Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

শংসাপত্রের জটে আটকে গ্রন্থাগারের বরাদ্দ

গ্রন্থাগার পরিচালন সমিতি সূত্রের খবর, ওই ভবন যে পরিত্যক্ত সেটা ওই শংসাপত্রের মাধ্যমেই জানানোর কথা। কিন্তু সেই শংসাপত্র জোগাড় করতেই হিমসিম খাচ্ছে তারা। ফলে বরাদ্দ হলেও মিলছে না টাকা।

বেহাল: এই গ্রন্থাগারের সমস্যা সমাধানে বরাদ্দ হয়েছে টাকা। নিজস্ব চিত্র

বেহাল: এই গ্রন্থাগারের সমস্যা সমাধানে বরাদ্দ হয়েছে টাকা। নিজস্ব চিত্র

নুরুল আবসার
জগৎবল্লভপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৭ ০০:৫৩
Share: Save:

দেওয়াল থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা।

ঘুঁটে দেওয়ার মতো করে সেই দেওয়ালেই সাঁটানো প্রাচীন মূর্তি, টেরাকোটার বিভিন্ন কাজের নিদর্শন।

কাঠের আলমারিতে গাদাগাদি করে রাখা রয়েছে বই। সংরক্ষণের অভাবে অনেক বই উইয়ে কেটেছে।

হাওড়ার জগৎবল্লভপুরের নিজবালিয়া সরকারি সবুজ গ্রন্থাগারের হাল এমনই। বেহাল গ্রন্থাগার নিয়ে স্থানীয়দের অভিযোগও বহুদিনের। রাজ্য গ্রন্থাগার সূত্রে অবশ্য খবর, গ্রন্থাগার সংস্কারের জন্য ৩৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। কিন্তু বাধ সেধেছে একটা শংসাপত্র।

গ্রন্থাগার পরিচালন সমিতি সূত্রের খবর, ওই ভবন যে পরিত্যক্ত সেটা ওই শংসাপত্রের মাধ্যমেই জানানোর কথা। কিন্তু সেই শংসাপত্র জোগাড় করতেই হিমসিম খাচ্ছে তারা। ফলে বরাদ্দ হলেও মিলছে না টাকা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার বাসিন্দা বিজ্ঞানী অজিত মাইতির উদ্যোগে সবুজ গ্রন্থাগার তৈরি হয় ১৯৪৫ সালে। ১৯৫৭ সালে মেলে সরকারি অনুমোদন। ১২ হাজার বইয়ের সম্ভারের এই গ্রন্থাগারে সদস্য সংখ্যা প্রায় ৫০০। বই ছাড়াও এই গ্রন্থাগারে ঠাঁই পেয়েছে বিভিন্ন প্রত্ন সামগ্রী। কিন্তু সেগুলিকেও ঠিকভাবে সংরক্ষণ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। দেওয়ালে ছবির মতো করে সেঁটে রাখা হয়েছে মূর্তিগুলি। এমনকী তার উপর দিয়ে চলছে চুনকামও। গ্রন্থাগারের সদস্য ওই গ্রামের বাসিন্দা শিবেন্দু মান্নার আক্ষেপ, ‘‘প্রত্নসামগ্রীগুলো যেভাবে রাখা হয়েছে, সেটাকে ইতিহাসের অবমাননা ছাড়া কিছুই বলা যায় না।’’

গ্রন্থাগারের সংস্কারের জন্য ২০১৪ সালে ৩৩ লক্ষ টাকা অনুদান মঞ্জুর করে রাজ্য গ্রন্থাগার বিভাগ। পরিচালন সমিতিকে চিঠি দিয়ে তারা বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট পাঠাতে বলে। ২৬০০ বর্গফুটের নতুন ভবনের একটি রিপোর্ট রাজ্য গ্রন্থাগার বিভাগের কাছে জমা দেয় পরিচালন সমিতি। আধুনিক পদ্ধতিতে বই সংরক্ষণ ছাড়াও প্রত্ন সামগ্রীগুলির গ্যালারি তৈরির প্রস্তাবও ছিল সেই রিপোর্টে। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে পরিচালন সমিতিকে জানায়, সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েত সমিতি বা বিডিওর কাছ থেকে বর্তমান ভবনটি যে পরিত্যক্ত সেই সংক্রান্ত শংসাপত্র দিতে হবে। তাহলেই মিলবে টাকা।

কিন্তু অভিযোগ, সেই শংসাপত্র জমা পড়েনি রাজ্য গ্রন্থাগার বিভাগে। পরিচালন সমিতির সভাপতি অমিয় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বারবার জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে এ বিষয়ে জানানো হলেও সাহায্য মেলেনি।’’ আর জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মহম্মদ হাফিজুল রহমানের সাফাই, ‘‘ইঞ্জিনিয়ারদের বলেছিলাম গ্রন্থাগারটি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট দিতে। এখনও কেন সেই রিপোর্ট যায়নি সে বিষয়ে খোঁজ নেব।’’ তবে গ্রন্থাগার পরিচালন সমিতির সম্পাদক বিকাশ ঘোষের আশ্বাস, ‘‘আমরা বিভিন্ন মহলের সঙ্গে আলোচনা করছি। আশা করি সমস্যা মিটে যাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE