Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাদক খাইয়ে গাড়ি ছিনতাই

ভাড়া খাটানোর জন্য দিন দশেক আগে নতুন গাড়ি কিনেছিলেন চুঁচুড়ার শুঁড়িপাড়ার যুবক সুভাষ মণ্ডল। কিন্তু গত বুধবার ভাড়া নিয়ে মায়াপুর যাওয়াই তাঁর কাল হল। মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে গাড়ি, তাঁর এটিএম কার্ড, নগদ কয়েক হাজার টাকা, লাইসেন্স এবং গাড়ির কাগজপত্র ছিনতাই করে নিল দুই যুবক। প্রায় এক দিন আচ্ছন্ন অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকার পরে বৃহস্পতিবার মায়াপুরের বাউনপুকুর বাজার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

অসুস্থ চালক। —নিজস্ব চিত্র।

অসুস্থ চালক। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া ও নবদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৪ জুন ২০১৫ ০০:৫৫
Share: Save:

ভাড়া খাটানোর জন্য দিন দশেক আগে নতুন গাড়ি কিনেছিলেন চুঁচুড়ার শুঁড়িপাড়ার যুবক সুভাষ মণ্ডল। কিন্তু গত বুধবার ভাড়া নিয়ে মায়াপুর যাওয়াই তাঁর কাল হল। মাদক মেশানো পানীয় খাইয়ে গাড়ি, তাঁর এটিএম কার্ড, নগদ কয়েক হাজার টাকা, লাইসেন্স এবং গাড়ির কাগজপত্র ছিনতাই করে নিল দুই যুবক। প্রায় এক দিন আচ্ছন্ন অবস্থায় রাস্তার ধারে পড়ে থাকার পরে বৃহস্পতিবার মায়াপুরের বাউনপুকুর বাজার থেকে তাঁকে উদ্ধার করে পুলিশ। শুক্রবার তাঁকে চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

নবদ্বীপ থানার আইসি তপনকুমার মিশ্র জানান, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। সুভাষের মোবাইল ফোনটি ছিনতাইকারীরা নেয়নি। সেটির কল-লিস্ট ঘেঁটে অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা হচ্ছে।

সম্প্রতি হুগলি জেলার আরও একটি গাড়ি একই কায়দায় ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হয় নবদ্বীপ থানায়। দু’টি ঘটনার মধ্যে একই দুষ্কৃতী রয়েছে কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে নবদ্বীপ থানা সূত্রে খবর। পুলিশের কাছে সুভাষ জানিয়েছেন, ওই দুই যুবককে তিনি চেনেন না। গত বুধবার তাঁরা নিজেদের চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর এলাকার বাসিন্দা পরিচয় দিয়ে গাড়িটি ফোনে ভাড়া করে। সে দিন সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ তাঁরা মায়াপুরে ইস্কন মন্দিরের উল্টো দিকে প্রভুপাদ ঘাটের পাশে পার্কিং লটে গাড়ি দাঁড় করান। এক যুবক তিনটি ঠান্ডা পানীয়ের বোতল খোলা অবস্থায় নিয়ে আসে। নিজেরা দু’টি বোতল রাখে। একটি তাঁকে খেতে দেয়। সুভাষ প্রথমে রাজি হননি। জোরাজুরিতে কিছুটা খান। এর পরেই অসুস্থ বোধ করায় গাড়িতে শুয়ে পড়েন। পরে নিজেকে রাস্তার ধারে দেখতে পান। কিন্তু কথা বলা বা হাঁটাচলার ক্ষমতা তাঁর প্রায় ছিলই না।

শুক্রবার চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে সুভাষ নতুন গাড়ির জন্য বারবার আক্ষেপ করছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘ সে দিন ওই পানীয় মুখে দিতেই বিস্বাদ লাগে। তাই সবটা খাইনি। বেঁচে যে ফিরতে পেরেছি এটাই অনেক।’’

সুভাষ ও তাঁর পরিবার সূত্রে খবর, এলাকারই আর এক গাড়ি-চালকের কাছ থেকে নবদ্বীপে দুই যুবককে নিয়ে যাওয়ার ভাড়াটি পান সুভাষ। দুপুরে রবীন্দ্রনগরের কাছে সরকারি আবাসনের সামনে থেকে যুবকেরা গাড়িতে ওঠে। গন্তব্য মায়াপুর। রাতেই ফিরে আসার কথা হয়। বিকেল ৫টা নাগাদ গাড়িটি মায়াপুরে পৌঁছয়। সেখানে একটি হোটেলে তিন জন খাওয়া-দাওয়া করে। সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ প্রভুপাদ ঘাটের পাশে পার্কিং লটে গাড়িটি রাখা হয়। তার পরেই ওই কাণ্ড।

সে দিন রাত নটা নাগাদ সুভাষকে ফোন করেছিলেন তাঁর স্ত্রী মৌসুমী। ফোনে স্বামীর কথাবার্তায় অসংলগ্নতা শুনে তাঁর সন্দেহ হয়। রাতে আর স্বামীকে তিনি ফোনে পাননি। সুভাষ না ফেরায় পরের দিন সকলে খোঁজ শুরু করেন। মায়াপুর ফাঁড়িতে যোগাযোগ করেন। তার পর ঘটনাটি প্রকাশ্য আসে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chuchura police Snatching southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE