার সহকর্মী কয়েক মাস সাম্মানিক পাচ্ছেন না। এমন নানা অন্যায় চলছে। তাই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE