প্রার্থীকে নিয়ে আলোচনায় বিধায়ক। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
অতীতে তাঁরা নাকি পথসভাও করতে পারেননি এই এলাকায়। এ বার কয়েকশো জনতাকে নিয়ে হলেও, সেখানেই নির্বাচনী প্রচারের প্রথম সভাটি করল বিজেপি।
বুধবার দুপুরে গাইঘাটার মহিষাকাটিতে ওই সভায় বনগাঁ লোকসভা উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী সুব্রত ঠাকুরের সমর্থনে হাজির ছিলেন বিজেপির বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য। সভায় না এলেও বহু মানুষকে দূরে দাঁড়িয়ে মাইকে বিজেপি নেতাদের বক্তৃতা শুনতে দেখা গেল। মাঠ অবশ্য ভরেনি। সেই আশাও করেননি স্থানীয় নেতারা। তবে যেটুকু ভিড় হয়েছিল, তাতেই খুশি তাঁরা। দলের গাইঘাটা ব্লক সভাপতি চন্দ্রকান্ত দাস বলেন, “এখানে জনসভা তো দূরের কথা, অতীতে এখানে পথসভা পর্যন্ত করতে পারিনি আমরা।” এক বিজেপি কর্মীকে বলতে শোনা গেল, “অনেকেরই আসার ইচ্ছা থাকলেও ভয়ে আসতে পারেননি।” শমীকবাবু ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন প্রার্থী সুব্রত ঠাকুর, জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হালদার, জেলার সহ সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়। বিজেপি নেতাদের দাবি, সভা মঞ্চ থেকে তৃণমূল-সিপিএম-কংগ্রেস থেকে শ’খানেক কর্মী-সমর্থক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন।
বনগাঁর প্রয়াত সাংসদ তৃণমূলের কপিলকৃষ্ণ ঠাকুরের অকাল প্রয়াণে তাঁর স্মৃতিতে শোকজ্ঞাপন করে ও তাঁর পরিবারের সকলের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে শমীকবাবু এ দিন বক্তৃতা শুরু করেন। বনগাঁ লোকসভা ভোটে মতুয়া ভোটব্যাঙ্ক যে একটা বড় ফ্যাক্টর, তা সব দলই জানে। কপিলবাবু ছিলেন সারা ভারত মতুয়া মহাসঙ্ঘের সঙ্ঘাধিপতি। ফলে তাঁর প্রতি মতুয়াদের শ্রদ্ধা রয়েছে। কপিলবাবুর স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে শমীকবাবু মতুয়াদের প্রতি সম্মানের জায়গাটাই বোঝাতে চেয়েছেন। তবে শমীকবাবু বলেন, “কোনও পারিবারিক বিভাজন বা আবেগকে কাজে লাগিয়ে বিজেপি এখানে ভোট চাইতে আসেনি।”
শমীকবাবুর বক্তৃতার বেশির ভাগ সময় জুড়েই ছিল রাজ্য সরকারের সমালোচনা। তাঁর কথায়, “রাজ্যে গণতান্তিক পরিবেশ ধ্বংস করেছে শাসক দল। দিকে দিকে আরাবুল-ভিমরুলরা ঘুরে বেড়াচ্ছে। পুলিশের ক্ষমতা নেই তাদের ধরে। রাজ্যে পুলিশ তৃণমূলের শাখা সংগঠনে পরিণত হয়েছে।”
যে এলাকায় সভা হয়েছিল সেটি কাঁটাতারের পাশে। অনুপ্রবেশ, চোরচালান নিয়মিত সমস্যা। এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতার কটাক্ষ, “চোরাকারবারকে বর্তমান সরকার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।”
কংগ্রেস ফের তৃণমূলের সঙ্গে জোট বেঁধে চুরির (সারদা-কাণ্ড) বিরোধিতা করবে, এমনটাই অনুমান বিজেপি বিধায়কের। সেই সঙ্গে তাঁর কটাক্ষ, “সিপিএম গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। নবান্নে ফিশ ফ্রাই খেয়ে শেষ হয়ে গিয়েছে।” তৃণমূল নেত্রীরও এ দিন সমালোচনা করেছেন রাজ্যে বিজেপির একমাত্র বিধায়ক। তিনি বলেন, “অতীতে মমতার সভায় জনপ্লাবন দেখা যেত। এখনও ভিড় হয়। তবে তা ভয়ে ও বিপিএল তালিকায় নাম তোলার জন্য।”
সভায় সুব্রত তাঁর সংক্ষিপ্ত ভাষণে তৃণমূলের সমালোচনা করে বলেন, “৩৪ বছরে সিপিএম যত না খারাপ কাজ করেছে চার বছরে তৃণমূল তার থেকেও বেশি খারাপ কাজ করেছে। চারিদিকে চিটফান্ডের রমরমা। তাতে দলের মন্ত্রী-নেতারা জড়িত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy