Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
প্লাস্টিক দূষণ রোধে প্রচার, শিবিরই সম্বল

পুরসভার সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে

প্লাস্টিক দূষণ রোধে স্রেফ প্রচার সেরেই ক্ষান্ত পুরসভাগুলি। প্লাস্টিক ব্যবহার রুখতে কোনও কড়া পদক্ষেপই করা হয়নি তাদের তরফে।

স্তূপ: চুঁচুড়ায় প্লাস্টিক-পলিথিনের জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র

স্তূপ: চুঁচুড়ায় প্লাস্টিক-পলিথিনের জঞ্জাল। নিজস্ব চিত্র

তাপস ঘোষ
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৭ ০১:৪৬
Share: Save:

প্লাস্টিক দূষণ রোধে স্রেফ প্রচার সেরেই ক্ষান্ত পুরসভাগুলি। প্লাস্টিক ব্যবহার রুখতে কোনও কড়া পদক্ষেপই করা হয়নি তাদের তরফে।

জেলায় প্লাস্টিক দূষণ রুখতে হুগলির পুরসভাগুলি যে ভাবে গা ছাড়া মনোভাব দেখাচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী সংগঠন।

দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে আগে বিভিন্ন বাজার, মল এবং দোকানে দোকানে হানা দিয়ে উপযুক্ত কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। নির্দিষ্ট মাপের প্লাস্টিক ব্যাবহারে ব্যবসায়ীদের সর্তক করা হয়েছিল। তাতে অনেকে সাড়াও দিয়েছিলেন। পুরসভাগুলিকে বিভিন্ন বাজারে নির্দিষ্ট মাপের প্লাস্টিক ব্যবহারে নজরদারির জন্য বলা হয়। অভিযোগ উঠেছে পুরসভাগুলির সেই নজরদারি নিয়েই। নজরদারির সেউ গাফিলতির সুযোগ নিয়েই অবাধে চলছে প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহার। বিভিন্ন বাজার থেকে মিষ্টি, ফল, মুদিখানা সর্বত্রই রমরমা পলিব্যাগের। আর পলিথিনের এই অবাধ ব্যবহারের ফলেই যেমন দূষণ ছড়াচ্ছে, তেমনই বিপর্যস্ত হচ্ছে নিকাশি ব্যবস্থা।

হুগলি-চুঁচুড়া থেকে শুরু করে চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, চাঁপদানি প্রায় সব পুরসভাই প্লাস্টিক-পলিথিনের বিরুদ্ধে প্রচার, সচেতনতা শিবির করেই নিজেদের দায় সেরেছে। আর কড়া পদক্ষেপ না করার সেই সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছেন ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষ।

যদিও পুরসভাগুলির তরফে গাফিলতির বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে। হুগলি-চুঁচুড়া পুরসভার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণ রোধে নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। বিভিন্ন বাজার দোকানে হানা দিয়ে এ ব্যাপারে নির্দেশও দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যবসায়ী থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে যদি সচেতনতা না থাকে তাহলে প্লাস্টিক দূষণ রোধ করা মুশকিল।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি জানান, প্রচার বা শিবিরে কাজ না হলে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

চন্দননগর পুরসভার মেয়র রাম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্লাস্টিক দূষণ রোধে প্রথম দিকে দোকানে দোকানে হানা দিয়ে তাদের সতর্ক করা হয়েছিল। তা ছাড়া দূষণ রোধে প্রচারও করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তা উপেক্ষা করেই অবাধে প্লাস্টিকের ব্যবহার চলছে। খুব শীঘ্রই এ নিয়ে ফের প্রচারে নামা হবে। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’’

একই ছবি ভদ্রেশ্বর ও চাঁপদানি পুরসভারও। দুই পুরসভার চেয়ারম্যান মনোজ উপাধ্যায় এবং সুরেশ মিশ্র জানান, দুটি পুরসভাই শিল্পাঞ্চল অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় শ্রমিকশ্রণির বাস। তার ফলে প্লাস্টিক-পলিথিনের ব্যবহারও বেশী। এর জন্য দূষণ রোধে সব সময়েই প্রচার চালানো হয়। কিন্তু আরও কড়া পদক্ষেপ করা না হলে প্লাস্টিক দূষন রোধ করা যাবে না।’’

রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের প্রাক্তন কর্তা তথা পরিবেশবিদ বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্লাস্টিক রোধে আইন এখনও কার্যকর হয়নি। ফলে অবাধে প্লাস্টিক-পলিথিন ব্যবহার হচ্ছে। দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের উচিত প্রত্যেক পুরসভার সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে অবিলম্বে কড়া আইনানুগ পদক্ষেপ করা । না হলে প্লাস্টিক দূষণ ক্রমশই বাড়বে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Municipalities sincerity Questionable
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE