Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে জখম

মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনায় জখম হল এক ছাত্রী। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনির কাছে। মাসুরা শেখ নামে ওই পরীক্ষার্থী অবশ্য এ দিন ক্যানিং হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন অবস্থাতেই পরীক্ষা দিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ক্যানিংয়ের তালদি সুরবালা হাইস্কুলের ওই ছাত্রীর মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল ক্যানিংয়েরই দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়ে। উত্তর অঙ্গদবেড়িয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে মাসুরা।

এ ভাবেই পরীক্ষায় বসতে হল মাসুরাকে। ছবি: সামসুল হুদা।

এ ভাবেই পরীক্ষায় বসতে হল মাসুরাকে। ছবি: সামসুল হুদা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ক্যানিং ও শান্তিপুর শেষ আপডেট: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ০১:৩৬
Share: Save:

মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে যাওয়ার সময়ে দুর্ঘটনায় জখম হল এক ছাত্রী। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিংয়ের রায়বাঘিনির কাছে। মাসুরা শেখ নামে ওই পরীক্ষার্থী অবশ্য এ দিন ক্যানিং হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন অবস্থাতেই পরীক্ষা দিয়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, ক্যানিংয়ের তালদি সুরবালা হাইস্কুলের ওই ছাত্রীর মাধ্যমিকের সিট পড়েছিল ক্যানিংয়েরই দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়ে। উত্তর অঙ্গদবেড়িয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে থেকে পরীক্ষা দিচ্ছে মাসুরা।

মঙ্গলবার সকালে একটি মোটর বাইকে মাসুরা মা-কাকার সঙ্গে পরীক্ষা কেন্দ্রের দিকে যাচ্ছিল। রাস্তায় পিছন দিক থেকে একটি ছোট ম্যাটাডোর পিছন থেকে ওভারটেক করে বাইকটিকে। উল্টো দিক থেকে আসা একটি সাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকের সঙ্গে ধাক্কা মারে। তিন জনেই পড়ে যান বাইক থেকে। মাথা ফেটে অজ্ঞান হয়ে যায় মাসুরা।

স্থানীয় এক শিক্ষক প্রশান্ত বায়েন ওই ছাত্রীকে অটোতে ক্যানিং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। খবর পেয়ে হাসপাতালে আসেন ক্যানিং থানার ওসি সতীনাথ চট্টোরাজ। মেয়েটির চিকিত্‌সার ব্যাপারে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন তিনি। দ্বারিকানাথ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকেয়া বেগম, স্থানীয় স্কুল ইন্সপেক্টর কবীর আহম্মেদরাও চলে আসেন হাসপাতালে। হাসপাতালেই যাতে পরীক্ষা দিতে পারে মাসুরা, সেই ব্যবস্থা করা হয়। একজন ‘রাইটার’ও জোগাড় করা হয় দ্রুত। হাসপাতাল সূত্রের খবর, ওই ছাত্রীর মাথায় তিনটি সেলাই পড়েছে। তার সিটি স্ক্যান করানো হয়েছে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরে মেয়েটিকে কলকাতার চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।

মাসুরা এমনিতেই অসুস্থ ছিল। দেহের বাঁ দিকে তার বিশেষ সাড় নেই। আরও কিছু সমস্যা আছে। এ দিন পরীক্ষা দিতে দিতেও ক্রমশ নিস্তেজ হয়ে আসছিল সে। কলকাতার হাসপাতালে থেকে বাকি পরীক্ষাগুলি সে দিতে পারবে কিনা, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করছেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকেরা।

অন্য একটি ঘটনায়, জেদের কাছে হার মানল অসুস্থতা। সোমবার মাঝরাতে শান্তিপুরের ফুলিয়ার বাসিন্দা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী পাপাই ঘোষকে সাপে ছোবল মারে। রাতেই তাকে ভর্তি করানো হয় রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। কিন্তু মঙ্গলবার হাসপতাল কর্তৃপক্ষের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় সে বিছানায় বসেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল।

এ দিন রাতে মায়ের সঙ্গে শুয়ে ছিল বছর পনেরোর ওই কিশোর। রাত দেড়টা নাগাদ ওই কিশোরের ঘাড়ের কাছে সাপে ছোবল মারে। যন্ত্রণায় কতরাতে কতরাতে সে তার মাকে বিষয়টি জানায়। তড়িঘড়ি পরিবারের লোকজন তাকে ভর্তি করে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে। রাতেই শুরু চিকিত্‌সা। সকাল নাগাদ কিছুটা সুস্থ হতেই ওই কিশোর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে পরীক্ষা দেওয়ার মৌখিক আর্জি জানায়। হাসপাতাল সুপার সঙ্গে সঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা পর্ষদের আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে ওই কিশোরের পরীক্ষায় বসা নিশ্চিত করেন। সুপার অতীন্দ্রনাথ মণ্ডল বলেন, “ওই কিশোর কেবিনে বসেই পরীক্ষা দিয়েছে।” স্কুলে বরাবরের মেধাবী ছাত্র বলে পরিচিত পাপাই বলে, “পরীক্ষা না হলে অহেতুক এক বছর নষ্ট হত। তাই কষ্ট উপেক্ষা করেই পরীক্ষা দিলাম।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE