Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

রাস্তা ভাঙাচোরা, দুর্ঘটনার আশঙ্কায় ভুগছেন বাসিন্দারা

সংস্কারের অভাবে পিচ উঠে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মথুরাপুর-২ ব্লকে রায়দিঘি বাজার থেকে বোলের বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১৪ কিলোমিটারই বেহাল। ভরা বষার্য় বৃষ্টির জল জমে ডোবার আকার নিয়েছে। ফলে ওই রাস্তায় গাড়ি চালাতে নাকাল হচ্ছেন গাড়িচালকেরা। রাস্তার সংস্কারের দাবি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা অবরোধ বিক্ষোভ আন্দোলন করেছেন। কিন্তু এখনও সংস্কার করা হয়নি রাস্তা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়দিঘি শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৪ ০২:০০
Share: Save:

সংস্কারের অভাবে পিচ উঠে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে বড় বড় গর্ত। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মথুরাপুর-২ ব্লকে রায়দিঘি বাজার থেকে বোলের বাজার পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে ১৪ কিলোমিটারই বেহাল। ভরা বষার্য় বৃষ্টির জল জমে ডোবার আকার নিয়েছে। ফলে ওই রাস্তায় গাড়ি চালাতে নাকাল হচ্ছেন গাড়িচালকেরা। রাস্তার সংস্কারের দাবি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দারা অবরোধ বিক্ষোভ আন্দোলন করেছেন। কিন্তু এখনও সংস্কার করা হয়নি রাস্তা।

ব্লক প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বছর দশেক আগে জেলা পরিষদ থেকে প্রধান মন্ত্রী সড়ক যোজনা প্রকল্পের টাকায় ওই পিচ রাস্তাটি নির্মাণ হয়। যাত্রী পরিবহণের জন্য চালু হয় ২৪টি গাড়ি (ম্যাজিক, ট্রেকার)। এ ছাড়াও বেশ কিছু অটো, মোটরভ্যান চলাচল শুরু করে। মথুরাপুর-২ ব্লকের নন্দকুমারপুর, কুমড়োপাড়া, রায়দিঘি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারা ছাড়াও পাথরপ্রতিমা ব্লকের কুয়েমুড়ি, কেদারপুর, লক্ষ্মীজনাদর্নপুর পঞ্চায়েতের এলাকার বাসিন্দারা ওই রাস্তায় চলাফেরা করেন। বিশেষ করে পিচ রাস্তাটি চালু হওয়ার পর থেকে পাথরপ্রতিমা ব্লকের ওই পঞ্চায়েতগুলির বাসিন্দারা সহজেই মণি নদী পেরিয়ে রায়দিঘি গ্রামীণ হাসপাতালে বা অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজে যেতে পারেন। ওই রাস্তাটির সাহায্যে রায়দিঘি থেকে বাসে ডায়মন্ড হারবার, কলকাতাতেও যাওয়া সহজ হয়ে যায়।

কিন্তু কয়েক বছর কাটতেই পিচ উঠে গিয়ে খানাখন্দে ভরে যায় রাস্তাটি। তারপর থেকে জোড়া-তাপ্পি দিয়ে কয়েকবার রাস্তা সংস্কার হলেও পাকাপাকি ভাবে মেরামত না হওয়ায় গত পাঁচ বছরে একেবারে বেহাল হয়ে পড়েছে ওই রাস্তাটি। সারা দিন এই রাস্তা দিয়ে মথুরাপুর ২ ও পাথরপ্রতিমা ব্লকের হাজার হাজার মানুষ নিত্য প্রয়োজনে গাড়িতে যাতায়াত করলেও প্রশাসন সব জেনেও কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না। ফলে দুই ব্লকের বাসিন্দাদের যাতায়াত করতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। তার উপরে রয়েছে আলোর সমস্যা। রাস্তায় আলো না থাকায় সন্ধে নামলেই গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দিচ্ছেন চালকেরা। কুমড়োপাড়া এলাকার বাসিন্দা বৈদ্যনাথ মণ্ডল, দেবাশিস হালদারেরা জানান, রাস্তার গর্তে জল জমে থাকায় গাড়ি চালাতে অসুবিধায় পড়ছেন চালকেরা। যে কোনও মুহূর্তে গাড়ি উল্টে বড় দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। বেহাল রাস্তায় গাড়ি চালাতে গিয়ে বারবার গাড়ির যন্ত্রাংশ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন গাড়ির মালিকেরা। ওই রুটের এক ট্রেকার চালক রমেন মণ্ডলের কথায়, “বেহাল রাস্তায় গাড়ির যন্ত্রাংশ তো খারাপ হচ্ছেই। তার উপর গাড়ি চালাতে বেশি সময় লেগে যাওয়ায় যাত্রীদের সঙ্গে বারবার বচসায় জড়িয়ে পড়তে হচ্ছে। এ ভাবে বেশি দিন চললে আর গাড়ি চালানো যাবে না।”

সম্প্রতি ওই রাস্তা সংস্কারের দাবিতে কাছারি মোড়ের বাসিন্দারা রাস্তার উপর কাঠের গুড়ি ফেলে অবস্থান বিক্ষোভ করেন। প্রায় চার ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে বিডিও মোনালিসা তিরকে ঘটনাস্থলে গিয়ে রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিলে অবরোধ ওঠে। কিন্তু তার পরেও সংস্কারের কাজ শুরু হয়নি। কুমড়োপাড়া এলাকার বাসিন্দাদের ক্ষোভ, “প্রায় প্রতি দিনই দুর্ঘটনা ঘটছে। ওই রাস্তা দিয়ে ছেলেমেয়েদেরও স্কুল-কলেজে পাঠাতে ভয় পাচ্ছি।”

এ বিষয়ে মথুরাপুর-২ পঞ্চায়েত সমিতির সিপিএমের সভাপতি পীযূষকান্তি বারিকের অবশ্য ব্যাখ্যা, “বোলেরবাজার-পাথরপ্রতিমা সংযোগকারী মণি নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ চলায় ওই রাস্তাটি দিয়ে বড় বড় লরিতে করে ইমারতি দ্রব্য যাচ্ছে। ভারী গাড়ির ধকল নিতে না পেরে রাস্তাটি বেহাল হয়ে পড়েছে। রাস্তা সংস্কারের টাকা আমাদের তহবিলে নেই। তাই ওই রাস্তা সংস্কারের জন্য একাধিকবার জেলা পরিষদে বলা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” জেলাপরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখ বলেন, “ধীরে ধীরে জেলার সব রাস্তাই সংস্কারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।” বিডিও মোনালিসা তিরকে রাস্তা সারানোর জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE