Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

ছুটির দিনেও স্কুল খোলা, নজির গড়ল বসিরহাট

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোলের পরের দিনটিও ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছেন। ফলে টানা চার দিন (শনি-রবিবার ধরে) ছুটি উপভোগ করছেন অধিকাংশ রাজ্যবাসী। বসিরহাটের মালতিপুর হাইস্কুল কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথা মেনেই অন্য নজির দেখাল। শুক্রবার ক্লাস হয়েছে এখানে। আশপাশের আরও কয়েকটি স্কুলেও এ দিন ক্লাস চলেছে স্বাভাবিক নিয়মে। পড়ুয়া কিছু কম, কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রায় সকলেই এসেছেন।

বসিরহাটের মালতিপুর হাইস্কুলে তখন চলছে ক্লাস। শুক্রবার।— নিজস্ব চিত্র।

বসিরহাটের মালতিপুর হাইস্কুলে তখন চলছে ক্লাস। শুক্রবার।— নিজস্ব চিত্র।

নির্মল বসু
বসিরহাট শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৮
Share: Save:

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দোলের পরের দিনটিও ছুটি ঘোষণা করে দিয়েছেন। ফলে টানা চার দিন (শনি-রবিবার ধরে) ছুটি উপভোগ করছেন অধিকাংশ রাজ্যবাসী। বসিরহাটের মালতিপুর হাইস্কুল কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর কথা মেনেই অন্য নজির দেখাল। শুক্রবার ক্লাস হয়েছে এখানে। আশপাশের আরও কয়েকটি স্কুলেও এ দিন ক্লাস চলেছে স্বাভাবিক নিয়মে। পড়ুয়া কিছু কম, কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকারা প্রায় সকলেই এসেছেন।

মালতিপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভেন্দু মণ্ডলের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রী কর্মসংস্কৃতির কথা বলেন। তাঁর কথায় গুরুত্ব দিতেই স্কুল খোলা রাখা হয়েছে।” মালতিপুর হাইস্কুলের তৃণমূল-পরিচালিত পরিচালন কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলামও স্কুল খোলা রাখারই পক্ষপাতী। তিনি বলেন, “ডিসেম্বরেই ৬৫ দিনের ছুটির তালিকা ঠিক করে ফেলা হয়েছিল। বাড়তি ছুটি দেওয়া সম্ভব ছিল না। তা ছাড়া, স্কুলের পঠনপাঠন এবং অন্যান্য কাজের কথা মাথায় রেখেই দোলের পর দিন স্কুল চালু রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর ছুটি ঘোষণা সত্ত্বেও স্কুল খোলা রাখলে কোনও শাস্তির খাঁড়া নেমে আসবে না তো এ জন্য? এ নিয়ে মন্তব্য করেননি প্রধান শিক্ষক বা পরিচালন কমিটির সভাপতি। মন্তব্য এড়িয়েছেন ব্রহ্মানন্দ বিদ্যাভবন স্কুল, পিঁফা স্কুল, ঘোড়াইতলা স্কুল কর্তৃপক্ষও। এঁরাও শুক্রবার ক্লাস চালু রাখেন। কিন্তু তা নিয়ে কুলুপ এঁটেছেন সকলে। কোথাও কোথাও সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিকে দেখে আঁতকে উঠেছেন অনেকে।

উত্তর ২৪ পরগনার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক সঙ্ঘমিত্র মাকুড় বলেন, “সরকারি নির্দেশ না মেনে দোলের পর দিন স্কুল চালু রাখলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তা নিয়ে নির্দেশ আসেনি।” এ দিন মালতিপুর হাইস্কুলে গিয়ে দেখা গেল, ক্লাস চলছে। দশম শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ভৌত বিজ্ঞানের ক্লাস নিচ্ছিলেন মহিউদ্দিন আহমেদ। জানালেন, কম ছেলেমেয়ে এসেছে। রিয়া পারভিন, আনিসা খাতুন, শেখ রাসেলরা অবশ্য তাতে খুশি। তাদের কথায়, “কম ছেলেমেয়ে আসায় আমরা আজকের পড়া বেশ উপভোগ করছি।” পঞ্চম শ্রেণিতে বাংলার ক্লাস নিচ্ছিলেন পাপিয়া রায়। তিনিও বলেন, “ছাত্রছাত্রী কম থাকায় পড়ানোর সুবিধা হচ্ছে। ছেলেমেয়েরাও মন দিয়ে ক্লাস করছে।” ওই ক্লাসেরই মারুফ বিল্লা মণ্ডল, রিমা ঘোষরা অবশ্য বলে, “সব বন্ধুরা এলে আরও ভাল লাগত।”

শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীদের মধ্যে হিমাংশু মাঝি, চন্দ্রদেব দে, রেজাউল হক মোল্লা, কাবেরী মল্লিকরা বলেন, “মাধ্যমিক পরীক্ষা, হোলি, ইছালে ছাওয়াবের জন্য একের পর এক ছুটি থাকায় ক্লাস কম হয়েছে। সামনেই ইউনিট টেস্ট। সে সব কথা ভেবেই স্কুল খোলা রাখা হয়েছে।”

প্রধান শিক্ষকও জানান, পর পর কয়েকটি ছুটির কারণে ছাত্রছাত্রীরা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়ছে। তা ছাড়া, দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিট কার্ড, রেজিস্ট্রেশন এবং কন্যাশ্রী প্রকল্পের ফর্ম জমা নেওয়ার মতো কাজগুলি স্কুল ছুটি থাকলে করা যায় না। তাই স্কুল খোলা রাখা হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

nirmal basu bashirhat school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE