Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

বাস দুর্ঘটনায় মৃত দম্পতি-সহ ৩ জন

নয়ানজুলিতে পড়ে বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দম্পতির। তাঁদের বছর আটেকের ছেলেকে সংকটজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে। রবিবার সকালে কাকদ্বীপের গঙ্গাধরপুরে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে বাসের চালকেরও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাকদ্বীপ শেষ আপডেট: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:৪৬
Share: Save:

নয়ানজুলিতে পড়ে বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল দম্পতির। তাঁদের বছর আটেকের ছেলেকে সংকটজনক অবস্থায় পাঠানো হয়েছে কলকাতার হাসপাতালে। রবিবার সকালে কাকদ্বীপের গঙ্গাধরপুরে এই দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে বাসের চালকেরও। জখম বেশ কয়েক জন। তিন জনকে পাঠানো হয়েছে কলকাতার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ২০ জনকে প্রাথমিক চিকিত্‌সার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। দু’জন এখনও কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে চিকিত্‌সাধীন।

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত চালক তপন দত্ত (৪২) সরিষার কলাগাছিয়ার বাসিন্দা। মৃত দম্পতি শুভেন্দু বেরা (৩৪) এবং অসীমা বেরা (৩০) পাথরপ্রতিমার ব্রজবল্লভপুরের বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ এসডি-১৯ রুটের একটি বাস দ্রুত গতিতে কলকাতা থেকে পাথরপ্রতিমা যাচ্ছিল। গঙ্গাধরপুরের কাছে বিবেকানন্দ মোড়ে সাইকেল-সহ এক কিশোরী রাস্তা পার হচ্ছিল। তাকে বাঁচাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে চালক প্রথমে রাস্তার পাশের একটি খুঁটিতে ধাক্কা মারেন। তারপরে একটি গাছ উপড়ে জনা পঁয়তাল্লিশ যাত্রী-সহ বাসটি নয়ানজুলিতে উল্টে পড়ে। ঘটনাস্থলেই মারা যান চালক তপন দত্ত (৪২)। স্থানীয় মানুষ যাত্রীদের উদ্ধার করার পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ২৭ জনকে কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঁদের ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় ডায়মন্ড হারবার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করতে হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, সে সময়ে পথেই মারা যান শুভেন্দু বেরা (৩৪) ও তাঁর স্ত্রী অসীমা (৩০)। তাঁদের ছেলে অঙ্কুশ এবং বাকি দু’জন সুপ্রিয় মণ্ডল ও গণেশ ঘোড়ুইকে কলকাতায় নিয়ে যাওয়া হয়।

কাকদ্বীপ মহকুমা হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহারাজ পাত্র নামে এক যুবক এবং শুভেন্দুবাবুর বাবা শ্রীহরিচরণ এখনও সেখানে চিকিত্‌সাধীন। শুভেন্দুবাবুর গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন, ওই পরিবারটি এ দিন কাকদ্বীপে বিয়ে বাড়ি থেকে পাথরপ্রতিমা ফিরছিলেন। বাসযাত্রীদের একাংশ জানান, গঙ্গাধরপুর থেকে পাথরপ্রতিমার রাস্তা খারাপ হওয়ায় তাঁরা সপরিবার চালকের কেবিনে বসেছিলেন। শুভেন্দুবাবু এবং অসীমাদেবী ছিলেন চালকের পেছনের আসনে।

এলাকার মানুষ জানান, কিছু দিন আগেও ওই এলাকার বামুনের মোড় এবং নায়েক মোড়ের মাঝখানে দু’টি ট্রেকারের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। তাঁদের ক্ষোভ, ওই রাস্তা দিয়ে অত্যন্ত দ্রুত গতিতে দূর পাল্লার বাস চলাচল করে। তার উপরে ওই রুটের স্থানীয় বাস, ট্রেকার, ছোট গাড়ির সঙ্গে তাদের রেষারেষি চলে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, গঙ্গাধরপুর থেকে পাথরপ্রতিমার রাস্তা খারাপ। তাই সময় বাঁচাতেই চালকেরা কাকদ্বীপ থেকে গঙ্গাধরপুর পর্যন্ত তুলনায় মসৃণ রাস্তায় গাড়ির গতিবেগ বাড়িয়ে দেন। রাস্তায় কোনও ‘হাম্প’ না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সব সময়েই থাকে বলে তাঁদের দাবি।

এলাকায় কোনও রিকভারি ভ্যানের ব্যবস্থা ছিল না। ফলে সরিষা থেকে তা আনতে। এলাকার মানুষের অভিযোগ, নয়ানজুলিতে জল বেশি থাকলে ভ্যানের ব্যবস্থা করতে করতে ঘটনাস্থলেই অনেকের মৃত্যু ঘটতে পারত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kakdwip bus accident death southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE