Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা স্কুলে

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া ঘিরে ভাঙচুর হল ব্যারাকপুর গার্লস হাইস্কুলে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকা এবং সহকারী প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা করেন অভিভাবকদের একাংশ। ভাঙচুর চালানো হয় প্রধান শিক্ষিকার ঘরেও। খবর পেয়ে টিটাগড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্কুলের তরফে অবশ্য রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি।

প্রধান শিক্ষিকার টেবিলের কাচ ভেঙেছে। নিজস্ব চিত্র।

প্রধান শিক্ষিকার টেবিলের কাচ ভেঙেছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৫ ০১:২৪
Share: Save:

একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি প্রক্রিয়া ঘিরে ভাঙচুর হল ব্যারাকপুর গার্লস হাইস্কুলে। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার দুপুরে। অভিযোগ, প্রধান শিক্ষিকা এবং সহকারী প্রধান শিক্ষিকাকে হেনস্থা করেন অভিভাবকদের একাংশ। ভাঙচুর চালানো হয় প্রধান শিক্ষিকার ঘরেও। খবর পেয়ে টিটাগড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। স্কুলের তরফে অবশ্য রাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি।
পুলিশ সূত্রে খবর, এ দিন ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় সকাল থেকেই ভিড় ছিল ছাত্রী ও অভিভাবকদের। অভিযোগ, ভর্তির কাজ চলাকালীন আচমকা কয়েক জন অভিভাবক প্রধান শিক্ষিকার ঘরে ঢুকে পড়েন। তা দেখে হকচকিয়ে যান লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা অন্য ছাত্রী ও তাদের অভিভাবকেরা। অনন্যা মুখোপাধ্যায় নামে এক অভিভাবক বলেন, ফর্ম নিতে লাইনে দাঁড়িয়েছিল মেয়ে। আমিও ছিলাম। হঠাৎ দেখি কয়েক জন বড়দির ঘরে ঢুকলেন। ভর্তি নিয়ে সমস্যা হচ্ছিল সকাল থেকে। মিনিট পনেরো পরে সবাই বেরিয়ে এলেন। কিন্তু ওই ঘটনার জেরে ভর্তির কাজ বহুক্ষণ আটকে ছিল। গরমে খুব কষ্ট হয়েছে।’’

কেন হঠাৎ স্কুলে এই হামলা? অভিভাবকদের একাংশের অভিযোগ, নোটিস বোর্ডে ন্যূনতম যে নম্বরের ভিত্তিতে ভর্তির কথা লেখা আছে, তার থেকে বেশি নম্বর পাওয়া সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ ভর্তি নিতে অস্বীকার করছেন। পাপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায়, মাধবী মান্না, মুনমুন চৌধুরীদের অভিযোগ, ‘‘মোট নম্বর ছাড়াও বিষয়ভিত্তিক যত নম্বর পেলে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভর্তি নেওয়ার কথা বলা হয়েছে, আমাদের মেয়েরা তার থেকে বেশি নম্বর পেলেও সেই বিষয়ে কেন পড়তে পারবে না? প্রধান শিক্ষিকা ভর্তি করতেই অস্বীকার করছেন। তুঘলকি শাসন চালাচ্ছেন স্কুলে।’’

ঘটনাচক্রে, এ বার মাধ্যমিকের সার্বিক ফলাফল বেশ ভাল। বহু স্কুলে সব পরীক্ষার্থী পাশ করেছে। ব্যারাকপুর গার্লস হাইস্কুলের ফল প্রতি বছরই খুব ভাল হয় বলে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তির চাপও বেশি থাকে। স্কুল সূত্রে খবর, এ বার ২৪৯ জন মাধ্যমিক দিয়েছিল। সবাই পাশ করেছে। এর মধ্যে প্রথম বিভাগে পাশ করেছে ১৭০ জন। উচ্চ মাধ্যমিক পড়ার জন্য এই স্কুলে আছে দেড়শোটি আসন।

প্রধান শিক্ষিকা ছন্দা দাশগুপ্তর অভিযোগ, ‘‘১৫০ জনের জায়গায় আরও দশ জন বাড়ানো যায়। কিন্তু সবাইকে কি নেওয়া সম্ভব? অত ছাত্র পড়ানোর পরিকাঠামোই তো নেই। আর অভিভাবকেরা যে অভিযোগ করছেন, তা-ও ঠিক নয়। যেখানে রেজাল্ট ভালো হয়েছে, সেখানে মেধার ভিত্তিতেই আমাদের ভর্তি নিতে হবে। প্রথম মেধা তালিকায় যাদের নাম ওঠেনি, তাদের অভিভাবকদের কেউ কেউ আজকের গোলমালে ছিলেন দেখেছি।’’

এ দিনের হামলার বিবরণ দিতে গিয়ে ছন্দাদেবী আরও বলেন, ‘‘একদল লোক ও মহিলা অভিভাবক বলে পরিচয় দিয়ে আমার ঘরে ঢুকে মাধ্যমিকে উত্তীর্ণ সব ছাত্রীকে ভর্তি করার দাবি জানান। আমি তাঁদের বলি, স্কুল পরিচালন কমিটির সঙ্গে আলোচনা করে জানাব। এ কথা বলায় আমাকে গালিগালাজ করে চেয়ার থেকে ফেলে দেওয়া হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষিকা স্বাতী গঙ্গোপাধ্যায়কেও হুমকি দেওয়া হয়। ছাতা, পেপার ওয়েট দিয়ে টেবিলের কাচ ভেঙে দেন কয়েক জন। এমনকী, সবাইকে ভর্তি করানোর মুচলেকাও লিখিয়ে নেন ওঁরা।’’ এর পরে অভিভাবকেরা চলে যান। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্কুলের সামনে বসানো হয় পুলিশ পিকেট।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE