Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

পাশ করানোর দাবিতে ভাঙচুর, বিক্ষোভ ছাত্রদের

কেউ অঙ্কে শূন্য পেয়েছে, কেউ বিজ্ঞানে। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক টেস্টে পরীক্ষায় ফেল করা এই ছাত্রদের দাবি, যে ভাবে হোক তাদের পাশ করাতেই হবে। প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা দাবি না মানায় ওই পড়ুয়াদের একাংশ স্কুলে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালাল। প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের লক্ষ্য করে অশ্লীল ভাষাও ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার সকালে মগরাহাটের অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল হাইস্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মগরাহাট শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০১৫ ০১:০৯
Share: Save:

কেউ অঙ্কে শূন্য পেয়েছে, কেউ বিজ্ঞানে। কিন্তু মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক টেস্টে পরীক্ষায় ফেল করা এই ছাত্রদের দাবি, যে ভাবে হোক তাদের পাশ করাতেই হবে। প্রধান শিক্ষক-সহ অন্যান্য শিক্ষকেরা দাবি না মানায় ওই পড়ুয়াদের একাংশ স্কুলে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালাল। প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের লক্ষ্য করে অশ্লীল ভাষাও ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ। শুক্রবার সকালে মগরাহাটের অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল হাইস্কুলে এই ঘটনা ঘটেছে।

এ দিন সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ ফেল করা বেশ কিছু ছাত্র কয়েক জন বহিরাগতকে নিয়ে স্কুলের লোহার গেট ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করে। বাইরে থেকেই প্রধান শিক্ষকের ঘরের জানালা লক্ষ করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। পরে ভিতরে ঢুকে প্রধান শিক্ষক ও অন্য শিক্ষকদের অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয় বলেও অভিযোগ। তালা ভেঙে দেওয়ালে ঝোলানো নোটিস বোর্ডটি তারা ভেঙে ফেলে। বিক্ষোভকারী ছাত্রদের আরও দাবি, স্কুলের গেট সব সময়ে খুলে রাখতে হবে। এই ভাবে দফায় দফায় হামলা চলার পরে স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ এলে ছাত্রেরা পালায়।

এ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক শ্যামলকুমার দে বলেন, “মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকে ফেল করা ছাত্রেরা যে দাবিগুলি করেছে, তা মানা হলে ওদেরই ক্ষতি হবে। ওদের ডেকে ভাল ভাবে বুঝিয়ে বলব। স্কুলে হামলা চালাতে যারা এসেছিল, তারা সকলেই আমার সন্তানের মতো। আমি ওদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে কোনও লিখিত অভিযোগ করিনি। ওরা কারও উসকানিতে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তবে আমি বর্তমানে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছি। সে বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েছি।”

স্কুল ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই স্কুলে এ বার মাধ্যমিক টেস্ট পরীক্ষার্থী ছিল ২৮৫ জন। এদের মধ্যে ২১ জন পরীক্ষা দেয়নি। ৪১ জন ফেল করে। ২৫ ডিসেম্বর পাশ করা ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমিক পরীক্ষার ফর্ম ফিলাপের শেষ তারিখ ছিল। উচ্চ মাধ্যমিকের মোট টেস্ট পরীক্ষার্থী ২৯৭ জন। ফেল করে ২৫ জন। পরীক্ষা দেয়নি ৪২ জন। ১২ জানুয়ারি উচ্চমাধ্যমিকের ফর্ম ফিলাপের শেষ তারিখ ছিল। শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের টেস্টে ফেল করা বেশ কিছু ছাত্র পাশ করানোর দাবিতে কিছু দিন ধরেই নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছিল।

স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো সমস্যা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ৩২৩৭ জন। ছাত্রছাত্রীর তুলনায় বসার জায়গা যথেষ্ট নয়। যদি সব ছাত্রছাত্রীর মধ্যে ৫০ শতাংশও স্কুলে উপস্থিত হয়, তা হলেও ক্লাসে বসতে দেওয়ার জায়গা থাকে না। বাধ্য হয়ে অনেক সময় কিছু ছাত্রছাত্রী দাঁড়িয়ে থেকে ক্লাস করে। পানীয় জলের একটাই মাত্র নলকূপ। মিড ডে মিলের খাবার খেয়ে হাত ধোওয়ার লম্বা লাইন পড়ে। এতে ক্লাস শুরু করতে দেরি হয়।

স্কুলে চড়াও হওয়া ছাত্রদের একাংশের দাবি, প্রধান শিক্ষক আমাদের রেজাল্ট দেখাচ্ছেন না। শুধু তাই নয় অভিভাবকরা তার সঙ্গে দেখা করতে গেলে অপমানজনক কথা বলছেন। প্রধান শিক্ষক এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, “এ ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেনি। অভিভাবকেরা যদি আমার কাছে রেজাল্ট দেখতে চান, আমি নিশ্চই দেখাব।” মগরাহাট ২ বিডিও খোকনচন্দ্র বালা বলেন, “ঘটনা জানার পরেই আমি পুলিশকে বলেছি। ওই স্কুলে পঠন-পাঠন নিয়ে কিছুটা সমস্যা আছে। পরিকাঠামো খারাপ। ছাত্রছাত্রীর তুলনায় ক্লাসরুম কম থাকায় পড়াশোনায় বিঘ্ন ঘটছে।” দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা স্কুল পরিদর্শক মৃন্ময় বসু বলেন, “ওই বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো সম্পর্কে কেউ আমাকে কিছু বলেনি। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেব।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

test examination southbengal magrahat school
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE