Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

দু’টি ঘটনায় গণধর্ষণের অভিযোগ বধূ ও কিশোরীকে, গ্রেফতার ২ জন

খুনের হুমকি দিয়ে বধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল দু’জনের বিরুদ্ধে। সম্পর্কে তারা আবার শ্যালক-ভগ্নীপতি। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানার খাঁপুকুর গ্রামে। অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ মণ্ডল এবং হরিপদ দাসকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অসুস্থ বধূর চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। হাসনাবাদ থানার ওসি অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “গ্রাম ছাড়লেও খুব শীঘ্রই দু’জনকে গ্রেফতার করা হবে।”

নিজস্ব সংবাদদাতা
বসিরহাট শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৪ ০১:১০
Share: Save:

খুনের হুমকি দিয়ে বধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ উঠল দু’জনের বিরুদ্ধে। সম্পর্কে তারা আবার শ্যালক-ভগ্নীপতি। রবিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ থানার খাঁপুকুর গ্রামে। অভিযুক্ত কৃষ্ণপদ মণ্ডল এবং হরিপদ দাসকে গ্রেফতার করা যায়নি বলে পুলিশ সূত্রের খবর। অসুস্থ বধূর চিকিৎসার ব্যবস্থা হয়েছে। হাসনাবাদ থানার ওসি অনুপম চক্রবর্তী বলেন, “গ্রাম ছাড়লেও খুব শীঘ্রই দু’জনকে গ্রেফতার করা হবে।”

পুলিশের কাছে দায়ের অভিযোগ অনুযায়ী, ওই গ্রামের বাসিন্দা বধূর স্বামী ঘটনার রাতে বাড়িতে ছিলেন না। সেই সুযোগে প্রতিবেশী কৃষ্ণপদ তাঁদের বাড়িতে ঢুকে বধূকে খুনের হুমকি দিয়ে অপহরণ করে এলাকারই একটি ফাঁকা বাড়িতে নিয়ে যায়। আগে থেকেই সেখানে অপেক্ষা করছিল হরিপদ। ওই বধূ পুলিশকে জানান, বছর পঁয়ত্রিশের দুই যুবক রাতভর তাঁর মুখে কাপড় গুঁজে অত্যাচার চালায়। কাউকে কিছু বললে খুনেরও হুমকি দেয় তারা। ভোরের দিকে মহিলাকে ফেলে তারা পালিয়ে যায়। দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে কোনও রকমে বাড়ি ফেরেন তিনি। স্বামী বাড়ি এলে তাঁকে সব বলেন। সোমবার স্বামী-স্ত্রী কৃষ্ণপদ এবং হরিপদর বিরুদ্ধে থানায় গণধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ পৌঁছনোর আগেই অবশ্য এলাকা ছেড়ে পালায় অভিযুক্তেরা।

প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানতে পারে, কৃষ্ণপদ কলকাতার একটি মুড়ি তৈরির কারখানায় কাজ করে। কালীপুজো উপলক্ষে গ্রামের বাড়িতে ফিরেছিল। তার শ্যালক হরিপদ দক্ষিণ শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা। গত কয়েক দিন ধরে নানা অছিলায় তারা ওই বধূর সঙ্গে আপত্তিকর ভাবে মেলামেশার চেষ্টা করছিল বলে অভিযোগ। তিনি পাত্তা না দেওয়ায় সম্ভবত তারা সুযোগ খুঁজছিল। ঘটনার রাতে পাড়ার অন্যদের সঙ্গে কালী প্রতিমার বিসর্জন দেখতে যান ওই বধূ। সে সময়ে তাঁর পিছু নেয় দুষ্কৃতীরা। বিসর্জন শেষে সকলে যে যার বাড়ি ফিরে গেলে ওই বধূর বাড়িতে হাজির হয় কৃষ্ণপদ। পরিচিত হওয়ায় ওই যুবককে মহিলাই দরজা খুলে দিয়েছিলেন বলে পুলিশের অনুমান। সেই সুযোগেই তাঁর উপরে হামলা হয়।

অন্য একটি ঘটনায়, কিশোরীকে গণধর্ষণের অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে সন্দেশখালির শাকদহ গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের নাম ডিস্কো শেখ এবং হবো খা।ঁ বাড়ি ওই এলাকাতেই। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় মেয়েটিকে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মেয়েটির বাবা পেশায় ভ্যান চালক। তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রী মিনাখাঁ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় সেখানেই ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে গিয়েছিলেন মেয়েটির বাবা। ছোট ভাই ও প্রতিবেশী একটি ছোট মেয়েকে নিয়ে বাড়িতে ছিল বছর চোদ্দর ওই কিশোরী। অভিযোগ, রাত ১২টা নাগাদ ভোজালি দিয়ে দরজার আগল খুলে ঘরের ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। মেয়েটির মুখে কাপড় গুঁজে তাকে ধর্ষণ করা হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, অত্যাচার চলাকালীন মেয়েটির ভাইয়ের ঘুম ভেঙে যায়। তার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন। কিন্তু ভোজালি দেখিয়ে তাঁদের খুনের হুমকি দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। দু’টি মোটর বাইকে এসেছিল তারা। বাসিন্দারা তাদের ধাওয়া করেন। বাকিরা পালিয়ে গেলেও একটি মাছের ভেড়ির আলাঘর থেকে ধরা পড়ে যায় ডিস্কো ও হবো। শুরু হয় গণধোলাই। দু’জনকে হাত-পা বেঁধে একটি স্কুলে আটকে রাখা হয়। পরে পুলিশ এসে তাদের গ্রেফতার করে।

চিকিৎসাধীন ওই কিশোরী বলে, “বাড়ির কাছেই একটা সাঁকোর উপর বসে প্রায়ই মদ খেতে দেখতাম ছেলেগুলোকে। সেখান দিয়ে গেলে ওরা নানা ভাবে টোন-টিটকারি করত। বাবা-মা এবং দাদার অনুপস্থিতির সুযোগ নিয়ে ওরা ভোজালি দিয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে আমার উপরে ভয়ঙ্কর অত্যাচার করে। বাধা দিতে গেলে আমাকে খুনের হুমকিও দেওয়া হয়।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, পাঁচ-ছ’জন দুষ্কৃতীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ গ্রামের মানুষ। ডিস্কো চুরি, ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ। এর আগেও এই দলটি মহিলাদের শ্লীলতাহানি করেছে বলে জানালেন গ্রামবাসীরা। গণধর্ষণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

southbengal basirhat rape hasnabad gang rape
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE